ভারতের বিদেশ মন্ত্রক ইরান এবং ইজরায়েলে বসবাসকারী ভারতীয়দের নির্দেশ দিয়েছে, যত শীঘ্র সম্ভব সংশ্লিষ্ট ভারতীয় দূতাবাসে যোগাযোগ ও নাম নথিভুক্ত করার জন্য। ইজরায়েল এবং ইরানে বসবাসকারী ভারতীয়দের প্রতি বিদেশমন্ত্রকের পরামর্শ, ‘‘প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। যতটা সম্ভব নিরাপদে থাকার চেষ্টা করুন।’’
বৃহস্পতিবার আমেরিকার ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল সংবাদপত্র একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ইরানের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে, এমন এক ব্যক্তিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ইজরায়েলে আঘাত করতে চলেছে ইরান। যদিও সেই ব্যক্তি বলেছেন, হামলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেও তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ফলাফল এখনও বিবেচনা করছে ইরান।
অপরদিকে আমেরিকার সিবিএস নিউজকে দু’জন শীর্ষ আমেরিকান আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘শুক্রবারের মধ্যেই ইরান হামলা চালাতে পারে। শতাধিক ড্রোন, কয়েক ডজন ক্রুজ মিসাইল এবং একাধিক ব্যলিস্টিক মিসাইল ব্যবহার করে ইজরায়েলের একাধিক সামরিক ঘাঁটিকে নিশানা করতে চলেছে ইরান।’’
সপ্তাহখানেক আগে সিরিয়ায় ইরানীয় দূতাবাসে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালায় ইজরায়েল। সেই হামলায় এক শীর্ষস্থানীয় ইরানীয় সেনা আধিকারিক সহ ৬ অফিসার প্রাণ হারান। এরপরেই খবরে প্রকাশিত হয়, সরাসরি ইজরায়েলে হামলা চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে ইরান।
৭ অক্টোবর থেকে গাজায় প্যালেস্তিনীয়দের সঙ্গে ইজরায়েলী সেনার সংঘর্ষ চলছে। সেই যুদ্ধে ৩২ হাজারের বেশি সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহতের সংখ্যা ৮০ হাজার ছুঁই ছুঁই। নিহতদের সিংহভাগ মহিলা এবং শিশু।
আন্তর্জাতিক মহলের আশঙ্কা, এই আবহে সরাসরি যদি ইজরায়েল এবং ইরান সংঘর্ষে জড়ায়, তার ফলাফল হবে ভয়াবহ। যদিও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খোমেইনি বলেছেন, ‘‘ইজরায়েলে হামলা চালানোর পথ থেকে সরে আসা সম্ভব নয়।’’ রাষ্ট্রসঙ্ঘ এবং আন্তর্জাতিক মহলের বিভিন্ন অংশ বারবারই ইজরায়েলকে সতর্ক করে বলেছে যে গাজায় সংঘাতের পরিধি বাড়ছে।
ভারতের পাশাপাশি ইজরায়েলের বসবাসকারী মার্কিন নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে হোয়াইট হাউসও। একই পথ নিয়েছে ফ্রান্সও।
সংঘর্ষের আবহের মধ্যে সামনে এসেছে আরও একটি তথ্য। এপ্রিল এবং মে মাসের মধ্যে ইজরায়েলে ৬ হাজার ভারতীয় শ্রমিক পাঠাতে চলেছে ভারত। মূলত আবাসন শিল্পে কাজ করবেন তাঁরা। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার ইজরায়েলে পৌঁছন ৬৪ জন ভারতীয় শ্রমিক। মাঝ এপ্রিলের মধ্যে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৮৫০-এ।
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, দেশে কাজ নেই। মোদী সরকারের জমানায় বেকারত্ব শিখর ছুঁয়েছে। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিদেশে কাজের খোঁজে যেতে হচ্ছে ভারতীয়দের। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মাঝে এই ভাবে জড়িয়ে পড়ে প্রাণ গিয়েছে একাধিক ভারতীয় যুবকের।
Comments :0