মালদহ এবং মুর্শিদাবাদে চমকে দেওয়ার মতো ফল করবে বামফ্রন্ট-কংগ্রেস। একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, দক্ষিণবঙ্গেও ভালো ফলাফল করবে বামফ্রন্ট-কংগ্রেস।
তিনি বলেছেন, ‘‘রাজ্যে বিজেপি’র কোনও জনভিত্তি নেই। তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে, প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া রয়েছে রাজ্যে। আর এই পরিস্থিতিতে মমতা ব্যানার্জি ঠিক করতে পারছে না কার দিকে থাকবে। একবার বলেছে তিনি ‘ইন্ডিয়া’-কে বাইরে থেকে সমর্থন দেবেন পরের দিন বলছেন দেবেন না।’’
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদকের কথায়, ‘‘রাজ্যে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের ভোট বাড়বে। তাতে রাজ্যের মানুষ উপকৃত হবেন। লাভবান হবে ‘ইন্ডিয়া’।’’
এবারে প্রথম লোকসভা নির্বাচনে একসাথে লড়ছে কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট। ২০১৬, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আসন সমঝোতা হলেও লোকসভায় আগে কখনও হয়নি। কংগ্রেসের ভোট বামপন্থীদের দিকে আসে না। তা নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এই সাক্ষাৎকারে সেলিমের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল কংগ্রেসের ভোট বামপন্থীদের দিকে আসবে কিনা?
সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এবারের সমঝোতা ওপর থেকে ঠিক করে দেওয়া হয়নি। নিচের স্তর থেকে এই বোঝাপড়া হয়েছে। সেই কারণে মিডিয়া কিছু বুঝতে পারছে না। বিজেপির অর্থশক্তি এবং তৃণমূলের পেশিশক্তির বিরুদ্ধে লাগাতার প্রতিরোধ গড়ে চলেছেন দুই দলের কর্মীরা।’’
প্রশ্ন ছিল, কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী কি জিতবেন?’’ সেলিম বলেছেন, ‘‘অধীর চৌধুরী জিতে বসে রয়েছেন।’’
সন্দেশখালি প্রসঙ্গে ওই সাক্ষাৎকারে সেলিম বলেন, ‘‘এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এমন ঘটে চলেছে। বিজেপি নিজেদের স্বার্থে সন্দেশখালির মানুষের আন্দোলনকে ধামা চাপা দেওয়ার জন্য ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক রঙ দেওয়ার চেষ্টা করছিল। মানুষের মধ্যে বাংলাদেশি, রোহিঙ্গা ভাগ করে তারা রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছিল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শুধু সন্দেশখালি নয়, বীরভূম, বাঁকুড়ার মতো একাধিক জায়গায় এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। তৃণমূল মানুষের গনতান্ত্রিক অধিকারকে কেড়ে নিতে চাইছে।’’
মমতা গত সপ্তাহে নির্বাচনী সভা থেকে দাবি করেছেন যে তিনি ‘ইন্ডিয়া’-য় আছেন। কিন্তু সিপিআই(এম) এবং বাংলার কংগ্রেসের সাথে তার বিরোধ। সেই ক্ষেত্রে ‘ইন্ডিয়া’ সরকার হলে সিপিআই(এম) কী ভুমিকা নেবে তা জানতে চাওয়া হলে মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘মমতা ব্যানার্জি একজন সুবিধাবাদী। হাওয়া যেই দিকে থাকে তিনি সেই দিকে থাকেন তিনি। ‘ইন্ডিয়া’ তৈরি হওয়ার পরপরই বলেছিলাম দিল্লির ট্রেনে সবাই ওঠে কিন্তু মাঝপথে অনেকে নেমে যান। মমতা ভাইপোকে ইডি সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য মাঝপথে নেমে গিয়েছেন। মোদীর চারশো পারের কথা শুনে মনে করেছিলেন বিজেপি আবার সরকার গঠন করবে, তাই ‘ইন্ডিয়া’-কে ঘেঁটে দিতে চেয়েছিলেন। এখন দেখছে বিজেপি’র হাওয়া খারাপ, তাই আবার বলছেন ‘ইন্ডিয়া’-য় আছি।’’
কংগ্রেস সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘মমতা এখন চাইছেন কংগ্রেসের মধ্যে ভাঙন ধরাতে। কংগ্রেস ভেঙেই তিনি নিজের দল তৈরি করেছিলেন। এবার এটা কংগ্রেস হাই কামন্ডের বিষয় যে তারা বাংলা কংগ্রেসকে মমতার হাতে তুলে দেবে কি না। এআইসিসি এবং জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতিকে বাংলার রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি বুঝতে হবে।
Salim Interview
চমকে দেওয়ার মতো ফলাফল হবে বাম-কংগ্রেসের, সাক্ষাৎকারে সেলিম
×
Comments :0