Nafarchand Jute Mill

কর্তৃপক্ষের জুলুম, শ্রমিক বিক্ষোভ নফর চাঁদ জুট মিলে

রাজ্য

শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে কাকিনাড়া নফর চাঁদ জুট মিলে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। অধিকাংশ শ্রমিক কাজ না করে মিল থেকে বেরিয়ে চলে যায়। এর ফলে মিলের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কাকিনাড়া নফর চাঁদ জুট মিলে মিল কর্তৃপক্ষ ৬৭ জন শ্রমিককে এক বিভাগের থেকে অন্য বিভাগে বদলি করে দিয়েছে। শ্রমিকদের নেরো লুম থেকে ব্যাচিং, ওয়াইন্ডিং ও এস ৪ লুমে বদলি করা হচ্ছে। শ্রমিকদের চাপ দিয়ে অন্য বিভাগে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। এর ফলে শ্রমিকদের কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। শনিবার দুপুরে এগারোটা নাগাদ তাঁতঘর, ওয়াইন্ডিং ও এস ৪ লুমের শ্রমিকরা কাজ কম পাচ্ছেন। এক একজন শ্রমিক পাঁচ মাস ধরে কাজ পাচ্ছে না। এই মিলে শ্রমিকদের যত্রতত্র অন্য বিভাগে বদলি করা হচ্ছে। এই সমস্ত বিষয় নিয়ে মিল কতৃপক্ষের সাথে শ্রমিকরা কথা বলতে যায়। মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের জানিয়ে দেয় যেখানে দেওয়া হবে সেখানেই কাজ করতে হবে। কাজ না করলে মিল থেকে চলে যেতে হবে। শ্রমিকদের গায়ে হাত দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। 
এরপর শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এছাড়াও আগামী ২অক্টোবর থেকে পনেরো দিন মিল বন্ধ থাকবে বলে মিল কর্তৃপক্ষ নোটিশ দেয়। এটাও শ্রমিকরা মানতে রাজি নয়। অর্ডার নেই এবং প্রচুর মাল গুদামে মজুত আছে এটা মিল বন্ধ রাখার কারণ দেখিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের অভিযোগ পুজোর সময় মিল বন্ধ রাখলে বোনাস দিতে হবে না। কাজ না করলে শ্রমিকরা পয়সাও পাবে না। পুজোর সময় এইভাবে পনেরো দিন মিল বন্ধ থাকলে শ্রমিকরা ভয়াবহ আর্থিক সঙ্কটের সন্মুখীন হবে। এই মিল সপ্তাহে পাঁচদিন চলছে। তিনটে শিফটের বদলে দুটো করে শিফট চালু আছে। এরপর শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ মিল কর্তৃপক্ষের কয়েকটা গাড়ি ভাঙচুর করে। অধিকাংশ শ্রমিক কাজ না করে মিল থেকে বেরিয়ে যায়। মিলে কাজের বোঝা বাড়িয়ে দিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার পর মিলের ভেতরে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। এই মিলে অর্ধেকের বেশি ঠিকা শ্রমিক। তৃণমূলের লোকজন এখানে ঠিকাদারি করে। ভাটপাড়া পৌরসভার এক সি আই সি পরোক্ষভাবে এই মিল চালায়। 
শ্রমিকদের অভিযোগ এই জুট মিলে মালিকের অত্যাচার ও জুলুম চলছে। এক একজন শ্রমিক একটা বিভাগে পঁচিশ বছর ত্রিশ বছর ধরে কাজ করে আসছেন। তাদের বয়স হয়েছে। কিন্তু মিল কর্তৃপক্ষ তাদের জোর করে অন্য বিভাগে যত্রতত্র বদলি করে দিচ্ছে। এছাড়াও শ্রমিকরা ঠিকমতো কাজ পাচ্ছে না। পাঁচ মাস ছয় মাস কাজ পায় নি বেশ কয়েকজন শ্রমিক। এই নিয়ে মিল কতৃপক্ষের সাথে কথা বলতে গেলে আমাদের বলা হয় যেখানে দেওয়া হবে সেখানেই কাজ করতে হবে। তা না হলে মিল থেকে চলে যেতে হবে। এছাড়াও শ্রমিকদের গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে। পুজোর সময় পনেরো দিন মিল বন্ধ রাখবে বলে মিল কর্তৃপক্ষ নোটিশ দিয়েছে। আমরা খাবো কি? এমনিতেই মিলে দুটো করে শিফট চালু আছে। পাঁচদিন মিল চলছে। মিল কর্তৃপক্ষ তাঁত তুলে নিয়ে বেঁচে দিচ্ছে। তাঁতঘর, ফোকানলি উঠিয়ে দিচ্ছে। আমরা ঠিকমতো কাজ পাচ্ছি না। মাসে পনেরো দিন ঠিকমতো কাজ পাচ্ছি না। মিল কর্তৃপক্ষ আমাদের ওপর জুলুম চালাচ্ছে।

Comments :0

Login to leave a comment