কত দ্রুত তলিয়ে যাচ্ছে যোশীমঠ, স্পষ্ট করেছিল ‘ইসরো’। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে এবার মুখ বন্ধ রাখতে বলল কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ শনিবার এই মর্মে নির্দেশ পাঠিয়েছে ‘ইসরো’(ISRO)-কে।
নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘‘সোশাল মিডিয়ায় বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমেও নানা কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। তাতে কেবল বিপন্ন এলাকার মানুষই সংশয়ে পড়ছেন না, দেশবাসীর মধ্যেও বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।’’
যোশীমঠ এবং সংলগ্ন অঞ্চলের মাটি ধসে যাওয়ায় বিস্তীর্ণ অংশ তলিয়ে যাচ্ছে। বাড়িতে ফাটল তাড়াতড়িই ভাঙনের চেহারা নিয়েছে, বিপর্যস্ত বাসিন্দারা তীব্র শীতের মধ্যেও রাস্তায় নেমে এসেছেন। ২ জানুয়ারি পরপর বিভিন্ন এলাকায় এই ছবি ছিল যোশীমঠে।
শুক্রবার যোশীমঠের তলিয়ে যাওয়ার তথ্য প্রকাশ করে ‘ইসরো’। উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে মাত্র ১২ দিনে মাটি ৫.৪ সেন্টিমিটার তলিয়ে গিয়েছে। ‘কার্টোস্যাট টু-এস’ স্যাটেলাইটের তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া যায়। ‘ইসরো’-র জাতীয় রিমোট সেন্সিং কেন্দ্র তথ্য বিশ্লেষণ করে। ফের প্রশ্নের মুখে পড়ে কেন্দ্রের বিভিন্ন পরিকাঠামো নির্মাণ কর্মসূচি।
একদিনের মধ্যেই, শনিবার, আসরে নামানো হয় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ (NDMA)’কে। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানেই চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই বিভাগ। বলা হয়েছে, ‘‘যোশীমঠ এবং সংলগ্ন অঞ্চলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করা হয়েছে।’’ আরও মনে করানে হয় যে ১২ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকে তথ্য প্রকাশের বিষয়ে ‘সংবেদনশীল’ হতে বলা হয়েছিল।
এনডিএমএ চিঠিতে লিখেছে, ‘‘ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই সংবেদনশীল হওয়া দরকার। তার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।’’
যোশীমঠে ধসের জন্য কেন্দ্র এবং বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছেন। চারধাম প্রকল্পের নামে চওড়া সড়ক নির্মাণ এবং এনটিপিসি’র তপোবন বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়ে রয়েছে একগুচ্ছ সমালোচনা। পরিবেশবিদ-ভূতত্ত্ববিদরা অনেকেই হিমালয়ের ধসপ্রবণ অঞ্চলে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহারে আপত্তি তুলেছেন। সে সব কানে তুলতে নারাজ কেন্দ্র।
এর মধ্যেই কেন্দ্রের তরফে দাবি, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সঙ্গে মাটি তলিয়ে যাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই!
Comments :0