Cooch Behar Airport

চাহিদা সত্ত্বেও বড় উড়ানের ক্ষেত্রে এখনও উপেক্ষিত কোচবিহার

রাজ্য জেলা

জয়ন্ত সাহা- কোচবিহার

কোচবিহার বিমান বন্দর নিয়ে কেন্দ্র আর রাজ্যের চাপান উতোর থামছেই না। বারবার ঘোষণা সত্বেও রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ শুরুই হচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে টাকা নেই। তাই হচ্ছে না রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ! ফলে রাজ্য-কেন্দ্রর রেষারেষিতে এটা স্পষ্ট কোচবিহার বিমান বন্দর থেকে বড় উড়ান চলাচলের আপাতত কোন সম্ভবনাই নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৮ মাস আগে কোচবিহারের জেলা শাসক এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার ইষ্টার্ন রিজিওনের রিজিওনাল এগজিকিউটিভ ডাইরেক্টর নিবেদিতা দুবের সঙ্গে রানওয়ে সম্প্রসারণ নিয়ে একটি বৈঠক ও করেছিলেন। তারপর রানওয়ে সম্প্রসারণের একটি ডিপিআর তৈরি করে কয়েক মাস আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে পাঠানোও হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ মেলার কোন ইঙ্গিত মেলে নি।
ফলে কোচবিহার জেলার মানুষের দাবি উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে। বড় বিমান চলাচলের জন্য রাজ্য বা কেন্দ্রের কোন সরকারের ন্যুনতম সদিচ্ছা নেই সেটা স্পষ্ট হলেও ২০২৬’র বিধানসভা ভোটে বিমানবন্দর নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূল এই দুই দলের নেতারাই গলা ফাটাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।


কোচবিহার বিমান বন্দরের রানওয়ে। ছবি জয়ন্ত সাহা।

জেলা শাসক অরবিন্দ কুমার মীনার বক্তব্য,সমস্ত কিছুই এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমোদন এলে তবে রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ হবে।
এয়ারপোর্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কোচবিহার বিমান বন্দরের রানওয়েটি ১০৬৯ মিটার লম্বা। এই রানওয়েতে ১৮-২৫ আসনের উড়ান ওঠানামা করতে পারে। কিন্তু ৪২ থেকে ৯০ আসনের বিমান ওঠানামা করতে হলে রানওয়ে আরো ৪০০-৫০০ মিটার লম্বা করতে হবে। কয়েক মাস আগে এয়ারপোর্ট অথরিটির একটি প্রতিনিধি দল রানওয়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কোচবিহার বিমান বন্দরে আসায় মনে করা হয়েছিল কোচবিহারে বুঝি বড় উড়ান ওঠা নামা সময়ের অপেক্ষা মাত্র। কিন্তু এখন বোঝা যাচ্ছে সবটাই বিশ বাঁও জলের তলায় রয়েছে।
উল্লেখ্য এই বিমান বন্দর রাজ আমলের। কংগ্রেস আমলে উড়ান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছিল। বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় এসে উড়ান চালু করে। এরপর লাভজনক না হওয়ায় বিমান সংস্থাগুলি আগ্রহ হারায়। মাঝে অনেকবার অনিয়মিত উড়ান চলাচল করলেও সেটা স্থায়ী হয় নি। অবশেষে ২০২৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ আসনের উড়ান নিয়মিত যাতাতাত করছে। বিভিন্ন উড়ান সংস্থা এই রুটকে লাভজনক মনে করে উড়ান চালাতে আগ্রহ প্রকাশও করেছেন।
এদিকে বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে রানওয়ে সম্প্রসারণের জন্য একটি কালভার্ট গড়তে হবে। সেটা হলেই রানওয়ে ৫০০ মিটার বাড়ানো সম্ভব হবে। এর জন্য প্রয়োজন ৪০ থেকে ৪২ কোটি টাকা। সেটা হলেই এই বিমান বন্দর থেকে কোচবিহার- গুয়াহাটি- কলকাতার পাশাপাশি দিল্লী-গুয়াহাটি ভায়া কোচবিহার উড়ান চালানো সম্ভব।
বড় উড়ান চালু না হওয়ার কারণেই কোচবিহারে শিল্প স্থাপনে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কোন শিল্পপতিও। রাজ্যের শিল্প মানচিত্রে কোচবিহারের স্থান মেলে নি আজও। সব জেনে বুঝেও রাজ্য- কেন্দ্র কেউই বড় উড়ান চালু করতে আন্তরিক নয় সেটা স্পষ্ট।

Comments :0

Login to leave a comment