বামপন্থীদের প্রশ্নে ইতিবাচক মন্তব্য করে সমবেদনা পাওয়ার চেষ্টা করছেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের মতোই উঠে আসছে বিজেপি নেতাদের নাম।
বামপন্থীদের প্রসঙ্গে বিজেপি নেতাদের একাংশের মন্তব্য নিয়ে এই মর্মে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে সিপিআই(এম)। রবিবার শিলিগুড়িতে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে ঠেকেছে এদের। লালঝান্ডার কথা বললে, মানুষের কথা বললে যদি সমবেদনা পাওয়া যায়, সেজন্য এই কৌশল। তবে মানুষ ধোঁকা খাবেন না।’’
বিজেপি নেতা এবং বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও বামপন্থীদের ‘ভালো’ বলতে শোনা যাচ্ছে মাঝেমাঝেই। বিজেপি নেতাদের এসব বক্তব্য যে পঞ্চায়েতের আগে কৌশল, স্পষ্ট জানিয়েছে সিপিআই(এম)।
এদিন দীঘায় সমাবেশ হয় সিপিআই(এম)’র ডাকে। প্রধান বক্তা ছিলেন পার্টি পলিট ব্যুরো সদস্য সূর্য মিশ্র। তিনিও এই কৌশল সম্পর্কে সচেতন করেছেন। পার্টিনেতা হিমাংশু দাস সরাসরি বলেছেন সমাবেশে, ‘‘বামপন্থীদের আজকে যারা ‘ভালো’ বলছে তাদের আমরা চিনি। পূর্ব মেদিনীপুরে বামপন্থীদের বিরুদ্ধে একের পর এক সন্ত্রাস চালিয়েছেন তিনি। কোল খালি করেছেন বহু মায়ের, বহু মানুষকে চোখের জল ফেলতে হয়েছে।’’
সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে দাস বলেন, ‘‘এদের কথায় ভুলবেন না। তৃণমূল, বিজেপি- দুই শক্তিই নানা কথায় ভুলিয়ে রাখতে চায়। দুই শক্তিকেই মোকাবিলা করার মতো শক্তি অর্জন, সংগঠন গড়ে তোলার কাজ চালাচ্ছি আমরা বামপন্থীরা।’’
তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপি’র নেতারাও কীভাবে চুরি দুর্নীতিতে সরাসরি যুক্ত তার উল্লেখ করেছেন সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘যখন তৃণমূলের চুরির বিরুদ্ধে লড়াই করছি তখনই দেখতে পাচ্ছি, শুভেন্দু অধিকারী হোন বা বিজেপি’র লোক হোন, তাঁদের চুরি সামনে চলে আসছে।’’
সেলিম বলেছেন, ‘‘শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির সঙ্গে যখন লড়ছি এসে যাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নাম। ওখানে দুর্নীতিতে নিয়োগের তালিকা সবচেয়ে বড়। তখন তৃণমূলের নেতা ছিলেন শুভেন্দু, তাঁর সম্মতি ছাড়া এই তালিকা তৈরি হয়েছে? তৃণমূলে থেকে গণপরিবহণ ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার কাজে তিনি মুখ্য কারিগর। এনবিএসটিসি’কে ভেঙে ফেলা, ট্রাম তুলে দেওয়া, ট্রাম ডিপোর জমি বেসরকারী হাতে তুলে দেওয়ার পিছনে পরিবহন মন্ত্রী থাকা শুভেন্দু অধিকারীর হাত নেই? তৃণমূলের সময়ে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন সমবায় ব্যাঙ্কে কালো টাকার লেনদেন হয়েছে। কাঁথির কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কের মাধ্যমে কালো টাকার লেনদেন কে করত?’’
সেলিমের ব্যাখ্যা, ‘‘এদের এমন দুরবস্থা যে সিপিআই(এম) ছাড়া, লালঝাণ্ডা ছাড়া কথা বলতে পারছে না। রাজনৈতিক বিশ্বাযোগ্যতার ঘাটতি একেই বলে।’’ সেলিম মনে করিয়ে দেন যে রাস্তা থেকে লালঝান্ডা খুলে নিজেদের মিছিলে লোকের হাতে তুলে দিচ্ছে বিজেপি।
সেলিম বলেন, ‘‘মমতা ব্যানার্জি, অভিষেক, শুভেন্দু সব একসঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা আছে। মানুষ ধরে ফেলেছে এরা নকল বিরোধী। এরা নিজেদের বাঁচার জন্য রক্ষাকবচ খুঁজছে। মনে করছে লালঝান্ডার কথা বললে, বামফ্রন্টের কথা বললে যদি সমবেদনা মেলে। এরা মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে মানুষ ধোঁকা খাবেন না।’’
Comments :0