ছাত্রকে ক্লাস ঘরে মারতে বলায় তদন্তের কী হলো? বুধবার বিশদে জবাব চেয়ে মুজফ্ফরনগরের পুলিশ সুপারকে নোটিশ পাঠালো সুপ্রিম কোর্ট। উত্তর প্রদেশের এই স্কুলে মুসলিম ওই ছাত্রকে চড় মারার জন্য অন্য ছাত্রদের বলছিলেন শিক্ষিকা। সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।
এদিন শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং পঙ্কজ মিথলের বেঞ্চ নোটিশ পাঠিয়েছে। ঘটনাটিতে হস্তক্ষেপ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন সমাজকর্মী তুষার গান্ধী। ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
গান্ধীর পক্ষে আইনজীবী শাদান ফরাসত বিচারপতিদের কাছে গাইডলাইন প্রকাশের আবেদনও জানিয়েছেন। সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে হিংসার থেকে রক্ষা করার জন্য কোন বিধি মানা দরকার শীর্ষ আদালতকেই তা ঠিক করতে বলেছেন ফরাসত। তাঁর আবেদন কেবল সংখ্যালঘু নয়, সব ছাত্রছাত্রীদের জন্যই মান্য একটি বিধি স্কুল স্তরে চালু করার দরকার।
মুজফ্ফরনগরের এই স্কুলের শিক্ষিকার নাম তৃপ্তা ত্যাগী। তাঁর আচরণে সারা দেশে সমালোচিত হয়। তিনি আবার সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি হচ্ছে। এমন চললে ক্লাস করানো মুশকিল। ভিডিও’তে দেখা গিয়েছে ওই শিক্ষিকা এক ছাত্রকে দাঁড় করিয়ে বাকিদের বলছেন, সরাসরি, তাকে মারতে। মুসলিম ছাত্রদের কিভাবে মারা উচিত তার পাঠও দিচ্ছেন তিনি।
ওই শিক্ষিকাকে ভিডিও’তে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি তো বলেই দিয়েছে, যত মুসলিম বা্চা আছে, অন্য কোথাও পাঠিয়ে দাও।’’ এক ছাত্রকে দেখা যায় ওই মুসলিম শিশুটিকে মারতে। এরপর শিক্ষিকা ফের বলেন, ‘‘মারছে যখন জোরে মারো।’’
প্রশ্ন ওঠে ক্লাস ঘরে শিক্ষিকাই যদি এই আচরণ করেন তবে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা দেবে কে। ক্ষোভের মুখে পড়ে সমাজের সব স্তরে ছড়িয়ে দেওয়া বিদ্বেষ ভাষণ নিয়েও। উগ্র হিন্দুত্ববাদী অংশগুলি লাগাতার এমন ভাষণ দিয়ে চলেছে। রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সমাজের সব স্তরে ছড়িয়ে পড়ছে বিদ্বেষ। উত্তর প্রদেশের বিজেপি সরকারও এই ঘটনায় কার্যত কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ বিভিন্ন অংশের। যদিও ২৬ আগস্ট এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। অন্যকে আঘাত করা, শান্তিভঙ্গের প্রয়াসের মতো অপরাধ নথিভুক্ত হয়েছে। কিন্ত তদন্ত কতদূর এগিয়েছে জানা যায়নি। এবার সে সম্পর্কেই বিশদ তথ্য তলব করল সুপ্রিম কোর্ট।
Comments :0