‘‘সদর্থক পদক্ষেপ, আমরা সমর্থন করছি।’’ সংঘর্ষ বিরতি প্রসঙ্গে এই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক এবং পলিট ব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন যে দু’দেশের আলোচনা চলুক। সন্ত্রাসবাদের ভিত্তি নির্মূল করতে পাকিস্তানকে চাপ দিতে হবে।
তিনি বলেন, সেলিম বলেন, ‘‘আমরা চাই ভারত এবং পাকিস্তানের মানুষ দীর্ঘস্থায়ী শান্তির ব্যবস্থা করুক। দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ শান্তি চায়। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের ভিত্তি নষ্ট করছে হবে। আমাদের এই সুযোগ আছে, আমরা শর্ত দিতে পারি যাতে পাকিস্তানের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদে মদত বন্ধ করা যায়। আলোচনা প্রক্রিয়ায় এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’’
সেলিম ঘটনাক্রম টেনে বলেন, ‘‘আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে ঘোষণা করলেন। তারপর দু’দেশ থেকে ঘোষণা করা হলো। ট্রাম্প বুঝিয়ে দিলেন দুই দেশকেই কে পরিচালনা করছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘দু’দেশেরই শান্তিকামী মানুষ, আমরা বলছিলাম সংঘর্ষবিরতি হোক। এভাবে যুদ্ধ চলতে পারে না। সন্ত্রাসবাদী হামলা বন্ধ করার জন্য এবং সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি নির্মূল করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’’
সেলিম বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরির ঘোষণার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘বিদেশ সচিব বললেন আবার বৈঠক হবে। ১২ মে ফের দু’দেশের কথা হবে। ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস দু’দেশের তাঁরা কথা বলবেন। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে কথা বলতে হয়।’’
সেলিম বলেন, ‘‘সমস্যার সমাধান ‘গোলি সে নেহি বোলি সে হোগা’ (গুলি দিয়ে নয় বুলি দিয়ে), একথা আমরা বললে বলা হয় দেশদ্রোহী। তা’হলে এবার কী বিদেশ সচিবকে দেশদ্রোহী বলা হবে?’’
সেলিম আমেরিকার তৎপরতা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কাশ্মীর সমস্যা ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। আমরা বরাবর বলে এসেছি কোনও থার্ড আম্পায়ারের দরকার নেই। ভারত দ্বিপাক্ষিক স্তরে আলোচনা চালাতে সমর্থ। কিন্তু এই আলোচনায় আন্তর্জাতিক স্তর থেকে হস্তক্ষেপ হলো। দেখা গেল আমরা তৃতীয় শক্তির কথা শুনছি। ট্রাম্প বলেছেন রাতভর কথা হয়েছে। তার মানে দু’দেশের মধ্যে কথা হওয়ার আগে আমেরিকার বিদেশসচিব জানিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এবং পাকিস্তানের সেনা প্রধানের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেছেন।’’
সেলিম বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ভারত এবং পাকিস্তান কোনও আলোচনা করে না। এটা ভালো হলো যে আলোচনা হবে। আলোচনাও করতে হবে, অর্থনৈতিক চাপও বাড়াতে হবে, কূটনৈতিক চাপও বাড়াতে হবে। পাকিস্তানে সন্ত্রাসের ঘাঁটিগুলিকে নির্মূলও করতে হবে। ’’
সিপিআই(এম)’র অবস্থান জানিয়ে সেলিম বলেন, ‘‘আমরা বলেছি একাজের জন্য যুদ্ধের বাইরেও অনেক পদ্ধতি রয়েছে। যুদ্ধ নয়, সেই পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। ’’
সেলিম বলেন, ‘‘যাঁরা টেলিভিশন চ্যানেলে বসে যুদ্ধ বাঁধাচ্ছিলেন, এবার তাদের কী হবে!’’
আলোচনায় সেলিম বলেন, ‘‘আমরা আক্রমণ সাফল্যের সঙ্গে আটকেছি। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় বিপুল ব্যয় রয়েছে। আমরা দেখেছি এই সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উন্মাদনা তৈরি করা হয়েছে। আমরা স্বাগত জানাচ্ছি সংঘর্ষ বিরতিকে।’’
সেলিম পারস্পরিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী আসার দক্ষিণ এশিয়ার পর আঞ্চলিক গোষ্ঠী ‘সার্ক’-র বৈঠক হয়নি। কারণ এই গোষ্ঠীতে পাকিস্তান রয়েছে। ভারত নীতি নিল যে পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলবে না। এবার দেখা গেল আমেরিকার বিদেশসচিব দুই দেশের সঙ্গে কথা বললেন। তারপর দু’দেশের সেনার সর্বোচ্চ আধিকারিকদের কথা হলো। তারপর সংঘর্ষ বিরতি হলো।’’
সেলিম বলেন, ‘‘আমরা চাই ভারত এবং পাকিস্তানের মানুষ দীর্ঘস্থায়ী শান্তির ব্যবস্থা করুক। দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ শান্তি চায়। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের ভিত্তি নষ্ট করছে হবে। আমাদের এই সুযোগ আছে, আমরা শর্ত দিতে পারি যাতে পাকিস্তানের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদে মদত বন্ধ করা যায়। আলোচনা প্রক্রিয়ায় এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’’
সেলিম দক্ষিণ এশিয়া প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘যুদ্ধ মানে শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের ব্যয়ে ঘাটতি। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা- সকলেরই দরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য। দরকার স্কুল, হাসপাতালের বেড, পানীয় জল, রাস্তা। দক্ষিণ এশিয়ায় ঘাটতি আছে আন্তর্জাতিক মানের তুলনায়। তাই শান্তি চায় জনতা। আমরা শান্তির কথা বলছি সে কারণেই।’’
Ceasefire Salim
সংঘর্ষ বিরতি সদর্থক, সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে কথা চলুক, বললেন সেলিম

×
Comments :0