ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ২০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রার্থী দেওয়াই সার। কোনও আসনে জেতা তো দুর বহু আসনে তাদের জমানত বাজেয়াপ্ত হবে। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে তৃণমূল যথেষ্ট অঙ্ক কষেই এই কাজ করেছে। যে সব আসনে বিজেপি প্রার্থীর পরাজয়ের সম্ভাবনা ছিল সেই সব আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
গোয়া, মেঘালয় নির্বাচনে যে ভাবে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে মমতা ব্যানার্জী প্রার্থী দিয়েছে, ঠিক সেই ধাচেই ত্রিপুরাতে বামফ্রন্ট- কংগ্রেস জোটের ভোট ভাঙ্গতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু ফলাফল দেখলে বোঝা যায় সেই সব আসনে কোথাও ৪০০ কোথাও, ৬০০ ভোট পেয়েছে তৃণমূল। অথচ বিজেপিকে হারাতে গেলে সেই ভোট গুলোই হয়তো অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ ছিল বিরোধীদের কাছে।
যেমন ধরা যাক চান্দিপুর বিধানসভা আসনে বিজেপি প্রার্থী টিঙ্কু রায় তার প্রতিদ্বন্দ্বি বামফ্রন্ট-কংগ্রেস জোট প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীকে পরাজিত করেছেন ৫৭৭ ভোটে। সেখানে তৃণমূলের বিদ্যুৎ বিকাশ সিনহা পেয়েছেন ঠিক ৫৭৬টি ভোট। সুতরাং বিরোধীদের ৫৭৬টি ভোট কেটে বিজেপি’র জয়ের পথ সুনিশ্চিত করে দিয়েছে তৃণমূল। জোলাইবাড়িতে জয়ী হয়েছেন আইপিএফটি প্রার্থী শুক্লা চরন নোয়াতিয়া। তার কাছে মাত্র ৩৭৫ টি ভোটে পরাজিত হয়েছেন সিপিআই(এম), কংগ্রেস জোট প্রার্থী দেবেন্দ্র ত্রিপুরা। সেই আসনে তৃণমূল প্রার্থী পেয়েছেন ১১১০টি ভোট। এখানেও বিজেপি-আইপিএফটি জোট সুবিধা পেল বলা যায় তৃণমূলের জন্যই। সেখানেও বামফ্রন্ট পেয়েছে ৩৭.৭২ শতাংশ ভোট।
বিজেপি’র প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা টাউন বরদোয়ালি আসন থেকে মাত্র ১২৫৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বামফ্রন্ট-কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থী আশিস কুমার সাহা পেয়েছেন ১৭,৫৫১ টি ভোট। এখানেও তৃণমূল প্রার্থী দিয়েছে। ৬২৩ টি ভোট পেয়েছে তৃণমূল প্রার্থী অনন্ত ব্যানার্জী। এরকম বহু আসন রয়েছে যেখানে ভোটের হিসাবই বলে দেয় তৃণমূলের প্রার্থী দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য।
মোটের ওপর ত্রিপুরা নির্বাচনে তৃণমূলের ফলাফল মোটেই ভালো নয়। এক, দুটি ছাড়া কোনও আসনেই ১ হাজার ভোটও পায়নি তারা। কোথাও কোথাও ১ শাতাংশের নিচেও ভোট পেয়েছে। কিন্তু বিরোধী ভোট কাটতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে মমতা ব্যানর্জীর দল।
Comments :0