উত্তরবঙ্গের একমাত্র দিনহাটা-র বন্ধ মহিলা শারীর শিক্ষা মহাবিদ্যালয় ফের চালুর দাবি নিয়ে আগামী ২৮ মার্চ উত্তরকন্যা অভিযানে শামিল হবে কোচবিহার জেলার ছাত্র- যুবরা। ডিওয়াইএফআই নেতা শুভ্রালোক দাস মঙ্গলবার জানিয়েছেন, উত্তরকন্যা অভিযানে জেলার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের দাবির পাশাপাশি প্রায় ৫ বছর ধরে বন্ধ হয়ে থাকা এই মহাবিদ্যালয় চালুর দাবি নিয়ে স্থানীয় স্তরে প্রচার শুরু হয়েছে। ন্যাশানাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল প্রয়োজনীয় শর্ত না মানায় অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে।
উল্লেখ্য ১৯৮৫ সালে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের উদ্যোগে দিনহাটা গার্লস হাইস্কুলে মহাবিদ্যালয়ের পথ চলা শুরু হয়। পরে দিনহাটার পুঁটিমারি এলাকায় ৫.৩৮ একর জমির ওপর নতুন ভবন তৈরি হয়েছিল। দীর্ঘ ৫ বছর তালাবন্ধ পড়ে থাকায় ইতিমধ্যে মহাবিদ্যালয়ের কম্পিউটার ও বিভিন্ন দামী যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে।
দিনহাটার ছাত্র-যুবরা যখন ফের বন্ধ মহিলা শারীর শিক্ষা কলেজ খোলার দাবিতে উত্তরকন্যা অভিযানে শামিল হবার উদ্যোগ নিয়ে প্রচারাভিযানে শামিল হয়েছেন, তখনই রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তর এই কলেজের চার অধ্যাপকে অন্যত্র কাজে যোগ দেবার নির্দেশ দিয়েছে। উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের এই ভূমিকায় প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তর কি পাকাপাকি ভাবে উত্তরবঙ্গের একমাত্র মহিলা, শারীর শিক্ষা কলেজ ফের চালু করার পরিবর্তে গুটিয়ে নিতে চাইছে?
এনএসটিই এই কলেজের অনুমোদন বাতিল হতে পারে সে বিষয়ে সতর্ক করে প্রথম চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল ২০১৮ সালে। কিন্তু রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দপ্তর অনুমোদন চালু রাখতে কোন শর্তই পূরণ করে নি।
এনসিটিই’র নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের কলেজ চালু রাখতে পড়ুয়া অনুপাতে অন্তত ১৪ জন অধ্যাপক থাকা জরুরী। কিন্তু এই কলেজ মাত্র ৬ জন অধ্যাপক দিয়ে চলছিল। ২০২০ সালের ৩ মার্চ এক চিঠি দিয়ে কলেজের অনুমোদন বাতিল করে এনসিটিই।ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে কেন শর্ত মানা হচ্ছে না! কলেজের পক্ষ থেকে সেই চিঠির উত্তর ৩০ অক্টোবর দেওয়া হলেও শর্তপূরণের বিষয়ে কোন কিছুই উল্লেখ করা হয় নি। পরবর্তীতে শর্তপূরণের জন্য আরও ২১ দিন সময় দিলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ শর্ত পূরণ করে নি। দু বছরেও উচ্চ শিক্ষা দপ্তর এনসিটিই’র শর্ত পূরণ না করায় অনুমোদন বাতিল হয়েছে কলেজের। এনসিটিই’র বক্তব্য, কলেজ ফের চালু হতে পারে রাজ্য যদি অধ্যাপক নিয়োগ থেকে শুরু করে অন্য শর্তগুলো পূরণ করে।
কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ বাদশা ঘোষ অবশ্য এখনও আশা করছেন এনসিটিই’র অনুমোদন পেতে তাদের শর্ত পূরণ করবে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তর। যে চারজন অধ্যাপককে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কলেজ চালু হলে তাদের ফের ফিরিয়ে আনা হবে।
বামফ্রন্ট আমলে এই কলেজ গড়ায় প্রয়াত মন্ত্রী কমল গুহ’র উদ্যোগ ছিল প্রশংসনীয়। তাঁর ছেলে উদয়ন গুহ(দলবদলু)এখন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী হলেও মহিলা শারীর শিক্ষা কলেজ ফের চালু করতে কোন উদ্যোগ নেয় নি। একই ভাবে ৫ বছর আগে বিজেপির কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামানিক কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রপ্রতি মন্ত্রী ছিলেন। তিনিও তার সময়ে উত্তরবঙ্গের একমাত্র মহিলা শারীর শিক্ষা কলেজ ফের খোলার কোন উদ্যোগ নেয় নি।
দিনহাটার ছাত্র- যুবরা এবারে আন্দোলনের তীব্রতা বাড়িয়ে ফের কলেজ চালু করতে ২৮ মার্চ উত্তরকন্যা অভিযানে শামিল হবার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
Uttar kanya Abhiyan
উত্তরকন্যা অভিযানে শামিল হবার প্রস্তুতি নিচ্ছে কোচবিহারের ছাত্র-যুবরা

×
Comments :0