কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও শিল্প ভিত্তিক ফেডারেশন সমূহের ডাকে আগামী ৯ জুলাই সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে কেন্দ্রীয় মিছিল হয় সোমবার। ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত এই মিছিল হয়। দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প, কল কারখানা এবং শ্রমিক কর্মচারী মেহনতি মানুষের অধিকারের লড়াইকে মজবুত করতে এই ধর্মঘট।
নিম্নচাপের জেরে সকাল থেকেই কলকাতার মুখ ভার। আবহাওয়া দপ্তরের আগে থেকেই পূর্বাভাস ছিল সোমবার ও মঙ্গলবার মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে কলকাতায়। কিন্তু বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই মিছিল করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন শ্রমিক কৃষক নেতৃবৃন্দ। সকালে হালকা বৃষ্টি হলেও বেলা বলার পর বৃষ্টি বাড়ে। মিছিল শুরুর কিছুক্ষণ পরই ঝমঝমিয়ে নামে বৃষ্টি। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই চলে মিছিল। মিছিলের শুরু যখন লেনিন সরণির প্রায় অর্ধেক পেরিয়ে গিয়েছে তখনও মিছিলের শেষ ধর্মতলার মুখেই।
মিছিলের মেজাজ থেকেই লক্ষ্য করা গিয়েছে আগামী ৯ জুলাইয়ের ধর্মঘটের প্রস্তুতি। মিছিল থেকে স্লোগান উঠছে ‘শ্রম কোড বাতিল কর’, ‘শিল্প কলকারখানা গুলিকে ধ্বংস করার বিরুদ্ধে শ্রমিক শ্রেণির লড়াইকে ঐক্যবদ্ধ কর। ঠিকা নয়, চুক্তিভিত্তিক নয়। স্লোগান উঠেছে সুরক্ষিত কাজের। কাজের সময় বাড়িয়ে ১২ ঘন্টা করার প্রতিবাদে সোচ্চার থেকেছে মিছিল।
সিআইটিইউ রাজ্য সাভাপতি অনাদি সাহু মিছিলের শেষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, মালিকের মুনাফার স্বার্থে ১২ ঘন্টা কাজ চালু করার আইন করেছে মোদী সরকার। ওদিকে ন্যূনতম মজুরির গ্যারান্টিও নেই শ্রমিকদের জন্য। এক কথায় শ্রমকোড চালু করে শ্রমিকের অধিকার কেড়ে নেওয়ার তোড়জোড় করেছে বিজেপি সরকার। ওদিকে জাতীয় সম্পদ তথা রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা বেসরকারিকরণের মাধ্যমে পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দিচ্ছে বিজেপি- আরএসএস। দেশ ও দেশের শ্রমজীবী অংশের মানুষ এক দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবাদও হবে জোরালো। জিনিসের মূল্যবৃদ্ধিও ঘটছে অস্বাভাবিক হারে, নিয়ন্ত্রণের কোনও উদ্যোগ নেই কোনো সরকারেরই। এর বিরুদ্ধেই এই দেশ জোড়া ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের উদার অর্থনীতির ফলাফল ভুগছেন সাধারণ মানুষ, এই মন্তব্য করে অনাদি সাহু এদিন বলেন, কর্পোরেট তোষণকারী জনবিরোধী নীতির ফলে দেশের বিপুল অংশের মানুষ দারিদ্রের চরম সীমায় পৌঁছেছেন। দেশে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু মজুরি আর বাড়ছে না সাধারণ মানুষের, কারণ ন্যূনতম মজুরির কোনো নীতিই নেই বিজেপি সরকারের আমলে। অথচ দেশ এগিয়ে চলেছে বলে প্রচার করছে বিজেপি সরকার। দেশ জুড়ে যেখানেই ধর্মঘট, মিছিল হচ্ছে সেখানেই বাধা দেওয়া হচ্ছে, জেলে ঢোকানো হচ্ছে। এই অব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমাদের ধর্মঘট।
প্রতিবাদ জানানো হয়েছে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধেও। রাজ্যেও ন্যূনতম মজুরির অধিকার অগ্রাহ্য করে মালিকের পক্ষে অবস্থান নিয়ে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। ৯ জুলাই প্রতিবাদ তার বিরুদ্ধেও, জানিয়েছে মিছিল।
July 9th Strike Dharmatala
সর্বাত্মক ধর্মঘটের প্রস্তুতি তুঙ্গে, জানালো ধর্মতলার মিছিল

×
Comments :0