Iran Regime Change

ইরানে জমানা বদলও লক্ষ্য হামলার, উঠল প্রশ্ন

আন্তর্জাতিক

ইজরায়েল ফের হামলা চালালো ইরানে। এদিকে ইরানের পালটা হানায় ক্ষতিগ্রস্ত ইজরায়েলও। শনিবার তেল আভিভ এবং জেরুজালেমে ইরান আক্রমণ করেছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে ইজরায়েলকে সরাসরি সহায়তা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। 
শনিবার ইরানের পরমাণু শক্তি কমিশনের মুখপাত্র বেহরোজ কামালবান্দি দাবি করেছেন যে ইজরায়েলের আঘাতে নাতানজ, ফোরদো বা ইসফাহানের পরমাণু কেন্দ্রের মূল পরিকাঠামোর ক্ষতি হয়নি। 
চলতি পর্বে ইজরায়েলের হামলায় তিনটি উদ্দেশ্য সামনে এসেছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। 
এই অংশের মত অনুযায়ী একটি উদ্দেশ্য হলো, পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করিয়ে আমেরিকার সঙ্গে চুক্তি সই করতে ইরানকে বাধ্য করা। দুই, পশ্চিম এশিয়ায় মুলুক দখলে বাধা দেওয়ার মতো কেউ আর না থাকে নিশ্চিত করা। ২০২৩’র অক্টোবরের পর হামাস এবং হিজবোল্লার একাধিক শীর্ষ নেতাকে হত্যা করেছে ইজরায়েল। তিন, ইরানে জমানা বদল বা আমেরিকার ‘রেজিম চেঞ্জ’ নীতি কায়েম করা। 
আইএইএ ইরানের বিরুদ্ধে নজরদারিতে সহযোগিতা না করার অভিযোগ তুললেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দায় দিতে পারেনি। ঘটনা হলো, যে আমেরিকা এবং পশ্চিমী দেশগুলির হাতে গণ বিধ্বংসী পারমাণবিক অস্ত্রের সিংহভাগ সম্ভার, তারাই ইরানকে ‘বিপজ্জনক’ চিহ্নিত করছে পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য! 
ইজরায়েল কেবল ইরানের একাধিক পারমাণবিক কেন্দ্রে আঘাত হানেনি, পরমাণু বিজ্ঞানীদেরও হত্যা করেছে এই পর্বের আক্রমণে। নিহত হয়েছেন ইরানের চিফ অফ আর্মি স্টাফের চেয়ারম্যান সহ শীর্ষস্তরের একাধিক সামরিক আধিকারিক। 
ট্রাইক্টিনেন্টাল ইনস্টিটিউট ফর সোশাল রিসার্চের ডিরেক্টর বলছেন, ‘‘সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে ইরানের সঙ্গে ভয়াবহ যুদ্ধে নেমেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। কিন্তু কেবল সেজন্যই এই যুদ্ধে নামেনি ইজরায়েল। ইরানে জমানা বদলের গন্ধ পেয়ে এমন আগ্রাসন।’’ 
প্রকাশনা সংস্থা ‘লেফটওয়ার্ড’-র সম্পাদক বলেছেন, ‘‘রাষ্ট্রসঙ্ঘের সনদ অগ্রাহ্য করে ২০২৩ থেকে লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েল। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদস্য রাষ্ট্র ইরান। ফলে তাদের সার্বভৌমত্বের অধিকার আন্তর্জাতিক স্তরেই স্বীকৃত।’’  
পশ্চিম এশিয়ার সংবাদমাধ্যমের একাংশের মত, নেতানিয়াহু নিজের দেশে অস্থিরতা সামলাতে একের পর এক যুদ্ধ অথবা সামরিক আগ্রাসন টিকিয়ে রাখতে আগ্রহী। ২০২৩’র ৭ অক্টোবর গাজা থেকে হামাসের আক্রমণের পর সুরক্ষার বুলি প্রশ্নের মুখে। সঙ্কটে রয়েছে নিজের উগ্র ধর্মান্ধ জায়নবাদী জোটও। ফলে গাজায় গণহত্যার পাশাপশি লেবানন, সিরিয়া এবং ইরানে দফায় দফায় হামলা চালাচ্ছেন নেতানিয়াহু। 
ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হামলার যুক্তিতে বলেছেন, ‘‘খুব তাড়াতাড়িই পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে ফেলার অবস্থায় পৌঁছেছে ইরান। তবে ঘটনা হলো, এর আগে ২০২৫-তে ইরান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু কর্মসূচি সংক্রান্ত সমঝোতায় পৌঁছেছিল। ২০১৮-তে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পই একতরফা এই চুক্তি বাতিল করেছিলেন। এখন সেই ট্রাম্পই ইরানকে দায়ী করছেন নতুন পর্বে চুক্তি আমেরিকার দেওয়া সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন না করায়।

Comments :0

Login to leave a comment