পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তীব্র ভর্ৎসনা কলকাতা হাইকোর্টের। সুপ্রিম কোর্টেও ধাক্কা খেয়ে মাত্রা ২২ কোম্পানী কেন্দ্রীয় বাহিনী কেন? প্রশ্ন হাইকোর্টের। পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা করার পর থেকে বেলাগাম সন্ত্রাস হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন। সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রসের বাহিনী। এমনকি ব্লক দপ্তরে বিরোধীদের মনোনয়ন পত্র কেড়ে নেওয়া হচ্ছে পুলিশের সামনে। সব কিছু দেখেও চুপ থেকেছে নির্বাচন কমিশন। এই নিয়েই কড়া মনোভাব প্রকাশ করেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি।
কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগে এতো ঢিলে ঢালা মনোভাব কমিশনের এমনকি আদালতের নির্দেশের পরেও তা কার্যকরী করেননি কমিশনার রাজীব সিনহা। এই নিয়ে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম রাজ্য নির্বাচনের কমিশনার রাজীব সিনেহার উদ্দেশ্যে বলেন ‘আদালতের নির্দেশ কার্যকর না করতে পারলে কমিশনারের পদ ছেড়ে দিন। রাজ্যপাল নতুন কমিশনার নিয়োগ করবেন।’ তারপর আদালত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কার্যত একটি গাইড লাইন বেঁধে দেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন ১ দফা নির্বাচন এতগুলি জেলা। সেই সঙ্গে ভোটারের সংখ্যাও বেড়েছে। তা নিয়ন্ত্রণ করতে ২২ কোম্পানী কেন্দ্রীয় বাহিনী পর্যাপ্ত নয়। ২০১৩ সালে ৫দফা নির্বাচনে ১৭ টি জেলায় ৮২ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে আদালতের নির্দেশের পরেও এত কম কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে কেন নির্বাচন হবে প্রশ্ন তোলে আদালত। ৮২৫ কোম্পানি বাহিনী দিয়েই নির্বাচন সম্পূর্ণ করতে হবে বলে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশের পরও কেন্দ্রীয় বাহিনী ডাকা হলো না কেন, আদালত সে প্রশ্নও তুলেছে।
কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন ‘নির্বাচন কমিশনের উচিৎ আদালতের যা নির্দেশ তা মানা। সরকারে উচিৎ এতে বাধ না সাধা। ২২ কোম্পানী দিয়ে কোনভাবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হতে পারে না। অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথে বাধার পাহাড় তৈরি করা হচ্ছে। নিজেদের ঘাড় থেকে দায় এড়িয়ে যেতে সরকার ও কমিশন লোক দেখান পদক্ষেপ করছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা পদক্ষেপ দরকার তার দাবি জানাচ্ছে বামফ্রন্ট। কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে। কিভাবে তারা সাধারণ মানুষ ও ভোট কর্মীদের নিরপত্তা দেবে’।
পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে বেনজির সন্ত্রাস নিয়ে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন ‘গুন্ডা এবং পুলিশ মিলে মানুষের অধিকার শেষ করছে আমরা বলছি অবাধ ভোট করতে নিরাপত্তা দরকার। মুখ্যমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনার বলছেন অশান্তির খবর তারা জানেন না। কমিশনার কানে ব্লু-টুথ গুঁজে রেখেছেন, কালীঘাটের সঙ্গো যার সরাসরি যোগাযোগ। সেখান থেকে যা নির্দেশ আসছে তাই করছেন।
Comments :0