Plane Crash Bangladesh

বাংলাদেশে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ২০, কাল রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা

আন্তর্জাতিক

মীর আফরোজ জামান : ঢাকা 
সোমবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তরা মডেল টাউনের দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর বিমান দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু এবং ১৭১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আইএসপিআর। জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে অর্ধশতাধিক পড়ুয়াকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই দগ্ধ বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বিমান দুর্ঘটনায় মঙ্গলবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস বিভাগ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। সেই সঙ্গে সকল সরকারি, বেসরকারি ভবন ও বিদেশে বাংলাদেশি মিশনেও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। এ ছাড়া আহত-নিহতদের জন্য দেশের সকল ধর্মীয় প্রতিষ্টানে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
বিমান দুর্ঘটনায় ‘‘আহতের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। দগ্ধদের বেশিরভাগই পড়ুয়া। তাদের  অবস্থা আশঙ্কাজনক।’’ বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান এদিন বলেন,‘‘আহতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত অর্ধ শতাধিক এসেছে। তাদের চিকিৎসায় আমরা খুব ব্যস্ত আছি। দগ্ধ ও আহতদের অনেককে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই হাসপাতালের প্রশাসন শাখার পরিচালক নাজমুল ইসলাম গণশক্তি ডিজিটালের প্রতিনিধিকে বলেন, ‘‘আমরা ১৫ জনের চিকিৎসা করছি। তাদের মধ্যে দুইজন শিক্ষক বাকিরা পড়ুয়া। যারা কম দগ্ধ, তাদের আমরা এখানে চিকিৎসা করছি। যাদের ৩০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে, তাদের বার্ন ইউনিটে রেফার করা হচ্ছে।’’
উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, উত্তরা উইমেন্স মেডিকেল কলেজ, মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালেও আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, বিমান বাহিনীর ‘এফ-৭ বিজেআই’ প্রশিক্ষণ বিমানটি সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে ভেঙে পড়ে আগুন ধরে যায়। অনেক দূর থেকেও সেখানে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। জ্বলন্ত বিমানটি আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় দমকলের ৮ টি ইঞ্জিন।
দমকলের আধিকারিক লিমা খানম বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা একজনের দেহ উদ্ধার করেছে। বিমান বাহিনীর লোকজন আহত অনেককে সরিয়ে নিয়ে গেছে। নিহতের পরিচয় জানা যায়নি। 
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জনসংযোগ আধিকারিক শাহ বুলবুল গণশক্তি ডিজিটালকে বলেন, বিমানটি একটি ভবনের গেটে আছড়ে পড়ে। সেটি অ্যাকাডেমিক ভবন। সেখানে স্কুলের বাচ্চাদের ক্লাস চলছিল। একের পর এক আহতদের বের করে নিয়ে আসা হয়।’’

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস শোক বার্তায় বলেছেন, বাংলাদেশ বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি।  দুর্ঘটনায় বিমানসেনা ও মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পড়ুয়া, অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মচারীসহ অন্যান্যদের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। আমি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতালসহ সকল কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলার নির্দেশ দিয়েছি। সরকার দুর্ঘটনার কারণ জানতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করবে। সরকার আগামীকাল মঙ্গলবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।

Comments :0

Login to leave a comment