প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে কখনও সাংবাদিক সম্মেলন করেননি নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া তিনদিনের মার্কিন সফরে গিয়ে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে হলে নরেন্দ্র মোদীকে।
সেখানেই দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন করেন এক মার্কিন সাংবাদিক। তিনি প্রশ্ন করেন সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং বাক স্বাধীনতার জন্য তার সরকার কি পদক্ষেপ নিচ্ছে।
প্রথমে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে নিজের লেপেলটি খুলে ফেলেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর তিনি বলেন, ‘‘ভারতে বৈষম্যের কোন জায়গা নেই।’’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘যেখানে মানবাধিকার নেই, সেখানে গনতন্ত্র নেই।’’
উল্লেখ্য প্রধানমন্ত্রী যখন এই কথা বলছেন তখন মার্কিন কংগ্রেসে তার বক্তৃতা বয়কট করেছেন কংগ্রেসের দুই সদস্য ইলহান ওমার এবং রশিদা তালেব। মার্কিন দুই নেত্রীর কথায় ভারতের মাটিতে সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত। তাদের মানবাধিকার এই সরকারের আমলে খর্ব হয়েছে। এছাড়া সামার লি, জামাল বাওম্যান, কোরি বুশ, আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজের মতো মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা মোদীর বক্তৃতা বয়কট করেছেন।
কেন্দ্রে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে কখনও লাভ জিহাদ বা কখনও ফ্রিজে গুরু মাংস রাখার কারণে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি এবং আরএসএসের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের পক্ষ থেকে। দেশে এবং বিদেশে ভারতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠছে তখন প্রধানমন্ত্রী আমেরিকায় দাঁড়িয়ে দাবি করছেন যে, ‘‘ভারত এবং আমেরিকার ডিএনএতে গনতন্ত্র রয়েছে। আমাদের সরকার সংবিধান মেনে চলে তাই কোন ঘৃণা বা জাত ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ নেই।’’ উল্লেখ্য বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্টেও ভারতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে পূর্বে।
মোদীর এই সফর চলাকালিন একটি সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা এই বিষয় বলেন, ‘‘ভারতে মুসলিমদের নিরাপত্তা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’’ শুধু ওবামা নয় মার্কিন সেনেটর বার্নি সান্ডার সংবাদমাধ্যমের অধিকারের ওপর সরকারের হস্তক্ষেপ এবং অনৈতিক ভাবে সামাজিক আন্দোলনের কর্মীদের জেলে আটকে রাখা নিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘উগ্র হিন্দুত্ব জাতীয়তাবাদের ধারনা প্রচার করা হচ্ছে যেখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কম গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’
চলতি মার্কিন সফরে একাধিক বার বিভিন্ন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। ওমার খালিদকে কেন দীর্ঘদিন জেলে আটকে রাখা হয়েছে? এই প্রশ্ন তুলে নিউ ইয়র্ক শহরে প্রচার চালানো হচ্ছে। তার সাথে সাথে ২০০৪ থেকে ২০১৫ সালে পর্যন্ত মোদীকে কেন আমেরিকায় ব্যান করে রাখা হয়েছিল সেই কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনকে।
২০০২ সালে গুজরাট গনহত্যার পর তৎকালিন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ব্যান করে আমেরিকা।
দিল্লিতে কুস্তিগিরদের ওপর দিল্লি পুলিশের অত্যাচারের প্রসঙ্গ এই প্রচারে উঠে এসেছে।
Comments :0