Nagpur Violence

নাগপুর হিংসায় গ্রেপ্তার ১, হিন্দুত্ববাদীরা অধরাই

জাতীয়

মুখ্যমন্ত্রীর বয়ানে বেরিয়ে পড়েছে যে উসকানির মূলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরঙ দল। তাদের কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। নাগপুরে সাম্প্রদায়িক হিংসায় ফাহিম শামিম খান নামে একটি স্বল্প পরিচিত রাজনৈতিক দলের নেতাকে গ্রেপ্তার করল মহারাষ্ট্রের পুলিশ।
সোমবার নাগপুরে হিংসা ছড়ায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির মিছিলের পর থেকে। তিনশো বছর আগে মৃত মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেবের কুশপুতুল পুড়িয়ে বিক্ষোভে নামে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরঙ দল। প্রচার হয়ে যায় যে ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষ পবিত্র বলে মনে করেন এমন সামগ্রীতেও আগুন ধরানো হয়েছে। অভিযোগ একটি দোকান পুড়িয়ে দেয় এই বাহিনী। এরপর ছড়াতে থাকে উত্তেজনা।
বুধবার নাগপুরের গণেশপীঠ থানায় এমডিপি নেতা ফাহিম শামিম খানের নামে এফআইআর দায়ের হয়। এর আগে একাধিক এফআইআর দায়ের হলেও কোনও গ্রেপ্তারি হয়নি। 
মহারাষ্ট্র পুলিশ বুধবার জানিয়েছে যে নাগপুরে প্রায় ২ হাজার সশস্ত্র জওয়ান নামানো রয়েছে। পুলিশের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। তবে বিভিন্ন মহল্লায় কারফিউ জারি রয়েছে। 
সোমবারের উত্তেজনা ঘিরে বিধানসভায় রাজ্যের বিজেপি জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস বলেছেন, ‘‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরঙ দল নাগপুরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল। হুজব ছড়ায় যে ধর্মীয় সামগ্রীতে আগুন দেওয়া হচ্ছে।’’
মুসলিম অংশকে দায়ী করতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মনে হয় এই আক্রমণ পূর্ব পরিকল্পিত। আইন নিজের হাতে কেউ নিতে পারেন না।’’
কংগ্রেসের অভিযোগ, আইন নিয়ে সমানে খেলা চলতে থাকে কী করণীয় বলেননি ফড়নবিস। 
রাজ্যের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা বিজয় ওয়াদেত্তিয়ার সরাসরি বলেছেন, ‘‘বিজেপি’র ‘মহায়ুতি’ সরকারই নাগপরে হিংসার প্রধান মদতদাতা। একের পর এক উসকানি ছড়ানো হয়েছে প্রশাসনিক স্তর থেকে। বিজেপি নেতা টি রাজা সিং-কে মহারাষ্ট্রে কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিতে দেওয়া উচিত নয়। অতীতেও উত্তেজনা ছড়ানোয় দায়ী এই নেতা। তারপরও তাঁকে ঘুরতে দেওয়া হয়েছে।’’
মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোটের প্রতিশ্রুতি পালনে পিছিয়ে যাচ্ছে বিজেপি জোট সরকার। তার ওপর জোটের মধ্যেও মনোমালিন্য রয়েছে একনাথ শিন্ডেকে ফের মুখ্যমন্ত্রী হতে না দেওয়ায়। এর আগে আম্বেদকরের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদ জোরালো হয়েছে। বিভিন্ন অংশের মত, সঙ্কট সামলাতে না পেরে ধর্মীয় বিভাজন তৈরি করছে বিজেপি-ই। নজর অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছে। না হলে হঠাৎ কী এমন হলো যে অওরঙ্গজেবের সমাধি ছত্রপতি শম্ভাজিনগর থেকে সরানোর দাবি ঘিরে এত মাতামাতি! 
এদিন পুলিশ বলেছে যে সোমবারের হিংসার ঠিক আগে ফাহিম খানের একটি ভিডিও হাতে এসেছে। সেখানে তাঁকে উত্তেজক ভাষণ দিতে শোনা গিয়েছে। উল্লেখ্য, ফাহিম শামিম খান ২০২৪’র ভোটে নাগপুর কেন্দ্রে এমডিপি’র প্রার্থী ছিলেন।

Comments :0

Login to leave a comment