Ghatal Master Plan

পুনর্বাসন-ক্ষতিপূরণ কোথায়? ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে উচ্ছেদ, বিক্ষোভ মিছিল

জেলা

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান না ‘মার্ডার প্ল্যান’, প্রশ্ন তুলে মিছিল। ছবি: চিন্ময় কর

জোর জবরদস্তি করে উচ্ছেদ করলে লড়াই হবে। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের নামে নির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসনের ঘোষণা না করেই উচ্ছেদের নেমেছে প্রশাসন। সোমবার তার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা।   
বন্যা নিয়ন্ত্রণের নামে পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণ না দিয়ে ঘাটাল শহরের ৩ থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে হাজার হাজার পরিবারকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে। স্থানীয়রা কটাক্ষের সুরে এই প্রকল্পকে ‘ঘাটাল মার্ডার প্ল্যান’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন যে এই প্রকল্প কার্যকর করতে জমি ঘরবাড়ি দোকান ঘর বিনা পুনর্বাসনে উচ্ছেদ করা যাবে না। 
বিক্ষোভ মিছিল করে বাসিন্দারা জানিয়ে দিলেন যে নির্বিচার উচ্ছেদের প্রতিবাদ হবে। এর আগেও ৫ নম্বর ওয়ার্ড ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে সভা ডকে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা জোর করে জমি জায়গা ঘরবাড়ি ছেড়ে দেওয়ার সম্মতি পত্রে সই করানোর চেষ্টায় তুমুল বিক্ষোভ হয়েছে। জনরোষের মুখে পড়ে তলপি তলপা গুটিয়ে নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রশাসন। 
সোমবার ফের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রশাসনিক সভা চলাকালীনই শতশত পরিবার বিক্ষোভ মিছিল করে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। কেন ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসন ঘোষণা না করে জমি অধিগ্রহণের এই চেষ্টা, তার কৈফিয়ত চান বাসিন্দারা। প্রশ্ন তোলেন যে হাজার হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি, বাস্তু জমি, চাষের জমি চলে গেলে তারা বাস করবেন কোথায়, তাদের রুটি রুজির কী হবে? 
এই প্রশ্নে রাজ্য সরকার এবং প্রশাসন নীরব। স্থানীয় বাসিন্দা কাকলি মহাপাত্র, আরতি ভুঁইয়া, অর্চনা সামন্তের মতো শতশত মহিলা বলেন, আমরা ছেলেপুলে নিয়ে থাকবো কোথায়, খাবো কী। মাস্টার প্ল্যানের নামে এমন ‘মার্ডার প্ল্যান’ চাই না। 
৩ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণনগর এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, তাঁদের সব কিছু কেড়ে নিয়ে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান করা যাবে না। পুনর্বাসনের কথা বলা হলেও এখনো পর্যন্ত কোনেও ঘোষণা পর্যন্ত হয়নি। জীবন ও জীবিকার কোনও নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। 
এই প্রকল্পের জন্য ঘাটাল শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শিলাবতী নদীর উভয় পাড়ে ৬০ ফুট করে জায়গার প্রয়োজন। নদীর গভীরতা এবং বহর বাড়িয়ে হওয়ার কথা কংক্রিটের গার্ডওয়াল। 
এছাড়া দাসপুরে নতুন করে ৬ কিমি খাল কেটে শিলাবতী ও চন্দ্রেশ্বর যোগ করে সেই জল রূপনারায়ণ নদীতে ফেলতে তিনটি স্লুইস গেট সহ আরো ৯ টি স্লুইস গেট নির্মাণের জন্য ৫০০ কোটি টাকা রাজ্য সরকার বরাদ্দ করেছে। সংশ্লিষ্ট অংশের মতে, এত কম টাকায় কাজ হওয়া অসম্ভব। সেখানে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের জন্য বরাদ্দই বা কোথায়?  
সামনের বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে  ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের নামে কাজের কাজ কতটা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে সর্বত্র।

Comments :0

Login to leave a comment