JALPAIGURI AGRI WORKERS MISHRA

হারাতে হবে গরিবের শত্রু দু’দলকেই, খেতমজুর সমাবেশে মিশ্র

জেলা

সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির ডাকে সমাবেশে সূর্য মিশ্র।

দীপশুভ্র সান্যাল, জলপাইগুড়ি
 

দুই দলই গরিব মানুষের শত্রু। তাই তৃণমূল এবং বিজেপি দু’দলকে পরাজিত করার মধ্য দিয়ে মানুষের অগ্রগতি সম্ভব। বুধবার জলপাইগুড়িতে খেতমজুর সমাবেশে এ কথা বলেছেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য সূর্য মিশ্র। 
সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির ডাকে মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে বুধবার। ১০০ দিনের কাজ চালু, সুদ সহ বকেয়া মজুরি প্রদানের দাবি জানিয়েছে সংগঠন। এই প্রকল্পে বছরে ২০০ দিনের কাজ ও ৬০০ টাকা মজুরি প্রদানের দাবিও তোলা হয়েছে। 
খেতমজুর আন্দোলনের দাবি, সকল গরিব মানুষকে ছাদ যুক্ত পাকা ঘর দিতে হবে। ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে খেতমজুরদের পেনশন চালু, স্মার্ট মিটার বন্ধ করা, ধর্মীয় ভেদাভেদ বন্ধ করে গরিবের ঐক্য গড়ে তোলার দাবি উঠেছে জলপাইগুড়ি শহরের মিছিল ও সমাবেশ। 
মিছিলে পথ হাঁটেন‌ গণআন্দোলনের সর্বভারতীয় নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, খেতমজুর আন্দোলনের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব অমিয় পাত্র, সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তুষার ঘোষ, রাজ্য সম্পাদক নিরাপদ সর্দার, জেলা সম্পাদক কৌশিক ভট্টাচার্য,সভাপতি হরিহর রায় বাসুনিয়া, পার্টির জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সভার মূল বক্তা সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরোর সদস্য সূর্য মিশ্র বলেছেন, ‘‘গোটা দেশে যখন গরিব মানুষ খেটে খাওয়া অসহায় মানুষ না খেতে পেয়ে রাস্তায় বা রেললাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে মারা গেছেন তখনই দেশের পুঁজিপতি ধনিক শ্রেণির মানুষরা সরকারি সাহায্যে তাদের সম্পত্তি কয়েকগুণ বৃদ্ধি করেছে। ‘সবকা সাথ সব কা বিকাশ’ বলে বিজেপি সরকার গরিব মানুষের হাত ছেড়ে বড়লোকের হাত ধরেছে। তাকে আরও বড়লোক করার ব্যবস্থা হয়েছে।’’
সংবাদমাধ্যম মিশ্রকে প্রশ্ন করে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ এবং তৃণমূল প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই বলেছিলাম তৃণমূল কখনো বিজেপির বিরোধী হতে পারে না। কারণ কখনই আরএসএসের সম্পর্কে একটি বাক্য ব্যয় করে না তৃণমূল।’’

মিশ্র বলেছেন, ‘‘রাজ্যের তৃণমূল সরকার আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত। বিজেপির সঙ্গে হাত ধরে তারাও কেন্দ্রীয় সরকারের দেখানো পথে পা মিলিয়ে চলছে। ভারতের সমস্ত বিরোধী শক্তিকে নিকেশ করে বিজেপি যেভাবে একচ্ছত্র ক্ষমতা দখলে বিশ্বাসী একই কায়দায় চলছে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস। আবার এরা বিরোধিতার নাটক করে শ্রমজীবী মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘বিরোধী কন্ঠরোধ করে ভারতবর্ষের সংবিধান গণতন্ত্র সবকিছুকে ধ্বংস করতে চায় বিজেপি। ধর্ম যার যার নিজস্ব ব্যাপার কিন্তু ধর্মের জিগির দিয়ে আজকে মানুষের বিভেদ করছে। তুমি হিন্দু, তুমি মুসলমান, তুমি খ্রিস্টান, তুমি আদিবাসী, তুমি নেপালি- রাজ্যের উত্তরের জেলাগুলিতে যেহেতু বিভিন্ন জনজাতি অংশের মানুষের বাস সেখানে বিভাজনের রাজনীতির মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে তৃণমূল বিজেপি।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা বামপন্থী মনে করি দুটো শ্রেণি রয়েছে শোষক আর শোষিত। একদল লুটে খায় আরেকদল খেটে খায়। যারা খেটে খায় লুটে খাওয়া অংশ তাদেরকেই লুট করে আমরা খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে আর ওই লুটে খাওয়াদের পক্ষে দল হলো তৃণমূল বিজেপি।’’

মিশ্র বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজের টাকা চুরি করেছে তৃণমূল কিন্তু যারা চুরি করল তাদের কোন শাস্তি হলো না অপরাধীরা বহাল তবিয়াতে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর খেটে খাওয়া গরিব মানুষের টাকা বন্ধ করে রেখেছে বিজেপি সরকার।’’ 
প্রয়াত জননেতা কমরেড জ্যোতি বসুকে মনে করিয়ে মিশ্র বলেন, ‘‘তৃণমূলের সবচেয়ে বড় অপরাধ হলো পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপিকে জায়গা করে দেওয়া।’’

Comments :0

Login to leave a comment