Coochbehar Murdered

ঝগড়া থেকে মারপিট, দিনহাটায় জোড়া খুনে চাঞ্চল্য

রাজ্য জেলা

খুন হয়ে যাওয়া দুজনের মৃতদেহ দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে। ছবি - অমিত কুমার দেব।

অমিত কুমার দেব- দিনহাটা

জোড়া খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার ভেটাগুড়ি এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে দিনহাটার ভেটাগুড়ি ২নং গ্রাম পঞ্চায়েতের নগরমন্ডল বাজার সংলগ্ন উত্তর বালাডাঙ্গা এলাকায়। মৃত ওই দুই ব্যক্তির নাম হাসানুর রহমান (৩৫)ও ইউসুফ মিঞা (৫৫)। তাদের বাড়ি কান্তিরখাওয়া এলাকায়। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯ টা নাগাদ নগরমন্ডল বাজার সংলগ্ন উত্তর বালাডাঙ্গা এলাকায় একে অপরের সাথে বচসায় জড়ান। এরপর দুজন দুজনকেই ছুরি মারে বলে অভিযোগ। পরে স্থানীয়রা তা দেখতে পেয়ে ছুরিকাহত অবস্থায় উদ্ধার করে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। এখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে খবর পেয়ে দিনহাটা থানার পুলিশ প্রথমে হাসপাতালে যায়। পরে এখান থেকে দিনহাটা এসডিপিও ধীমান মিত্র ও দিনহাটা থানার আইসি জয়দীপ মোদকের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী নগর মন্ডল বাজার সংলগ্ন উত্তর বালাডাঙ্গা এলাকার ঘটনাস্থলে যান। সেখানে তারা সরেজমিনে এই জোড়া খুনের তদন্ত শুরু করেছেন বলে জানা গিয়েছে।

মৃত হাসানুর রহমানের স্ত্রী সাহেরা বানু বিবি জানান, তাকে পাশের বাড়ির একজন গিয়ে খবর দেয় যে তার স্বামীকে কে যেন ছুরি মেরেছে। তিনিও শোনামাত্র ছুটে গিয়ে দেখেন জমিতে পরে রয়েছেন তার স্বামী। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান তার মৃত্যু হয়েছে। তবে তার অভিযোগ, এরা নিজেরা লড়াই করে মারা যাননি। এদের মৃত্যুর পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন তিনি।

মৃত হাসানুর রহমানের পরিজন ইব্রাহিম মিঞা এদিন দাবি করেন, ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে মৃত্যু হয়েছে হাসানুরের। তার যুক্তি যদি দুজনে দুজনকে চুরিকাহত করে মারা যান তাহলে ঘটনাস্থলে অস্ত্র উদ্ধার হবে কিন্তু এক্ষেত্রে কোন অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। অতএব এই ঘটনায় কোন বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি তার।

 এই প্রসঙ্গে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য জাকির মিঞা এদিন বলেন, যে দুজন মারা গিয়েছেন তারা দুজনেই জেল খাটা আসামি। এদের দুজনের মধ্যে কি সম্পর্ক ছিল, তা জানা নেই। এরা দুজনেই দুষ্কৃতী, দুজন দুজনকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন এই পঞ্চায়েত সদস্য।

পুলিশ সূত্রে খবর, প্রায় ১২বছর আগে মাথাভাঙ্গায় একটি জুয়েলারির দোকানে ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিলেন ইউসুফ মিঞা ও হাসানুর রহমান। এরপর থেকে ইউসুফ বিচার বিভাগীয় হেফাজতে ছিলেন এবং হাসানুর মিয়া জামিন পান। জেল থেকে বের হয়ে ইউসুফ মিঞার স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও মহিলা রাজি না হওয়ায় ব্যর্থ হন হাসানির। শোনা যায়, সে সময় হাসানুর এই মহিলাকে মারধরও করেন।              

তবে অভ্যাসগত অপরাধী হওয়ায় আবারও বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হন হাসানুর। গত ৫ বছর তিনি বিচার বিভাগীয় হেফাজতে ছিলেন। ইউসুফের স্ত্রীকে কেন্দ্র করে হাসানুরের এমন কার্যকলাপের কারণে সংশোধনাগারে হাসানুর ও ইউসুফের মধ্যে শত্রুতা বেড়ে যায়। ৫ মাস আগে দুজনেই ছাড়া পান জেল থেকে।

 প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে মদ্যপ অবস্থায় তাদের মধ্যে ঝগড়া এবং মারপিট হয়, রক্তক্ষরণের ফলে মৃত্যু হয় দুজনেরই। ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে। 

Comments :0

Login to leave a comment