চিন্ময় কর
ঘাটাল শহর জলের তলায়। মৃতদেহ সৎকারের নেই জায়গা। ৪ বছরেও ২ কোটি টাকা ব্যয়ে শ্মশান চুল্লি নির্মান হয়নি। ৬ কিমি পথে কোথাও এক কোমর জল, কোথাও এক হাঁটু জল ঠেলে মৃতদেহ দাহ করতে হচ্ছে পরিজনদের।
অভিযোগ, চার বছর আগে শ্মশান চুল্লি নির্মাণ শুরু হলেও কাটমানির বহরে আজ সেটি চালু হয়নি আজও।
বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে জনগণের দাবিতে ঘাটাল ব্লকের ময়রাপুকুর মোড় সংলগ্ন শ্যামপুরে শ্মশাণ চুল্লি নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। সরকার পরিবর্তনের পর সেই কাজ আর চালু হয়নি অনেকদিন।
ক্ষোভ বিক্ষোভের মুখে ২০২০ সালে চুল্লি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তার জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দও হয়। কিন্তু সেই ইলেকট্রিক চুল্লি অর্ধনির্মিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আরো কমপক্ষে ৭০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ না হলে চুল্লি চালু করা অসম্ভব। এদিকে ঘাটালের মানুষকে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে শব দাহ করার সেই ঝঞ্ঝাট পোয়াতে হচ্ছে।
গত সেপ্টেম্বরে ভয়াবহ বন্যায় ঘাটাল দাসপুর, চন্দ্রকোনা ও ডেবরা ব্লকের একাধিক ৪২টি নদীবাঁধ ভেঙে পড়ে। প্রায় দেড় মাস পার হলেও বাঁধ মেরামত হয়নি। ফলে হু-হু করে জল ঢুকছে। ফের ঘাটাল শহর সহ ঘাটাল ব্লকের ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত, দাসপুর, ডেবরা ও চন্দ্রকোনা ব্লক জুড়ে ৯০০’র বেশি মৌজা জলের তলায়।
ঘাটালের আচার্য পল্লী এলাকায় সোমবার রাতে মারা যান কিরিটি রঞ্জন আচার্য নামে এক বৃদ্ধ। কিন্তু সেই শেষকৃত্য করতে শুকনো জায়গা খুঁজতে নাকাল হতে হলো পরিজনদের।
পরিজনরা জানান, জলযন্ত্রণা এমনিতেই তাঁরা ভোগ করছেন তার উপর আরো বাড়তি সমস্যা হলো মৃতদেহের শেষকৃত্য। জল পেরিয়ে কয়েক কিলোমিটার হেঁটে মৃত দেহ নিয়ে যেতে হয়েছে ডাঙা জমির খোঁজে।
ভোটের মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রণে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে হৈ-চৈ শুরু করে দুই শাসকদল। একটি চুল্লি চালু করতে পারে না যারা তারা ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান করবে বিশ্বাস করেন না কেউ।
Comments :0