DENGUE

হুগলিতে শেষ এক মাসে ডেঙ্গুতে ৭ জনের মৃত্যু

খেলা

DENGUE

এই মুহূর্তে হুগলি জেলায় ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের সরকারি পরিসংখ্যান পাঁচ হাজারের বেশি। বেড়েছে ডেঙ্গুতে সাথে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও। মশার কামড়ে জনজীবন জেরবার। ডেঙ্গুর হাত থেকে রেহাই পাইনি আমজনতা থেকে জনপ্রতিনিধিরা। ডেঙ্গুর সংক্রমণ নিয়ে আরামবাগের সাংসদ অপরুপা পোদ্দার এর স্বামী ও তার কন্যা শ্রীরামপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। যদিও তাদের দাবি ভিন রাজ্যে দিয়ে সেখান থেকে ডেঙ্গুর সংক্রমণ হয়েছে তাদের।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা শেষ এক মাসে ৭ জন। সরকারি পরিসংখ্যানের থেকে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি বলে মনে করছে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর সাথে জরিত এক অংশ।
ডেঙ্গুর সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী শুধুমাত্র উত্তরপাড়া ও শ্রীরামপুর পৌরসভায় মিলিয়েই মোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার বেশি। ডেঙ্গুর সংক্রমণ শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলগুলিতেও ছড়িয়ে পড়েছে। হুগলির গ্রামীণ অঞ্চলের মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১২৭২জন।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ডেঙ্গুর রেড জোন গুলি হল উত্তরপাড়া, রিষড়া, শ্রীরামপুর, মগরা, সিঙ্গুর, কানাইপুর, মাখলা, চাপদানি, বলাগড়। এই সমস্ত জায়গা গুলিতে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ক্রমশই উর্ধ্বমুখী।
ডেঙ্গুর, রেড জোনের পরিসংখ্যান
উত্তরপাড়া - ১২৪১, সক্রিয় কেস - ৮৮
রিষড়া - ৬১৭, সক্রিয় কেস- ৭২
শ্রীরামপুর - ১২০৮ ,  সক্রিয় কেস - ১৮৩
মগরা - ১৫৯ , এক্টিভ কেস- ২৩
সিঙ্গুর - ১১৩, এক্টিভ কেস - ১৯
শ্রীরামপুর উত্তরপাড়া গ্রামীন - ১৪৫, এক্টিভ কেস -১৫
চন্ডীতলা ১- ৭০, একটিভ কেস ১৪
ডেঙ্গুর সংক্রমণের চিত্র ধরা পড়ে জেলার হাসপাতাল গুলিতে। মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য মশারি খাটিয়ে রাখা হয়েছে রোগীদের। শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালের দুটি পৃথক ফ্লোর রাখা হয়েছে শুধু ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য। প্রায় ষাট জন ডেঙ্গু রোগি ভর্তি রয়েছে ওয়ালস হাসপাতালে। অনেকেরই চিকিৎসা চলছে বাড়িতে। গত সপ্তাহে পর পর দুদিকে শ্রীরামপুরে মৃত্যু হয়েছে দুই মহিলার। উৎসব শেষ হতেই রীতিমত ভয় ধরাচ্ছে ডেঙ্গু।
শেষ দুই মাসে ক্রমাগতই বৃদ্ধি পাচ্ছে ডেঙ্গুর রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালে আসা অন্য রোগ নিয়ে ভর্তি হলেও ডেঙ্গু সংক্রমণের ভয় থেকেই যাচ্ছে রোগীদের মনে।
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভূঁইয়া জানান আগামী দেড় মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শীত না পরা পর্যন্ত ডেঙ্গুর সংক্রমণ আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। তিনি আরো জানান হুগলি জেলায় এই মুহূর্তে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজারের উপরে। শ্রীরামপুর উত্তরপাড়া ও রিশরা পৌরসভা ডেঙ্গু সংক্রমণে সবথেকে এগিয়ে। এর সঙ্গে যোগ দিচ্ছে অন্যান্য পৌরসভা গুলিও। উত্তরপাড়া ওয়াড নাম্বার ১৫, ১৬, ১৯ শ্রীরামপুরে ২৫, রিষরা ১৯, ভদ্রেশ্বর ০৭, বৈদ্যবাটি ৫, কোন্নগরে ১৩, ডানকুনিতে ১২ এই ওয়ার্ড এছাড়া ব্লক গুলিতে যেমন মগরা ব্যান্ডেল কোদালিয়া ১, চন্ডীতলা ১, জাঙ্গিপাড়া, খানাকুল ২, পোলবার রাজহাট সুগন্ধা, বলাগড় , এই জেলা পরিষদগুলিতে ডেঙ্গু পজিটিভ কেস বাড়ছে, এই ওয়ার্ডগুলোর উপর আমরা বেশি নজর দেবো। বাড়িতে কোথাও জল না জমে থাকে সেই দিকটা দেখতে হবে। এর পাশাপাশি যারা জ্বরে আক্রান্ত তাদের উচিত প্রথম দিনের মধ্যেই হাসপাতালে গিয়ে ব্লাড টেস্ট করে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। কিন্ত রোগীরা আসছে ৫ দিনের পর যার জন্য চিকিৎসকদের সমস্যার মুখে পরতে হচ্ছে রোগীকে নিয়ে। শ্রীরামপুরে শুধু ডেঙ্গু নয় ম্যালেরিয়াও দেখা যাচ্ছে। তাই জ্বর হলে হেলাফেলা করা যাবে না। জ্বর পুষে না রেখে হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। খাবার অরুচি থাকলে লিকুইড খাবার খেতে হবে। জল খেতে হবে বেশি করে। অনেক সময় দেখা যায় রোগীরা দেরী করে আসে, তখন আর কিছু করার থাকে না।
ডেঙ্গু মশা এডিস চেনার ক্ষেত্রে পতঙ্গবিদের সাহায্য নেওয়া হয়। কিন্তু পৌরসভা গুলোতে স্থায়ী কোনো পতঙ্গবিদ নেই। ডেঙ্গুর লার্ভা কোনটা তা জানতে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে একজন পতঙ্গবিদকে নিযুক্ত করা হচ্ছে।
পৌর এলাকার মানুষজন বলছে যারা শাসক তাদের ঘরেও ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে। তারমানে বোঝা যাচ্ছে তারা কতটা উদাসীন। সরকার মানুষের সচেতনতা বাড়াবে কিন্তু তা দেখা যাচ্ছে না।
পৌরসভার বাসিন্দাদের অভিযোগ, আবর্জনা সময়মত পরিষ্কার করা হয়না। অস্থায়ী ভ্যাটে আবর্জনার স্তুপ জমে থাকে। সব জায়গাতে ড্রেনের জল ঠিক মতন যায়না। পৌর কর্মচারীদের দেখাও যায়না সব সময়।

Comments :0

Login to leave a comment