মানুষ বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছেন শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের মেয়র, মেয়র পারিষদ সহ তৃণমূল কংগ্রেস দলের কাউন্সিলারদের। তৃণমূল কংগ্রেস দ্বারা রাজ্যের সরকার, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ, শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশন পরিচালিত হচ্ছে। প্রশাসন, পুলিশ সবই ওদের। তাহলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না কেন? শহর জুড়ে ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতিতে জবাব চাইছেন শিলিগুড়িবাসী। বৃহস্পতিবার ডেঙ্গু সচেতনতামূলক প্রচার কর্মসূচীতে সরাসরি রাস্তায় নেমে একথা জানালেন শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টচার্য। তিনি বলেন, কর্পোরেশনের এই ব্যর্থতার দায় মেয়রকেই নিতে হবে।
ডেঙ্গু নগরী হয়ে উঠেছে শিলিগুড়ি শহর। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যার্থ তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের বর্তমান বোর্ড। ডেঙ্গু মুক্ত শিলিগুড়ি গড়ে তুলতে সচেতন থাকুন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ করুন। ডেঙ্গু মোকাবিলায় আমরা সবসময় আপনাদের পাশে আছি। এদিন শহরবাসীর কাছে আবেদন জানিয়ে শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের ২২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির উদ্যোগে এবং প্রবীন সিপিআই(এম) নেতা অশোক ভট্টচার্যের নেতৃত্বে ডেঙ্গু সচেতনতা প্রচার অভিযান চলে। এদিন সকালে অরবিন্দ পল্লী মেইন রোড (সমর বিড়ি ফ্যাক্টরি মোড়)'র সামনে থেকে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার সহ পদযাত্রার মধ্য দিয়ে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই(এম) কাউন্সিলার দীপ্ত কর্মকার, শরদিন্দু চক্রবর্তী সহ এলাকার নাগরিকদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন রাস্তায় পরিক্রমা করে ডেঙ্গু সচেতনতা প্রচার অভিযান চালান প্রাক্তন মেয়র।
একই সঙ্গে এদিন ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় নাগরিক, পথচলতি সাধারণ মানুষ, স্কুল ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে ডেঙ্গু সচেতনতামূলক লিফলেট বিলি করা হয়েছে। ডেঙ্গু মোকাবিলায় কর্পোরেশনের ঢিলেঢালা মনোভাবের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে এদিনের এই কর্মসূচীতে ওয়ার্ডের বহু বাসিন্দারাই এগিয়ে এসেছেন।
শিলিগুড়িতে এই সময়কালে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও যেমন বাড়ছে। একই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যাও। ঘরে ঘরে ডেঙ্গুতে ভুগছেন সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের যে ধরনের ভূমিকা গ্রহণ করার কথা ছিলো সেই রকম কোন সদর্থক ভূমিকা নিতে পারছে না কর্পোরেশনের বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত বোর্ড। ‘ডবল ইঞ্জিন’ বলে নির্বাচনের আগে প্রচার করেছিলো তৃণমূল কংগ্রেস দল। কিন্তু নির্বাচিত হবার পর কর্পোশনের সমস্ত ধরনের পরিষেবা একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে।
এদিন ডেঙ্গু সচেতনতা প্রচার চলাকালীন অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় সমন্বয়, উদ্যোগ ও বর্তমান পৌর বোর্ডের সদিচ্ছার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। যে কারণে শিলিগুড়িতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এই সময়কালে শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২জন। এই পরিস্থিতি আগে কখনও শহরবাসী প্রত্যক্ষ করেননি। শহরবাসী আতঙ্কিত। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সাধারণ মানুষ এতোটাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন যে তাদের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা থাকছে না। ডেঙ্গু চিকিৎসা করাতে গিয়ে গরীব মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। পরামর্শ দেবার কিছুই নেই। তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের মেয়র ও মেয়র পারিষদরা সবটাই জানেন। কিন্তু তারা নিজেদের প্রাথমিক কাজগুলো না করে আমোদ প্রমোদের অনুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলেন। এটা পরিষ্কার ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তৃণমূল কংগ্রেস দলের রাজনৈতিক সদিচ্ছার ঘাটতি রয়েছে। সাধারণ কিছু সাবধানতা অবলম্বনের মাধ্যমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব ছিলো। নির্দিষ্ট সময়ে সঠিক কাজ করা হলে পরিস্থিতি এতোটা জটিল হতো না। তাই আমরা আমাদের মতোভাবে ডেঙ্গু সচেতনতার প্রচার কর্মসুচী করে চলেছি।
Comments :0