Jalpaiguri Morgue Disorder

জলপাইগুড়ি মর্গে বহাল অব্যবস্থা, পরিজনদের ছুটতে হচ্ছে শিলিগুড়ি

জেলা

Jalpaiguri Morgue Disorder মর্গে জমে দেহ, জলপাইগুড়ি হাসপাতালে ছড়িয়েছে দুর্গন্ধ। ছবি: দীপশুভ্র সান্যাল

জেলাশাসক নিজে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। তাতেও হাল ফেরেনি জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মর্গের। বহু অশনাক্ত মৃতদেহের শেষকৃত্য না হওয়ায় চরম অস্বাস্থ্যকর অবস্থা। ময়না তদন্তের কাজ বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসকরা। 

এই অবস্থায় শব ব্যবচ্ছেদের জন্য দেহ এখন পাঠানো শুরু হয়েছে প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ময়না তদন্তের জন্য এই বিশাল দূরত্ব পাড়ি দিতে হচ্ছে মৃতের পরিজনদের। অব্যবস্থার জন্য দায়ী করা হচ্ছে পৌর প্রশাসন এবং পুলিশকে।

সোমবার বিকাল থেকে ময়না তদন্ত বন্ধ করে দেন জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মর্গের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক এবং কর্মীরা। বুধবারও অচল অবস্থা বিদ্যমান জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে আসা দেহও পড়ে রয়েছে অশনাক্ত অবস্থায়। পচন ধরা মানবদেহ কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে ম্যাগট পোকাযার ফলে দুর্গন্ধে টেকা দায় মর্গ চত্বরে। এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোনো ভাবেই ময়না তদন্তের কাজ করা সম্ভব নয় বলে সোমবারই জানিয়ে দিয়ে ছিলেন বিভাগীয় চিকিৎসক।

সাধারণ মানুষের হয়রানি নিয়ে খবর হতেই টনক নড়ে ওঠেছিলো জেলা প্রশাসনেরমঙ্গলবার খোদ জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা জানিয়ে ছিলেন প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য।

তবে সেই চিত্র বুধবারও বদলালো না, জলপাইগুড়ি মর্গের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিদ্যমান। যার ফলে জেলা তথা পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে আসা ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে, আর এতেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে মৃত ব্যক্তির আত্মীয় স্বজনদের। 

পার্শ্ববর্তী জেলা কোচবিহারের হলদিবাড়ি মহকুমা থেকে আসা এক ভুক্তভোগী জানানপুলিশ বলছে বডি এখান থেকে নিয়ে যেতে হবে উত্তরবঙ্গ মেডিকেলেআমাদের কাছে টাকা পয়সা ও নেই কি করে যে কি করবো সেটাই বুঝতে পারছি না। 

মর্গ থেকে ছড়িয়ে পড়া দুর্গন্ধে যে শুধু মাত্র জেরবার চিকিৎসক কর্মীরা তাই নয় এলাকার ব্যবসায়ী বিপুল দাস জানান, ‘‘এই মর্গের দুর্গন্ধে এলাকায় টেকা যায় নাপেটের দায়ে এই অবস্থার মধ্যেই থেকেই ব্যবসা করতে হচ্ছে।’’ 

নিকট আত্মীয়ের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করাতে আসা সহরফ আলীর মুখেও শোনা গেলো একই দুর্দশার কথা। তিনি বলেন, ‘‘এই হাসপাতালে পোস্ট মর্টেম হবে না বলে দিলো, পুলিশ বলছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল নিয়ে যেতে হবে মৃতদেহ।’’

ঘটনার কথা স্বীকার করে জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট চিকিৎসক সুরজিৎ সেন জানান‘‘ক্ষমতার চেয়ে বেশি মৃতদেহ জলপাইগুড়ি মর্গে রয়েছে। শতাধিক মৃতদেহ মর্গে জমে রয়েছে। যেহেতু পুলিশ মর্গ, তাই পুলিশকে জানানো হয়েছে। এখন বাধ্য হয়ে মৃতদেহ উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে মৃতদেহ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আমাদের কিছু করার নেই।’’

Comments :0

Login to leave a comment