দীপশুভ্র সান্যাল
জাতি দাঙ্গায় বিধ্বস্ত মণিপুর। অসহিষ্ণুতার বাতাবরণে জ্বলছে রাজ্য, আক্রান্ত সাধারণ মানুষ। অসহিষ্ণুতার এমন ঘটনা রয়েছে সারা দেশে। এই সময়েই সম্প্রীতির অনন্য নজির মিলল জলপাইগুড়িতে।
ময়নাগুড়ির জল্পেশ মন্দিরে চলছে শ্রাবণী মেলা। দূর দূর থেকে আসছেন যাত্রীরা। পায়ে হেঁটে আসছেন। ক্লান্ত, তৃষ্ণার্ত পথশ্রমে। যাত্রীদের সহায়তা, সুশ্রূষার দায়িত্ব নিজেই নিয়েছেন মহম্মদ মইনুল। সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে। ব্যাথানাশক স্প্রে লাগিয়ে দিচ্ছেন যাত্রীদের। দিচ্ছেন ঠান্ডা পানীয়। পাশে পেয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন স্থানীয়কে।
রবিবার ও সোমবার সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি শহরের পাহাড়পুর মোড় এলাকায় শ্রাবণী মেলার কয়েক হাজার যাত্রীকে দিয়েছেন সহায়তা।
মইনুল বলছেন, ‘‘মানুষ তো মানুষেরই জন্য। জলপাইগুড়ি শহরে বড় হয়েছি। হিন্দু মুসলমানের বিভেদ করিনি।’’
জল্পেশের শিব মন্দিরে প্রতি বছর শ্রাবণী মেলায় বহু মানুষের সমাগম হয়। প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভুটান বা প্রতিবেশী রাজ্য বিহার থেকে গাড়িতে আসেন বহু দর্শনার্থী। বহু মানুষ আসেন হেঁটেও। মইনুল বলছেন, ‘‘যাত্রীদের একটু জল, ঠান্ডা পানীয়, ওষুধ দিয়ে সহায়তা করতে পেরে আমি আনন্দিত।’’
এই উষ্ণ অভ্যর্থনায় আনন্দিত মেলায় আগত দর্শনার্থীরাও।
বাংলায় তো বটেই, দেশেও এক ধর্মের দর্শনার্থীদের সহায়তায় অন্য ধর্মের মানুষ পাশে থাকেন বহু জায়গায়। সংস্কৃতির মধ্যে শিকড় ছড়িয়ে দেয় সহমর্মিতা। রাজনীতির ফয়দা তুলতে এই মানুষকে ধর্মের নামে, জাতের নামে ভাঙার চেষ্টাও হয়। এই ভারতে এখন তা চোখে পড়ছে প্রতিদিন। তবু হেরে যায়নি সম্প্রীতি। জল্পেশ মেলাও তা দেখাচ্ছে।
Comments :0