পুজোয় অনুদান বা ইমামদের ভাতা, এ সব কেউ চায়নি। আগেও সরকারি অনুদানের দরকার পড়েনি। যেখানে দরকার, মানুষ চাইছেন, সরকারি অর্থ ব্যয় হওয়া উচিত সেখানে। এই ভাতা করা হয়েছে আরএসএস’র মুখে বুলি জোগানোর জন্য।
ইমাম ভাতা, পুরোহিতদের ভাতা থেকে পুজো কমিটিকে সরকারি অর্থ দেওয়ার প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন মহম্মদ সেলিম। সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক বলেছেন, ‘‘এই ভাতা আসলে লোক দেখানো। করাই হয়েছে যাতে আরএসএস’র ‘টকিং পয়েন্ট’ হয়। মুঘল আমলে, সুলতানি আমলে মসজিদ ছিল না? তখন কি সরকারি ভাতা দেওয়ার দরকার পড়ত?’’
সেলিম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলে ছিলেন ইমাম মোয়াজ্জেমদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। ছেলেমেয়েদের স্বনির্ভরতার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। তা কেন দেওয়া হলো না?’’ সেলিমের ব্যাখ্যা, ‘‘আসলে গোটা বিশ্বে এমন করা হয়েছে যে কিছু বিলি বন্দোবস্ত করে নিজের টিকে থাকার চেষ্টা করা। তোমাকে আমি দিলাম, তুমি আমাকে দাও। কিন্তু এর মধ্যে কোথাও নাগরিকের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করা।’’
সোমবার নেতাজী ইন্ডোরে ইমাম, মোয়াজ্জেম ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরোহিত ভাতাও বাড়ানোর ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার বলেছেন পুজো কমিটিকে অনুদান বাড়ানোর ঘোষণা করেছেন। ধর্মীয় পরিচিতির বিচারে অনুদানে এই রাজনীতিকে বিজেপি এবং তৃণমূলের প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতা আখ্যা দিয়েছে সিপিআই(এম)। রাজ্যে ধর্মীয় মেরুকরণের প্রয়াসে প্রতিবাদ জানিয়েছে সিপিআই(এম)।
মঙ্গলবার কলকাতায় মুজফ্ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁকে ওয়াকফ বোর্ড নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। সেলিম বলেন, ‘‘ওয়াকফের সম্পত্তি বেচে ফাঁকা করে দিচ্ছে। এর আগে সংসদীয় কমিটির রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল যে ওয়াকফের সম্পত্তি ঠিক করে ব্যবহার করলে তা থেকেই সংখ্যালঘুদের শিক্ষা, প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা ওয়াকফ থেকেই আসতে পারে।’’ তিনি বলেন, এই সরকার আসলে সংখ্যালঘু উন্নয়নে ব্যর্থ।
দুর্নীতি প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস, যার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের লোকেরা যুক্ত, তা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছি অনেক আগে। আমাদের মানহানির চিঠি ধরানো হয়েছিল। ইডি সংবাদমাধ্যমে বলছে অথচ আদালতে জানাচ্ছে না, শাস্তির ব্যবস্থা করছে না। বিদেশী মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া করার মতো কারসাজি মেক্সিকো, ইতালির মাফিয়া বা ড্রাগচক্রের চাঁইরা করে থাকে। টাকা পাচারের এসব কৌশল এ রাজ্যের মানুষের জানা ছিল না। এখন জানা যাচ্ছে। আবার তল্লাশি চললেই কারও কারও প্যানিক অ্যাটাক হয়ে যাচ্ছে।’’
সেলিম জানান যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখবে সিপিআই(এম)। মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্য, কর্মসংস্থানের সঙ্গে এই লড়াই চলবে। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের ছেলেরা অন্যত্র চলে যাচ্ছে। আরেকদিকে লুটের টাকা বিদেশে জমা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে লড়াই। বিলি বন্দোবস্ত করে তা চাপা দেওয়া যাবে না।’’
সেলিম বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে ধস নেমেছে। এত করেও বোর্ড গঠন ঠেকাতে পারছে না।’’ উল্লেখ্য এদিনই মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের ৭টি পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গড়েছেন বামপন্থী এবং কংগ্রেস প্রার্থীরা।
Comments :0