নতুনপাতা
মণ্ডা মিঠাই
হারিয়ে যাওয়া খেলাগুলি
উৎসব দেব
নতুন বন্ধু
মনে আসা না আসা একটি লাইন ফিরে আসে ‘কুমির তোর জলে নেমেছি ...’ । হয়তো খেলতে নামলে কিছুটা খেলতে পারবো সব টুকু মনে নেই । হয়তো পরের লাইনগুলি এই রকম – ‘আন্তা ভাতি পায়ের বাতি, পা ধুয়ে নে, জল নিবি না ডাঙা নিবি, তা বলে দে ..’ । তবে আজও হয়তো অজপাড়া গাঁয়ে ‘কুমিরডাঙা’ খেলে আমারই মতো ছেলেরা কিন্তু গ্রাম শহরের মাঝামাঝি আমরা অনেকেই ভুলে গেছি এই রকম অনেক খেলা।
ডাং-গুলি কখনও খেলিনি, খেলতে দেখিওনি, শুনেছি পেয়ারা গাছের ডাল দিয়ে নাকি ডাং ও গুলি খুব ভাল তৈরি হয়। গ্রাম বাংলার অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা ছিল ডাং-গুলি হয়তো আজও লোকমুখে তার রেশ রয়ে গেছে। কিন্তু খেলাটা হারিয়ে গেছে কারণ আমাদের পোশাক-আশাক, চাল-চলন, আদপ-কায়দার সাথে ডাং-গুলি খেলাটা কি রকম ছোট লোকের খেলা হয়ে গেছে।
এখন খেলতে গেলেই কেউ এসে বলবে যে তোমরা ভিডিও গেমস না খেলে অসভ্যের মতো ডাং-গুলি খেলছো! এ এক বিচিত্র সময় যখন পুকুর ঘাটে স্নান না করে বাথরুমে স্নান করলে গুডবয় বা অ্যারিস্ট্রোক্রেট। আর স্কুলের প্রোজেক্টে মাসাদুর রহমান বৈদ্যের ছবি কেটে লাগাব, ওর সম্পর্কে লিখব অথচ সাঁতার কাটবো না।
‘ইকির-মিকির-চাম-চিকির ...’ আমরা কবে শেষ খেলেছি বলতে পারবো না। হয়তো সমস্ত ছড়াটাও বলতে পারব না। কিন্তু, WWE- র মারপিট দেখলেও কেউ কিছু বলেনা। এইভাবেই আমরা নিজেদের খেলা ধুলো না খেলে অন্য খেলায় মেতে উঠেছি।
যদিও গলিতে বা ছাদে আমরা সাতচাড়া খেলি। অনেকেই সে খেলা খেলতে চায়না কারণ এ নাকি গেঁয়ো খেলা! এভাবে হারিয়ে গেছে ‘রাজার বাড়ির গোল্লা ছুট’, ‘দাড়িয়া বাধা’, ‘হাডুডু’। শেষ কবে কোথায় কাউকে খেলতে দেখেছি কাঁচের গুলি নিয়ে মনে পড়ে না। তেমনই মনে পড়ে না – বন্ধুরা কবে এক্কাদোক্কা, লাফদড়ি কিংবা ‘কানামাছি ভোঁ ভোঁ যাকে পাবি তাকে ছো...’ খেলেছি। জীবনকে এখন আর কিছুই ছোঁয় না।
Comments :0