নীলাদ্রি সেন
আবার ফিরিয়ে আনা হলো ছ’বছর আগের সেই জঘন্য স্বৈরাচারী কার্যকলাপের স্মৃতি জম্মু-কাশ্মীরে। ১৩ জুলাইয়ের শহীদ দিবসে শহীদদের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে দেওয়া হলো না। বাসভবনের গেটে তালা লাগিয়ে গৃহবন্দি করে রাখা হলো সিপিআই(এম) বিধায়ক ইউসুফ তারিগামি, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিসহ আরও অনেককে। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাকেও শ্রদ্ধা জানাতে দেওয়া হয়নি। এমনকি ইতিহাস অস্বীকার করে ১৩ জুলাই জম্মু-কাশ্মীরে শহীদ দিবসকে সরকারি ছুটির তালিকা থেকেও বাদ দিয়ে দেওয়া হলো। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে মোদী সরকার রাজ্যকে দু’টুকরো করে কেন্দ্রশাসিত রাজ্যে পরিণত করবার পর এভাবেই জম্মু-কাশ্মীরে গণতন্ত্র প্রতি মুহূর্তে আক্রান্ত হয়ে চলেছে। ব্রিটিশ শাসনে ১৯৩১ সালে কাশ্মীরের স্বাধীনতার জন্য যাদের রক্ত ঝরেছিল সেইসব শহীদরা জাতিতে মুসলিম হওয়াতেই নাকি আরএসএস-এর নির্দেশে এই চরম সাম্প্রদায়িক ও স্বৈরাচারী নির্লজ্জ ভূমিকা পালন করল মোদী সরকারের অনুগত কেন্দ্রশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রশাসন।
আমাদের সংবিধানে থাকা ৩৭০ ধারা ছ’বছর আগে রক্তাক্ত হয়েছিল মোদী সরকারের হাতে। ৩৭০ ধারা বাতিল করা হয়েছিল রীতিমতো ফ্যাসিস্ত কায়দায় শুধুমাত্র আরএসএস-এর এজেন্ডাকে বাস্তবায়িত করতে। এই ধারা বাতিলের আগে গৃহবন্দি ও গ্রেপ্তার করা হয় দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, সিপিআই(এম) নেতা ইউসুফ তারিগামি সহ বিরোধী দলের সমস্ত সদস্যকে। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট সংযোগ। সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইনকে এমন করে তোলা হয়েছে, তাতে যখন যাকে মনে করবে সন্ত্রাসবাদী বলে দাগিয়ে জেলে ভরা যাবে। তাকেই প্রমাণ করতে হবে যে সে সন্ত্রাসবাদী নয়। এইসব যখন করা হচ্ছে তখন সংসদ খোলা রয়েছে। অথচ মোদী সরকার সংসদ এড়িয়ে ফ্যাসিস্ত মনোভাব দেখিয়ে মন্ত্রীসভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে রাষ্ট্রপতির সম্মতিতে ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অধিকারকে কেড়ে নিয়ে নতুন আইন লাগু করে দেয়। এইসঙ্গে ৩৫(এ) ধারা বাতিল করে কাশ্মীরের জমি অকাশ্মীরিদের হাতে তুলে দেওয়া সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। লাদাখকে কাশ্মীর থেকে ছেঁটে ফেলে তাকে পুরোপুরি কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। জম্মু-কাশ্মীরকে দু’টুকরো করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করা হয়। যে শর্তে জম্মু-কাশ্মীর অতীতে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল মোদী সরকার তাকে পুরোপুরি অস্বীকার করে এইভাবে কাশ্মীরের মানুষের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করে। যার ভয়াবহ মাশুল গুনে চলেছে জম্মু কাশ্মীর।
নেই ৩৭০ ধারা, কিন্তু বেড়েছে অস্থিরতা।
এই ধারাকে বাতিল করবার সময় মোদী সরকারের দাবি ছিল জম্মু কাশ্মীরকে ‘স্বাভাবিক’ করে তুলতেই নাকি সরকারের এই পদক্ষেপ! তবে বাস্তবের সঙ্গে এই দাবি একটুও মেলে না। ৩৭০ ধারা বাতিল করবার আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ পুলওয়ামায় সন্ত্রাসবাদীদের হাতে ৪০ জন জওয়ানের হত্যার পর লোকসভার ভোট হয়। নিহত জওয়ানদের ছবি দেখিয়ে সহানুভূতির পাখায় ভর করে ক্ষমতায় আসে মোদী সরকার। তার এক বছরের মাথায় জম্মুর ডোডাকে সন্ত্রাসমুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়। অথচ জুলাইতে সন্ত্রাসবাদীরা ডোডাতে ৪জন সেনা জওয়ান ও ১জন পুলিশকর্মীকে হত্যা করে। এই জুলাইতেই জম্মুর কাঠুয়াতে সেনাবাহিনীর কনভয়ে হামলায় ৫ জন জওয়ান নিহত হন। তার আগে জুনে জম্মুর রিওয়াজিতে দর্শনার্থী বোঝাই একটি বাসে হামলায় বাসটি খাদে পড়ে গেলে ৯ জন পর্যটক প্রাণ হারান। গত বছরের অক্টোবরে গান্ডেরওয়ালে একটি নির্মীয়মাণ টানেলে হামলা চালিয়ে সন্ত্রাসবাদীরা ৬ জন পরিযায়ী শ্রমিক ও ১ জন চিকিৎসককে হত্যা করে। একইসময়ে গুলমার্গে সেনা কনভয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২ জন সেনা জওয়ান ও ২ জন মালবাহক নিহত হন। আর এই বছরের ২২ এপ্রিল পহেলগামের বৈসরন ভ্যালিতে গুলিতে ঝাঁজরা করে দেওয়া হলো ২৬ জন নিরীহ মানুষকে যার বেশির ভাগটাই পর্যটক। ৩৭০ ধারা বাতিল পরবর্তী সময়ের এইসব ধারাবাহিক সন্ত্রাসবাদী হামলা প্রমাণ করছে জম্মু কাশ্মীর ‘স্বাভাবিক’ করে তোলবার মোদী সরকারের দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
স্বায়ত্তশাসনের অধিকার
স্বাধীন ভারতে জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অংশ হয়। মাউন্টব্যাটনের পরিকল্পনার সময়ে সামন্তপ্রভু ডোগরা বংশের রাজা হরি সিং অবশ্য ভারত, পাকিস্তান কোনপক্ষেই না গিয়ে জম্মু কাশ্মীর স্বাধীন রাজ্যের পক্ষে ছিলেন। পরে ২৬ অক্টোবর ১৯৪৭ তিনি ভারত সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেন। জম্মু-কাশ্মীর ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়। এই চুক্তির ৪ নম্বর ধারায় লেখা ছিল– “আমি (রাজা হরি সিং) এই আশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছি যে, এই রাজ্যে ভারত সরকার তার কোনও আইন চালু করতে চাইলে অথবা প্রশাসনিক দিক থেকে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে ... তা কার্যকর করবে এই রাজ্যের শাসক।” চুক্তি অনুসারে ভারত সরকারের দায়িত্বে ছিল শুধুমাত্র জম্মু-কাশ্মীরের প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও যোগাযোগ। পরবর্তীকালে সংবিধানের ৩০৬-এ ধারা সংযুক্তির মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরের অভ্যন্তরীণ স্বায়ত্তশাসন মেনে নেওয়া হয়। ১৯৫২ সালের ২৪ জুলাই জওহরলাল নেহরু ও শেখ আবদুল্লার মধ্যে স্বাক্ষরিত দিল্লি চুক্তিতে রাজা হরি সিং-এর শর্ত অক্ষুণ্ণ রেখে ৩০৬ ধারা ৩৭০ ধারায় পরিবর্তিত হয়, যেটি জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন রাজ্যের স্বীকৃতি।
আরএসএস-এর বিশ্বাসঘাতকতা
তৎকালীন হিন্দু মহাসভা পরিচয় গোপন করে জম্মুতে কাজ শুরু করে। এরা আগাগোড়া জম্মু-কাশ্মীরের ভারতে যুক্ত হবার বিরোধিতা করে এসেছে। ১৯৪৭ এর জুলাই মাস পর্যন্ত একটানা এই বিরোধিতা বজায় ছিল। তারপর জম্মু-কাশ্মীরে আরএসএস-এর সঙ্ঘচালক, জনসঙ্ঘের সভাপতি প্রেমনাথ ডোগরা ভারতের অংশ নয়, আজাদ কাশ্মীর এই প্রচারের নেতৃত্ব দেন। মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকাণ্ডের পর ওখানে আরএসএস নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ১৯৪৮ এর শেষদিকে ছদ্মবেশী আরএসএস সাম্প্রদায়িকতার ডিত্তিতে জম্মু-কাশ্মীরকে ভাগ করবার দাবি তোলে। ১৯৪৯-এর মার্চে গড়ে তোলা হয় প্রজা পরিষদ। যার পরিচালনায় থাকে পূর্বতন আরএসএস-এর নেতা কর্মীরাই দিল্লি চুক্তির পর স্বায়ত্তশাসিত কাশ্মীরে সাংবিধানিক পরিষদের পক্ষ থেকে যখন Land Compensation Committee এবং Basic Principles Committee – র রিপোর্টের ভিত্তিতে যথাক্রমে বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি ব্যবস্থার উচ্ছেদ এবং বংশানুক্রমিক শাসন ব্যবস্থার উচ্ছেদের সুপারিশ জম্মু-কাশ্মীরে কার্যকরী করবার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তখন প্রজা পরিষদের আড়ালে থাকা আরএসএস-এর পক্ষ থেকে তা বাস্তবায়িত করতে বাধা দিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখানো হয়।
অভ্যন্তরীণ স্বশাসন এবং রাজ্যের উন্নয়নে ৩৭০ ধারা জম্মু-কাশ্মীরকে সামন্ততন্ত্র বিরোধী পদক্ষেপ করবারও ক্ষমতা প্রদান করে। প্রজা পরিষদ এর বিরোধিতা সমানে চালিয়ে যেতে থাকে। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা জনসঙ্ঘ ও হিন্দু মহাসভা এব্যাপারে প্রজা পরিষদকে ক্রমাগত মদত দিয়ে চলে। প্রজা পরিমদের আড়ালে থাকা আরএসএস-এর বিষাক্ত কর্মকাণ্ড জম্মু-কাশ্মীরের ঐক্য ও শান্তির পরিবেশকে সেদিন ভেঙে চুরমার করে দেয়। যার পরিণামে উপত্যাকাজুড়ে সাম্প্রদায়িক বিভেদ মাথাচাড়া দেয়। ধর্মান্ধ ও প্রতিক্রিয়ার শক্তিগুলো এক হয়ে যায়। পালটা মুসলিম ধর্মীয় মৌলবাদের ওপর ভিত্তি করে কাশ্মীরে রাজনৈতিক কনফারেন্স নামে পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক দল গড়ে ওঠে। এইভাবে জম্মু-কাশ্মীরকে সেদিন সন্ত্রাসবাদের পথে ঠেলে দেয় আরএসএস, যাদের রাজনৈতিক শক্তি ভারতীয় জনতা পার্টি। এরাই ৩৭০ ধারা বাতিল করে দিয়ে আরএসএস-এর মনোবাঞ্ছা পূরণ করে জম্মু-কাশ্মীরকে সন্ত্রাসবাদীদের আঁতুড়ঘরে পরিণত করেছে।
পহেলগাম ও ভারত পাকিস্তান সংঘর্ষ
পহেলগামের সন্ত্রাসবাদীরা আজও অধরা। তাদের পাকড়াও করে বিচার ও শাস্তির জন্য মোদী সরকারের কোনও উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। কারণ এই পথে হাঁটলে পহেলগামে সেদিনের নিরাপত্তায় চূড়ান্ত গাফিলতির ছবিটা ফাঁস হয়ে পড়বে। এমনকি যে আগাম সন্ত্রাসবাদী হানার সম্ভাবনার খবরের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জম্মু যাত্রা স্থগিত হয়ে গিয়েছিল, তার পরেও পহেলগাম কীভাবে পর্যটকদের জন্য খুলে রাখা হয় সে প্রশ্নও সযত্নে এড়িয়ে চলেছে মোদী সরকার। আর এইসব চাপা দিতেই তড়িঘড়ি ভারতের স্থল, বায়ু ও বিমান বাহিনীকে দিয়ে ‘অপারেশন সিন্দুর’র নামে দেশজুড়ে তুলে দেওয়া হলো দেশপ্রেমের জিগির। এর আগে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে সম্মুখ সমর হয়েছে চারবার। প্রথম ১৯৪৭– ৪৮ সাল, দ্বিতীয় ১৯৬৫ – ৬৬ সাল, তৃতীয় বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সাল এবং চতুর্থ ১৯৯৯ সালের মে – জুলাই, যেটাকে কারগিল সংঘর্ষ বলা হয়। আর পঞ্চম সংঘর্ষ হলো পহেলগামকে কেন্দ্র করে ৭–১০ জুলাই, ২০২৫। এতবার সংঘর্ষ বেঁধেছে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরে শান্তি ফিরিয়ে তাকে মোদী সরকারের দাবিমতো ‘স্বাভাবিক’ করে তোলা যায়নি। কারণ শুধু পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষ করে কোনোদিন জম্মু-কাশ্মীরে শান্তি ফেরানো যাবে না। কাশ্মীর নিয়ে সরকারি অর্থনৈতিক বঞ্চনা ও অনুন্নয়নের অভিযোগ আজও ওঠে। বেকারত্ব সেখানে ক্রমশ মাথাচাড়া দিয়ে চলেছে। কোনও ভারী শিল্প জম্মু-কাশ্মীরে গড়ে ওঠেনি। কাশ্মীরে স্বায়ত্তশাসন বজায় রেখে সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে মোদী সরকার যেভাবে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছে, তাতে ওখানকার মানুষের ক্ষোভ ও বঞ্চনা বাড়তে বাধ্য। যা যুব সমাজকে অনুন্নয়ন ও বেকারির কারণে আরও বিপথগামী করে তুলবে।
পরিচিতিসত্তা ফিরে পেতে চায় কাশ্মীর
‘ওয়েডস অব দি কিঙ্গস’, বাংলায় ‘রাজতরঙ্গিনী’ যার লেখক প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ কলহন। এতে লিপিবদ্ধ রয়েছে কাশ্মীরের তিন হাজার বছরের ইতিহাস। কাশ্মীর মানে একাধারে শৈব দর্শনের জন্মস্থান। বৌদ্ধধর্মের বিস্তারের কেন্দ্র এবং ইসলামি সুফি দর্শনে প্রভাবিত। এই তিন ধর্ম কাশ্মীরের আত্মার সঙ্গে মিশে রয়েছে। জন্ম দিয়েছে কাশ্মীরিয়ৎ দর্শনের। মানে কাশ্মীরি পরিচিতিসত্তা। কাশ্মীরিয়ৎ এর মধ্যে সেখানকার অধিবাসীরা খুঁজে বেড়ান কাশ্মীরের স্বতন্ত্র মর্যাদা। স্বাধীন ভারতে আজও যে আকাঙ্ক্ষা রয়ে গিয়েছে অপূর্ণ। ভারত শুধুমাত্র কাশ্মীর নিয়ে পাঁচটি চুক্তি করেছে, কিন্তু বাস্তব হলো একমাত্র প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্বীকৃতি ও তার আইনি মান্যতা দেওয়া ছাড়া এইসব চুক্তির কোনও ফলাফল মেলেনি। তার জায়গায় বার বার কাশ্মীরের অস্মিতায় আঘাত করা হয়েছে। পরিচিতি সত্তা ফিরে পাবার জন্য কাশ্মীরবাসীর ক্ষোভের আগুনের উত্তাপ তাই দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। ৩৭০ ধারা বাতিল করে দিয়ে কাশ্মীরের মর্যাদা ও স্বাতন্ত্র্যকেই শুধু আঘাত করা হয়নি সেইসঙ্গে গণতন্ত্রের অমানবিক কণ্ঠরোধ করেছে মোদী সরকার। চালানো হচ্ছে আরএসএস–বিজেপি’র নগ্ন স্বৈরশাসন গোটা উপত্যাকাজুড়ে। হিন্দু ও ইসলামি উভয় মৌলবাদ এদের ছত্রছায়াতেই জম্মু-কাশ্মীরে অবাধে শাখা প্রশাখা ছড়াচ্ছে। জম্মু-কাশ্মীরকে স্বাভাবিক করে তুলতে সংবিধানের ৩৭০ ধারার মধ্যে ছিল বিচ্ছিন্নতা, অস্থিরতা কাটিয়ে উঠে সেখানকার মানুষের মধ্যে আস্থা ভরসা জাগিয়ে তোলবার ভরপুর উপাদান। ছিল উপত্যকায় গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠার দিকনির্দেশ। ছিল কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে সামগ্রিক উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করে তোলবার উপায়। এতে সন্ত্রাসবাদী শক্তিগুলো ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ত। তাই অকপটে বলা যায় যে ৩৭০ ধারা পুনরায় সংবিধানে ফিরিয়ে আনা ছাড়া কাশ্মীরের মানুষের আস্থা ফেরানো যাবে না।
Comments :0