পেরুর রাষ্ট্রপতি পেড্রো ক্যাস্তিলোকে কারারুদ্ধ করার সমালোচনায় মুখর হলো ভেনেজুয়েলা। ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপতি নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, ‘‘২০২১-এ ক্যাস্তিলো নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। এবার সংসদীয় অভ্যুত্থান তাঁকে কারাবাসে পাঠালো।’’
ক্যাস্তিলোর কারাবাসের নির্দেশের বিরুদ্ধে পেরুর বিভিন্ন অংশ রাস্তায় নেমেছে। ভেনেজুয়েলার সমালোচনা প্রতিবাদে বাড়তি মাত্রা জোগাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অংশ। পেরুর একটি আদালতে ক্যাস্তিলোর গ্রেপ্তারি সংক্রান্ত বিশদ জানানোর আবেদন খারিজ করা হয়েছে। তিনি কোথায়, কোনধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানতে চাওয়া হয় আবেদনে। গ্রেপ্তারিকে বেআইনি এবং অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না কেন জানতে চাওয়া হয়। লিমার একটি আদালত সেই আবেদন খারিজ করে আবেদনকারীদের বলেছে আরও নির্দিষ্ট নথি জমা দিতে হবে। এই রায়ের ফলে ক্যাস্তিলোর মুক্তির সম্ভাবনা আপাতত নেই বলে জানাচ্ছে লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
ক্যাস্তিলোর বিরুদ্ধে শাস্তিগ্রহণ প্রক্রিয়ার সুপারিশ করে পেরুর কংগ্রেস। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। সংবিধান বিশারদরা বলছেন, রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে এমন দুর্বল ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। সংবিধানে সেই সংস্থান নেই। পর্যাপ্ত আলোচনার দরকার ছিল। উগ্র দক্ষিণপন্থী কেইকো ফুজিমোরিকে হারিয়ে ২০২১-এ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন ক্যাস্তিলো। তাঁর বামঘেঁষা নীতি, সামাজিক সুরক্ষা, পরিবেশ রক্ষার পক্ষে অবস্থানে ক্ষোভ রয়েছে উগ্র দক্ষিণপন্থী শিবিরে। পুলিশ এবং সামরিক বাহিনী, জাতীয় আইনসভা কংগ্রেসে উগ্র দক্ষিণপন্থীদের প্রভাব বেশি।
গত বুধবার থেকেই পেরুতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ক্যাস্টিলোর মুক্তি এবং আইনসভা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে রাস্তায় নামেন। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে বরখাস্ত করার আইনসভার আদেশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে জনতা। গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক ঘটনা আগে কয়েক ঘন্টা আগে, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার এবং একটি ‘ব্যতিক্রমী সরকার’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করেন। সশস্ত্র বাহিনী এবং জাতীয় পুলিশ এই পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে সমর্থন করেনি। ক্যাস্টিলো এখন বিশেষ অপারেশন দপ্তরে (DIROES) আটক। লিমা এবং আরেকুইপা, ট্রুজিলো, আয়াউচো, হুয়াঙ্কাভেলিকা, হুয়ানকাইও, পুনো এবং কাজামারকার মতো অঞ্চলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
শনিবার পেরুর সামাজিক সংগঠনগুলির বিশেষ জাতীয় পরিষদ এককক্ষ বিশিষ্ট সংসদ বাতিল করে জাতীয় গণপরিষদ গঠনের প্রক্রিয়া শুরুর আহ্বান জানিয়েছে। এই জাতীয় পরিষদ ক্যাস্তিলোর অবিলম্বে মুক্তির জন্য সমর্থন জানিয়েছে। এই পরিষদের প্রায় ২০০ জন প্রতিনিধি ১৫ ডিসেম্বর একটি জাতীয় ধর্মঘটের আহ্বান অনুমোদন করেছে।
ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপতি নিকোলাস মাদুরো পেরুতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট পেড্রো ক্যাস্টিলোর বিরুদ্ধে সংসদীয় অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, পেরুর জনগণ রাষ্ট্রপতি পেড্রো ক্যাস্তিলোর মতো একজন শিক্ষককে নির্বাচিত করেছিলেন। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিরোধীরা তাঁকে স্বীকৃতি দিতে চায়নি। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে সংসদীয় অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র শুরু হয়।
Comments :0