ব্রাজিল কোচ তিতে মনে করছেন তাঁর দলই ফেভারিট হিসাবে কাতারে যাচ্ছে। মনে করছেন আরও অনেকেই। যেমন বার্সেলোনা কোচ জাভি। ব্রাজিলকে ফাইনালে দেখা যাবেই ধরে নিয়েই গণনা শুরু করেছেন ফুটবল পর্যবেক্ষকরা। ২০০২-এর পরে ব্রাজিল বিশ্বকাপ জেতেনি। সেবার ছিল পঞ্চমবার। দু’দশক খরায় কেটেছে। কিন্তু এবারের ব্রাজিল অনেক ধারালো, অনেক বেশি বিকল্প নিয়ে মাঠে নামছে।
ব্রাজিলই একমাত্র দেশ যারা বিশ্বকাপের সবকটি আসরে হাজির ছিল। মোট ২২৯ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা দেশও বটে। জার্মানি পিছিয়ে মাত্র তিন গোলে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খেলার ধরন বদলেছে। ইউরোপের ক্লাবে খেলতে খেলতে ‘মৌলিক ছন্দ’ হারিয়েছে লাতিন আমেরিকার এই দল, এমনও সমালোচনা আছে। ব্রাজিলের এবারের অভিযান শুরুর আগেও দলের প্রাক্তন খেলোয়াড় রবার্তো কার্লোসের আক্ষেপ, ‘আমাদের খেলায় যোগো বোনিতার ছন্দ নেই। শুধু যে গোলই করতাম আমরা তা নয়, রক্ষণও করতাম অনেক সুসংবদ্ধ। এখন সেই শৈলী নেই।’
৩০ বছরের নেইমারের সামনে তৃতীয় সুযোগ। ২০১৪, ২০১৮-তে পারেননি। ২০১৪-তে আঘাত পাবার পরে ভেঙ্গে পড়েছিল পুরো দলই। নেইমার এখন বিশ্বের সর্বকালের সেরাদের তালিকায় অন্যতম। তাঁর ওপরে অনেক কিছুই নির্ভর করছে। কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে ১২০ ম্যাচ খেলা নেইমারের সঙ্গেই বিশ্বের চোখ ১৫ ম্যাচ খেলা ভিনিসিয়াস জুনিয়রের দিকে। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে বিধ্বংসী ভিনিসিয়াস উভয় প্রান্তেই খেলতে পারেন, গতিশীল, দর্শকদের কাছে ব্রাজিলীয় ফুটবলের স্পর্শের উদাহরণও। এই দু’জন একসঙ্গে জ্বলে উঠতে পারলে বিপক্ষের রক্ষণ ত্রাস পড়বে। তাঁদের সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের এই মরশুমের চমক অ্যান্টনি। বাঁ পায়ের প্লেয়ার, খেলেন ডান দিকে। ক্রিকেটের স্পিনারদের মতো বল ঘোরাতে পারেন, এমনকি বল নিয়ে তাঁর নিজেরই ‘স্পিন’ বিতর্ক তুলেছে। অযথা সময় নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগের জবাব দিয়েছেন গ্যারি লিনেকার। বলেছেন, বেশ করেছে ও ওভাবে খেলছে, ওটাই ওর খেলার মজা। গ্যাব্রিয়েল জেসুস, গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলির বাইরে তিতে বেছেছেন ব্রাজিলের বাইরে কম পরিচিত ফ্ল্যামিঙ্গোর পেড্রোকে। কোপা লিবার্তাদোরেসে ১৩ ম্যাচে ১২ গোল করা পেড্রো ফর্মের শিখরে রয়েছেন। হয়ত ব্রাজিলের প্রথম একাদশে তাঁকেই দেখা যাবে। গত চার বছরে জাতীয় দলের হয়ে নেইমারের পরে সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন রিচার্লিসন। অসাধারণ সব ফিনিশের জন্য অনুরাগীদের চোখের মণি। রাফিনহা, রডরিগোকেও নিয়েও তিতে বার্তা দিয়েছেন, তাঁর দল আক্রমণমুখী ফুটবলই খেলবে।
বিস্ময় বরং রক্ষণে ৩৯ বছরের দানি আলভেস দলে ডাক পাওয়ায়। সেরা সময় পেরিয়ে আসা আলভেসকে তিতে রেখেছেন প্রয়োজনে দলকে সুবিন্যাস্ত করার জন্য। জুভেন্টাসের ডানিলোই রাইট ব্যাকে এক নম্বর পছন্দ হবেন। রক্ষণে মার্কুইনহোস, মিলিতাও, সান্দ্রো ছাড়াও রয়েছেন অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা। বয়স হয়েছে তাঁরও। কিন্তু সিলভা এখনও যেমন তীক্ষ্ণ, তেমনই পরিশ্রমী।
মাঝমাঠে ক্যাসিমিরো, ফ্রেড, ফেবিনহো, পাকুয়েতা পরিচিত মুখ। তিতের বাজি ব্রুনো গুইমারেস। নিউ ক্যাসলের এই মিডফিল্ডার এই মরশুমে প্রিমিয়ার লিগে দারুণ খেলছেন। কুটিনহোর ফাঁক তাঁকে দিয়েই পূরণের চেষ্টা করবেন তিতে।
Comments :0