এক দিন করে শুনানি হচ্ছে, আর সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মুখবন্ধ খামে আর জি করের ঘটনা নিয়ে তদন্তের গতিপ্রকৃতির রিপোর্ট জমা দিচ্ছে। কী থাকছে সেই রিপোর্টে, না শুনানিতে বলছেন সিবিআই’র আইনজীবী, না জানাচ্ছেন বেঞ্চের বিচারপতিরা। বৃহস্পতিবার আর জি কর মামলার সপ্তম শুনানিতেও তারই পুনরাবৃত্তি হলো শীর্ষ আদালতে। এদিনও রিপোর্ট দেখে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ শুধু তদন্ত চালিয়ে যেতে বলেছে সিবিআই-কে। এদিন ছিল এই মামলার সপ্তম শুনানি। হাজারো জুনিয়র ডাক্তার প্রতিদিন দেখছেন কিভাবে সমাজে দুষ্কৃতীরা বাহবা পাচ্ছে। এদিন দুপুরে ঝাড়গ্রামের একটি অতিথিশালার ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের রেসিডেন্ট চিকিৎসক, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তনী ডাঃ দীপ্র ভট্টাচার্য (৩২)’র দেহ। তাঁর দেহের পাশে একটি ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জ পাওয়া গিয়েছে। চিকিৎসকের এই রহস্য মৃত্যু নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা ঝাড়গ্রাম জুড়ে। শুক্রবার ময়না তদন্ত হবে মৃত চিকিৎসকের।
গত কয়েকদিন ধরেই চূড়ান্ত মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ডাঃ দীপ্র ভট্টাচার্য। তাঁর সহকর্মী অন্যান্য চিকিৎসকরার বিষয়টি লক্ষ্যও করেছিলেন। তাঁর বাড়ি থেকেও ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না বলে পরিবারের বক্তব্য। শেষে খবর মেলে তিনি যেখানে থাকতেন, অর্থাৎ ঘোড়াধরা এলাকার একটি বেসরকারি অতিথিশালার সেই ঘরে তাঁর অচৈতন্য দেহ পড়ে রয়েছে। সেখান একটি সিরিঞ্জও উদ্ধার হয়। প্রঙ্গত ওই হোটেলের পাঁচতলার ওপরে কয়েকটি ঘরে অনেকেই থাকতেন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঠিক কি কারণে চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে তা এখনও সঠিকভাবে জানা না গেলেও, প্রাথমিকভাবে অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। এদিন দুপুর গড়ালেও তিনি ঘরের বাইরে না আসায় এবং ডাকাডাকিতে কোনো সারা না মেলায় অতিথিশালা থেকে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। দরজা ভেঙে দেখা যায় চিকিৎসকের দেহ বিছানায় পড়ে আছে।
পুলিশ এই মৃত্যুকে অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে অভিহিত করে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। দেহটি পাঠানো হয়েছে ময়না তদন্তের জন্য। এই মৃত্যু নিয়ে বিষদে কিছু জানানো হয়নি ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে। সিরিঞ্জ ছাড়াও একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে বিছানার পাশ থেকে। এছাড়া মিলেছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কিছু মেসেজ। সেই সব মেসেজে মিলেছে আরজি কর হাসপাতালের থ্রেট কালচারের প্রসঙ্গ।
জানা গেছে তিনি তাঁর মেসেজে লিখেছেন, যারা থ্রেট কালচারকে সমর্থন করছে সেই টিচার ও ফ্যাকাল্টিদের ধিক্কার। সরকারি চাকরি বাঁচাতেই এ কাজ করছে তারা। যারা এর বিরুদ্ধে লড়াই করছে তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই ধরণের সব লোকজন সন্দীপ ঘোষের থেকে কোনো অংশে কম নয়। জুনিয়র ডাক্তাররা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে যে দুষ্কৃতীরা বাহবা পাচ্ছে। আসলেই চারদিকটা নোংরামিতে ভরে গেছে, অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে গেছে পৃথিবী। এখনকার সমাজে এর প্রতিবাদ করলে প্রতিবাদীদেরই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে।
Doctor’s Death
ঝাড়গ্রামে ডাক্তারের রহস্যমৃত্যু
×
Comments :0