মঙ্গলবার কাতার বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যাত্রা শুরু হচ্ছে গতবারের বিজয়ীদের। এমনিতেই চোটে জর্জরিত ফ্রান্স শিবির।
এবারের দলে আগেই চোটের জন্য বাদ গেছেন গতবারের কাপ জয়ের অন্যতম কারিগর এমবাপ্পে ও কান্তে। কাতারে আসার পরেই চোট পান ডিফেন্ডার প্রেসনেল কিমপেম্বে। বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগের দিনই চোট পান ফ্রান্সের সেন্টার ফরোয়ার্ড করিম বেঞ্জিমা। আলোচনা চলছিল, বেঞ্জিমার বদলে পরিবর্ত হিসাবে অ্যান্টনি মার্শিয়ালকে নিয়ে। কিন্তু ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশঁ এই বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
বেঞ্জিমার ছিটকে যাওয়া নিয়ে কোচ দিদিয়ের বলেছেন, 'ফরাসি দলের জন্য এটা নতুন ধাক্কা। তা সত্ত্বেও, আমার দলের উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমাদের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে তা মোকাবেলা করার জন্য আমরা সবকিছু করব'।
দেশঁ আগে জানিয়ে দিয়েছিলেন ফ্রান্স ৪-৩-১-২ ছকে খেলবেন। কিন্তু এখন কী করবেন, সেটাই দেখার। গ্রিজম্যান সম্ভবত 'ফলস নাইন' পজিশনে যেতে পারেন। বেঞ্জিমার বদলে খেলতে পারেন এসি মিলানের ৩৬ বছরের ফরোয়ার্ড অলিভিয়ের জিরু। শেষ বিশ্বকাপে বেঞ্জিমার দলে না থাকার বিষয়টা প্রায় মানুষকে ভুলিয়েই দিয়েছিলেন তিনি।
চোট ছাড়াও গত বারের বিশ্বজয়ী হবার সুবাদেও প্রত্যাশার চাপ থাকবে ফ্রান্সের ওপর। ফ্রান্সের অধিনায়ক ও অভিজ্ঞ গোলরক্ষক হুগো লরিস কাতারে ভালো ফলের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।
লরিস মেনে নিয়েছেন, তাঁদের উপর যথেষ্ট চাপ থাকবে। এ নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আগের তিন বারের চ্যাম্পিয়নদের দিকে তাকালে দেখবেন, সকলেই পরের বার এসে সমস্যায় পড়েছে। গ্রুপের বাধাই টপকাতে পারেনি। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য, দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়াই। জানি গ্রুপ স্তরের কোনও ম্যাচই সহজ হয় না।’ তাঁর মতে, ‘আমাদের সব ম্যাচেই সেরা ফুটবল খেলতে হবে। শেষ ১৬ পর্ব থেকে প্রতিযোগিতা খুবই কঠিন। যে কোনও ম্যাচে যে কোনও ফল হতে পারে। কাউকেই হালকাভাবে নেওয়ার প্রশ্ন নেই।’ অতীতের অভিজ্ঞতা থেকেই হয়তো তিনি এমন বলেছেন। কারণ, গত বছর ইউরোতে ধাক্কা খেয়েছিল ফ্রান্স। শেষ ষোলোয় সুইৎজারল্যান্ডের কাছে টাইব্রেকারে হেরে ছিটকে যেতে হয়েছিল।
লরিসের মতে, ‘‘বিশ্বকাপে প্রচুর চাপ থাকে। চার বছর অন্তর এই সুযোগ আসে ফুটবলারদের সামনে। সকলেই নিজের সেরাটা দিতে চায় বিশ্বকাপের আসরে। তাই আমরা মাঠের মধ্যেই মনঃসং যোগ করতে চাই। আমরা পেশাদারি এবং খেলোয়াড় সুলভ মানসিকতা নিয়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করি।’’
তবে দেঁশ, ২০১৮-র মতো এবারও পরপর দু’বার কাপ ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে উপর ভরসা রেখেই। এমবাপ্পের বিষয়ে বলতে গিয়ে ফরাসি কোচ বলেছেন, 'চার বছর আগে ও যা করেছে তার থেকেও আজ আরও পরিণত ফুটবলার হয়ে উঠেছে। এখন (বেঞ্জিমার চোটের পরে) ওর দায়িত্ব আরও বেড়েছে।' এমবাপ্পের জন্ম ফ্রান্সে হলেও তাঁর বাবা আলজেরিয়ান এবং মা ক্যামেরুনের। এবছরের বিশ্বকাপে অন্যতম চর্চিত বিষয় এটি। এক ঝাঁক ‘বিদেশি’-দের নিয়েই এবারের দল গড়েছেন ২০১৮-র বিশ্বজয়ী কোচ। সব অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্স দলের বৈচিত্র সব থেকে বেশি এ ব্যাপারে।
এছাড়া দলে জায়গা পেয়েছেন ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের হয়ে খেলা লিলিয়ান থুরামের ছেলে মার্কাস। কাতারে মাঠে নামার সুযোগ পেলে বাবার ২৪ বছর পর তিনিও দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলবেন।
ফ্রান্স : অস্ট্রেলিয়া
(ম্যাচ শুরু রাত ১২.৩০)
Comments :0