জানা অজানা — নতুনপাতা - বর্ষ ৩
তুষার প্যাঁচা
তপন কুমার বৈরাগ্য
বিশ্বের সবচেয়ে অদ্ভূত ও সুন্দর প্যাঁচা তুষার প্যাঁচা।প্যাঁচার সমার্থক শব্দ উলুক।তুষার প্যাঁচার হাড়হিম করা ডাক সবাইকে চমকে দেওয়ার মতন।এদের ডাককে হুট বলা হয়।এই প্যাঁচাকে দেখতে হলে উত্তর মেরুর নিকটবর্তী যেসব জায়গা আছে যেমন নরওয়ের লংইয়ার বিয়েন, কানাডার নুনাভূত,গ্রীনল্যান্ডের কাফেকুবেন দ্বীপে যেতে হবে।এদের গায়ের রঙ ধবধবে সাদা।গায়ে বাদামী বা কালো রঙের ছোট ছোট ছোপ থাকে।এদের মুখটা এবং চোখগুলো খুব বড়বড়। এরা মাটির খুব খাছাকাছি দিয়ে উড়ে যায়।এরা যখন উড়ে যায় ঠিক মনে হয় যেন একটা ছোট উড়োজাহাজ উড়ে যাচ্ছে। এদের উড়ার দৃশ্য অপূর্ব সুন্দর। আমাদের দেশের প্যাঁচারা যেমন নিশাকর এরা কিন্তু সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্যের সন্ধানে
উড়ে বেড়ায়।মেরুর তুন্দ্রা অঞ্চলের উন্মুক্ত তৃণভূমিতে এরা বাসা বাঁধে।এদের প্রিয় খাদ্য ইঁদুর।সব ধরনের প্যাঁচারই প্রিয় খাদ্য ইঁদুর।জর্দন,প্যালেস্টাইন,ইসরায়েলে ইঁদুরের হাত থেকে ফসল রক্ষার জন্য প্যাঁচাদের ব্যবহার করা হয়।এই প্যাঁচা ইঁদুর ছাড়াও মাছ,খরগোশের বাচ্চা,কাঠবিড়ালি,ছুঁচো ,সাপ খায়। তাই এই প্যাঁচা মাংসাশী প্রাণী।আজ থেকে ৬০মিলিয়ন বছর আগে
এদের পৃথিবীতে আবির্ডূত হয়েছিল।তাই এই প্যাঁচা পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন প্রাণী।এই প্যাঁচাকে দেখে মনে হবে এরা সত্যিই লক্ষ্মীর বাহন।একটা পূর্ণ প্যাঁচার ওজন তিন থেকে চার কেজি হয়।এদের ডানা দেখার মতন।এক একটা ডানার দৈর্ঘ্য ১২৫থেকে১৩৫সেমি পর্যন্ত হতে পারে।এই ডানায় তুষার প্যাঁচাকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সুন্দর প্যাঁচায় পরিণত করেছে। এদের দেহের দৈর্ঘ্য প্রায় এক ফুট হতে পারে।মাটিতে,টিলাতে,পাথরের উপর বা ভবনের উপরে এরা থাকতে ভালোবাসে।তুষার প্যাঁচা ছাড়া বিশ্বের কোনো প্যাঁচা এমন ধবধবে সাদা হয় না।ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে প্রায় ২৫দিন সময় লাগে।দুইমাস পরে বাচ্চারা উড়তে শেখে। এই প্যাঁচারা কুড়ি থেকে ২৫বছর বাঁচে।শান্ত স্বভাবের এই পাখি বিশ্বের এক আশ্চর্য পাখি।
Comments :0