CPI(M) RALLY IN BARASAT

অনুমোদন হাইকোর্টের,
কাছারি ময়দানেই হবে ৬ জুনের সমাবেশ

রাজ্য জেলা কলকাতা

CPIM BJP RSS TMC WEST BENGAL POLITICS BENGALI NEWS md salim barasat rally howrah rally আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরে কাছারি ময়দানে সভার প্রস্তুতির কাজ খতিয়ে দেখছেন জেলা সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ। নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা হাইকোর্ট থেকে বারাসাতের কাছারি ময়দানের জনসভার অনুমতি আদায় করল সিপিআই(এম)। প্রসঙ্গত,  উত্তর ২৪ পরগণা জেলা প্রশাসন এই সভার অনুমতি দিয়েও তা বাতিল করে। তার বিরুদ্ধেই আদালতের দ্বারস্থ হয় সিপিআই(এম)। সেই আইনী লড়াই জিতে আদায় হল সমাবেশের ছাড়পত্র। একইসঙ্গে এদিন কলকাতা হাইকোর্ট থেকেই হাওড়ার শিবপুর কাজীপাড়া থেকে হাওড়া ময়দান অবধি মহামিছিল এবং সভার অনুমতি আদায় করে সিপিআই(এম)। 

এদিন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে সিপিআই(এম)’র আবেদনের শুনানি হয়। বিচারপতি জানিয়েছেন, ৬ জুন দুপুর ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা অবধি বারাসাতের কাছারি ময়দানে সভা করতে পারবে সিপিআই(এম)। 

উত্তর ২৪ পরগণা জেলা প্রশাসন প্রথমে লিখিত ভাবে ৬ জুনের সমাবেশের অনুমতি দেয়। কিন্তু পরে জেলা প্রশাসনের তরফে বলা হয়, মাঠে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলবে। তাই সভার অনুমতি বাতিল করা হল। জেলার সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে প্রশাসনকে দিয়ে এই কাজ করিয়েছে তৃণমূল। তাঁদের দাবি, উত্তর ২৪ পরগণায় সিপিআই(এম)’র সমর্থন বাড়ছে। তাই এই কাজ করানো হয়েছে জেলা প্রশাসনকে দিয়ে। 

এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন জেলা সিপিআই(এম) নেতৃত্ব। জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। 

সিপিআই(এম)’র হয়ে সওয়াল করেন রবিলাল মৈত্র, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, শামিম আহমেদ প্রমুখ আইনজীবী। তাঁরা বলেন, জেলা প্রশাসন অনুমতি বাতিলের সময় বলেছিল, মাঠের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলবে। তাই অনুমতি দেওয়া হবে না। কিন্তু সপ্তাহ ঘুরলেও মাঠের পরিস্থিতি যেই কে সেই। এর থেকে প্রমাণিত, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। 

শুনানি চলাকালীন রাজ্যের আইনজীবী আদালতকে জানান, ২০১৭ সাল থেকে বারাসাতের কাছারি ময়দানে সভার অনুমতি দেওয়া হয় না। অতিরিক্ত জেলা শাসক এই তথ্য জানতেন না। তিনি ভুল করে অনুমতি দিয়ে ফেলেছিলেন। 

রাজ্যের তরফে আদালতকে জানানো হয়, কাছারি ময়দান সংলগ্ন এলাকা বারাসাত শহরের ব্যস্ততম অঞ্চল। এখানেই জেলা হাসপাতাল, আদালত এবং স্কুল রয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখেই এখানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না। 

এর প্রেক্ষিতে বিচারপতি মান্থা বলেন, অনুমতি দিয়ে প্রত্যাহার করা প্রশাসনের অস্বচ্ছতার উদাহরণ। এর পাশাপাশি প্রশাসনের অনুমতি পাওয়ার পরে জেলা জুড়েই প্রচার চালানো হয়েছে আবেদনকারীদের তরফে। দাখিল করা পিটিশন অনুযায়ী, সেই প্রচারে ১০ লক্ষের বেশি টাকা খরচ হয়েছে। এই অবস্থায় সভার অনুমতি বাতিল করা যায় না। 

তারপরেই তিনি ৬ জুন কাছারি ময়দানে সমাবেশের অনুমতি দেন। 

অপরদিকে এদিন প্রথমার্ধে হাওড়ার মিছিলের অনুমতি চেয়েও আদালতের দ্বারস্থ হয় সিপিআই(এম)। এই আবেদনেরও শুনানি চলে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে। সিপিআই(এম)’র হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। আবেদনে বলা হয়, ১৮ মে প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন অনুমতি দিচ্ছে না রাজনৈতিক কারণে। 

রাজ্য সরকারের আইনজীবী আদালতকে জানায়, গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। গোয়েন্দা বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে রাম নবমীর দাঙ্গা হওয়া অঞ্চলের উপর দিয়ে মিছিল যাওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে মিছিল থেকে উষ্কানি দেওয়া না হলেও বাইরে থেকে প্ররোচনা সৃষ্টি করা হতে পারে। এমনটাই গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে। তাই আমরা সিপিআই(এম)কে অনুরোধ করছি, ওই এলাকার বাইরে মিছিল করার জন্য। 

দুই তরফের বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতি মান্থা মিছিলের অনুমতি দেন। যদিও তিনি বলেন, মিছিল থেকে কোনও রকমের উত্তেজক স্লোগান দেওয়া কিংবা মাইক ব্যবহার করা যাবে না। একইসঙ্গে বিকেল চারটে থেকে পাঁচটার মধ্যে মিছিল শেষ করতে হবে। তারপর সভা করতে হবে। চওড়া বস্তি, মল্লিক ফটক, ফাজির বস্তি ইত্যাদি  স্পর্শকাতর এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় কোনও ধরণের কোনও ইঙ্গিতবাহী স্লোগান তোলা যাবে না। য

যদিও হাওড়া ময়দানের সভায় মাইক ব্যবহারের অনুমতি দেন বিচারপতি মান্থা। 

আদালতের নির্দেশ মেনেই সোমবার বিকেলে হাওড়ায় মিছিল এবং সভা হয়। সভা এবং মিছিলে মহম্মদ সেলিম, শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, দিলীপ ঘোষ প্রমুখ সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

Comments :0

Login to leave a comment