Ayodhya Demolition

লিবেরহান কমিশনের সাক্ষ্যে বসু, আমি থাকলে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে মসজিদ বাঁচাতাম

রাজ্য

Ayodhya Demolition

বাবরি মসজিদ ধ্বংসের তদন্তে গঠিত হয়েছিল লিবেরহান কমিশন। ২০০১’র ২৯ জানুয়ারি এবং ১৫ মার্চে কমিশনে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন কমরেড জ্যোতি বসু। দিল্লিতে কমিশনের কাছে তাঁর বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছিল গণশক্তিতে। সেই দুই প্রতিবেদন তুলে ধরা হলো। ওপরের শিরোনাম ১৫ মার্চের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল ওপরের শিরোনামে।

 

(১৫‍‌ই মার্চের প্রতিবেদন)

প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতা এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু আজ দিল্লিতে বলেছেন, তিনি সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকলে উত্তরপ্রদেশে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস ঠেকাতেন। বসু আজ লিবেরহান কমিশনের সামনে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেছেন। তাঁকে জেরার সময় প্রশ্ন করা হয়েছিল, ১৯৯২ সালে যখন বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল, সেই সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর প‍‌দে থাকলে কী ধরনের ব্যবস্থা নিতেন।


বসু কমিশনের সামনে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বলেন, তিনি বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দু’দিন আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসিমা রাও‍‌য়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তিনি রাওয়ের কাছে অযোধ্যা পরিস্থি‍‌তি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জা‍‌‍‌নি‌য়েছিলেন। তিনি বলেন, আমরা তখন তাঁকে বলেছিলাম, বাবরি মসজিদ ধ্বংস ঠেকা‍নোর জন্য প্রয়োজনে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করতে হবে। 

 

 


এক প্রশ্নের উত্তরে বসু বলেন, রথযাত্রায় না নামার জন্য তিনি তখন লালকৃষ্ণ আদবানিকে অনেক বু‍‌ঝিয়েছিলেন। কিন্তু আদবানি নাছোড়বান্দা ছিলেন। ১৯৯০ সালে আদবানির রথ পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে যাবার সময় পুরুলিয়ার একটি জায়গা ছাড়া রা‍‌‍জ্যের অন্য কোথাও গণ্ডগোল হয়নি। রাজ্য সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিল। আদবানিকে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে তখন গ্রেপ্তার না করার কারণ বসু আজ কমিশনকে জানান। বসু ব‍‌লেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ভিপি সিং তাঁকে বলেছিলেন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব আদবানিকে গ্রেপ্তারের জন্য সব বন্দোবস্ত করে রেখেছেন।

 


লিবেরহান কমিশনের সামনে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার সাক্ষ্য দিলেন জ্যোতি বসু। এর আগে তিনি সাক্ষ্য দিয়েছেন ২৯ জানুয়ারি। বৃহস্পতিবার কমিশনের কাজ সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আসলে কাজ শুরু হয় প্রায় ১১টায়। বসু অবশ্য সকাল ১০টা ২০ মিনিটে উপস্থিত হন। আদবানি ও কল্যাণ সিং’র কৌসুলিরা গোড়া থেকেই কালক্ষেপের চেষ্টা করছিলেন। বিশেষ করে কলকাতায় কল্যা‌‌ণ সিং’র ভাষণের ক্যাসেটের অনুবাদ নিয়ে তাঁরা নানা প্রশ্ন তুলতে থাকেন। উল্লেখ্য এই ক্যাসেটটি কমিশনের কাছে বসু জমা দিয়ে‍‌ছিলেন। বিচারপতি লিবেরহান অবশ্য বৃহস্পতিবার আবার এই ক্যাসেটটি বাজিয়ে শোনান।


জ্যোতি বসু বৃহস্পতিবার এই কমিশনের সামনে বলেছেন, যেভাবে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়েছে তা লজ্জাজনক ও বর্বরোচিত। এই প্রসঙ্গে তিনি আফগানিস্তানে বুদ্ধমূর্তি ধ্বংসেরও তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, তালিবানীরা সভ্য জগতের কলঙ্ক। যেভাবে তারা বুদ্ধমূর্তি ধ্বংস করছে তা বর্বরোচিত ছাড়া অন্য কিছু নয়। যারা বাবরি মসজিদ ধ্বংস করেছে, তাদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বসু বলেন, বাজপেয়ী বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ব্যাপারে তাঁর অবস্থান পালটেছেন। প্রথমে তিনি বললেন, এটি দুর্ঘটনা। পরে আবার বললেন, এই ধ্বংসকাণ্ড হলো জাতীয় ভাবাবেগের বহিঃপ্রকাশ। এক প্রশ্নের উত্তরে বসু বলেন, রাষ্ট্র ও রাজনীতির সঙ্গে ধর্মকে মেশানো উচিত নয়। পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে রাজ্যে সব মানুষকে সমান চোখে দেখা হয়। বিচারপতি লিবেরহান বৃহস্পতিবার জ্যোতি বসুর প্রশংসা করে বলনে, এইভাবে কেউ কমিশনের কাছে ক্যাসেট জমা দেয়নি। এতে কাজের সুবিধা হলো।


বসু ব‍‌লেন, উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং’কে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই চেনেন। তাই তিনি কলকাতায় কী বলেন সে সম্পর্কে তাঁর কৌতুহল ছিল। সে কারণেই তিনি কল্যাণের ভাষণ ক্যাসেট করার জন্য পুলিসকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই ক্যাসেট থেকে সে সময়ে বাবরি মসজিদের ব্যাপারে বিজে‍‌‍‌পি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং আরএসএস-র দৃষ্টিভঙ্গি বোঝা যায়। বসু এই ক্যাসেটের একটি কপি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাওকে ‍‌দিয়েছিলেন শোনার জন্য।
বসু বলেন, নরসিমা রাও যথাসময়ে ব্যবস্থা নিলে বাবরি মসজিদ ধ্বংস ঠেকানো যেত।


এদিকে কমিশনের সামনে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বিজেপি নেত্রী ও কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী উমা ভারতী যথারীতি বলেছেন, তি‍‌নি করসেবকদের শান্তি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তিনি নাকি মসজিদ ধ্বংস করতে বলেননি।

(২৯ জানুয়ারির প্রতিবেদন)
কল্যাণ সিংয়ের ভাষণের ক্যাসেট লিবেরহান কমিশনের কাছে জমা দিলেন জ্যোতি বসু। সিপিআই(এম) পলিটব্যুরোর সদস্য ও পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু এদিন সাক্ষ্য দিতে উপস্থিত হয়েছিলেন অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের তদন্তে নিযুক্ত লিবেরহান কমিশনের সামনে। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরের আগে ও পরের বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে লিখিত বিবৃতির পাশাপাশি বসু এদিন কমিশনের কাছে কল্যাণ সিংয়ের ভাষণের একটি ক্যাসেট পেশ করেন। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রায় দু’মাস পরে ১৯৯৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় একটি সভায় যে ভাষণ দিয়েছিলেন কল্যাণ সিন, ক্যাসেটটিতে তা রেকর্ড করা রয়েছে। ঐ ভাষণে বাবরি মসজিদ ধ্বংস সম্পর্কে কল্যাণ সিং বলেছিলেন, ‘‘ঈশ্বরের আশীর্বাদ ছাড়া কোনও বিস্ফোরক ব্যবহার না করে পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে এতবড় ধ্বংস কাণ্ড সম্পন্ন করা যেত না। কোনও ঠিকাদারকে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হলে তাঁর অন্তত দেড় মাস সময় লাগতো।’’ কল্যাণ সিংয়ের অনুবাদের দুটি ক্যাসেট বসু এদিন তুলে দেন বিচারপতি লিবেরহানের হাতে। একই সঙ্গে বসু নরসিমা রাওয়ের নেতৃত্বাধীনতৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার বাবরি মসজিদ রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশও করেন। বসু আরও বলেন, উত্তর প্রদেশে সেই সময়ে ৩৫৬ নম্বর ধারা প্রয়োগ করা উচিত ছিল। তাহলে রক্ষা করা যেত বাবরি মসজিদকে।


গত বছর ৬ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে এ জিনুরানির লেখা একটি বইয়ের উদ্বোধন করতে গিয়ে বসু তাঁর ভাষণে সাম্প্রদায়িকতার বিপদ সম্পর্কে বেশ কিছু কথা বলেছিলেন। সেই ভাষণেই তি‍‌নি বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রসঙ্গ টেনে কলকাতায় কল্যাণ সিংয়ের ঐ বক্তৃতার ক্যাসেট তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাওয়ের কাছে পাঠিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই লিবেরহান কমিশন ডেকে পাঠায় বসুকে। নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনের অ্যানেক্সের বি হলে এদিন বসুর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। সকাল সাড়ে দশটায় বসুকে উপস্থিত হতে বলা হয়েছিল। ঠিক সাড়ে দশটাতেই বসু পৌঁছে যান বিজ্ঞান ভবনে। তবে বিচারপতি লিবেরহান পৌঁছা‍‌নোর পরে ১০.৩৭ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি লিবেরহানেরবাঁদিকেসাক্ষীদের জন্য নির্ধারিত জায়গায় বসুকে বসতে দেওয়া হয়। সাক্ষ্যদান পর্বের শুরুতেই কমিশনের কৌঁসুলির ভুল ধরিয়ে দেন বসু। ঐ কৌঁসুলি তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কবে তিনি কল্যাণ সিংয়ের বক্তৃতার ক্যাসেট প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে দিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে শুধরে দিয়ে বসু বলেন, বাজপেয়ী নন, নরসিমা রাওকে ক্যাসেটটি দিয়েছিলেন তিনি। এরপর বসু বলেন, তিনি প্রথমে একটি বিবৃতি দিতে চান। তারপরে যে কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে তিনি প্রস্তুত আছেন। বিচারপতি লিবেরহান তাঁর অনুরোধে সাড়া দিলে বসু লিখিত বিবৃতিটি পড়েন।


ঐ বিবৃতিতে বসু বলেন, ১৯৯২ সালের ২৩ নভেম্বর বাবরি মসজিদ নিয়ে জাতীয় সংহতি পরিষদের বৈঠকে সিপিআই(এম)’র তরফে তিনি ও হরকিষেণ সিং সুরজিৎ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সর্বসম্মতভাবেবাবরি মসজিদ রক্ষার প্রয়োজনে সংবিধানের ৩৫৬ নম্বর ধারা প্রয়োগ করতে বলা হয়েছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাওকে, যদিও সিপিআই(এম) ঐ ধারা প্রয়োগের বিরোধী। বিজেপি’র কেউ ঐ সভায় ছিলেন না। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরের দু’দিন আগে তিনি রাওকে ফোনে জানিয়েছিলেন, বাবরি মসজিদের উপর আক্রমণ হতে পারে। মসজিদ রক্ষায় সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু কী ঘটনাঘটেছে, তা সবাই জানেন। পরে উত্তর প্রদেশ সরকারকে বরখাস্ত করা হয়। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৯৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কল্যাণ সিং কলকাতায় একটি সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের জন্য ‘‘আমার কোনও অনুশোচনা, ক্ষত চিহ্ন বা ক্ষোভ নেই। ঐ দিনটি আমার কাছে ঐতিহাসিক দিন। ... ঐ কাঠামো ধ্বংস দেশের কাছে গর্বের।’’ ভাষণে কল্যাণ সিং ‘ঠিকাদারকে দায়িত্ব দেওয়া’ সম্পর্কে যা বলেছিলেন, বসু তাও উল্লেখ করেন। 
বসু আরও বলেন, ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সুরজিৎ ও তিনি রাওয়ের সঙ্গে দেখা করে জানতে চেয়েছিলেন, কেন মসজিদ রক্ষা করতে কিছু করা হলো না। উত্তরে রাও তাঁদের বলেছিলেন, একজন মুখ্যমন্ত্রী (কল্যাণ সিং), যখন তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, মসজিদের কোনও ক্ষতি হবে না, তখন তিনি তাঁকে অবিশ্বাস করেন কিভাবে। এই কথা শুনে তিনি রাওকে কল্যাণ সিংয়ের ভাষণের ক্যাসেটটি দেন। তবে রাও ক্যাসেটটি শুনেছেন কিনা, তা তিনি জানেন না। ১৯৯৯ সালের ২০ মার্চ কলকাতায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, বিজেপি’কে কেন তিনি বর্বর ও অসভ্য বলেন। তিনি বাজপেয়ীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের জন্য আর কী ভাষা বলা যেতে পারে। কল্যাণ সিংয়ের ঐ ভাষণের কথাও তিনি বাজপেয়ীকে বলেছিলেন। তখন বাজপেয়ী চুপ করে থাকেন। সেদিন বাজপেয়ী তাঁকে একথাও বলেছিলেন যে, বাবরি মসজিদ ধ্বংস একটি দুর্ঘটনা। এখন অবশ্য তিনি বলছেন, ‘জাতীয় ভাবনার প্রকাশ।’ লিবেরহান কমিশনের রিপোর্টের জন্য তাঁরা অপেক্ষা করছেন বলে বসু তাঁর বিবৃতি শেষ করেন। তারপরে তিনি কল্যাণ সিংয়ের ভাষণের ক্যাসেট জমা দেন কমিশনে। বসুর এদিনের সাক্ষ্যের শেষ পর্বে কল্যাণ সিংয়ের সেই ভাষণের ক্যাসেট বাজিয়ে শোনানো হয় শুনানি কক্ষে। কমিশনের কৌঁসুলি বসুকে কিছু প্রশ্নও করেন। বসুকে জিজ্ঞাসা করা হয়, জাতীয় সংহতি পরিষদের বৈঠকে বিজেপি’র কেউ কেন যাননি, তিনি জানেন কি না। বসু বলেন না। 

 

পরের প্রশ্ন, বাবরি মসজিদের উপর আক্রমণ হতে পারে বলে কোন্‌ সূত্রে খবর পেয়েছিলেন বসু। উত্তরে বসু বলেন, ‘‘দিল্লিতে আমাদের পার্টি অফিস রয়েছে। দিল্লির অন্যান্য সূত্রেও ঐ তথ্য পেয়েছিলাম।’’ এর পরের প্রশ্ন, জাতীয় সংহতি পরিষদের বৈঠকে যোগ না দিয়ে বিজেপি কী সঙ্কেত দিয়েছিল বলে বসু মনে করেন। বসুর উত্তর, বাবরি মসজিদের ধ্বংস ঠেকাতে ঐ বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সম্ভবত সেই জন্যই বিজেপি দল হিসাবে ঐ বৈঠকে যোগ না দেওয়ার কথা ভে‍‌বেছিল। বিচারপতি লিবেরহানও কিছু প্রশ্ন করেন। তিনি বসুকে জিজ্ঞাসা করেন, কীভাবে বিরাট জনতাকে নিয়ন্ত্রণ কা যায় বলে তিনি মনে করেন। বসু বলেন, সেই প্রথম এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। আগেও ঘটেছে। কীভাবে এরকম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, কেন্দ্র ও সব রাজ্য সরকারের তা জানা উচিত। গত ৫৩ বছর ধরে এরকম জনতার মোকাবিলা করা হচ্ছে। 


এই প্রসঙ্গে বসু আরও বলেন, উত্তর প্রদেশে ৩৫৬ নম্বর ধারা প্রয়োগ করা উচিত ছিল। পরে শান্তি ফিরলে বিজেপি’কে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া যেত। প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষে কল্যাণ সিংয়ের ভাষণের ক্যাসেটটি বাজিয়ে শোনানো হয়। বিচারপতি লিবেরহান বসুকে বলেন, ফের তাঁকে ডাকা হতে পারে। বসু সঙ্গে সঙ্গেই বলেন, অবশ্যই আসবেন। সম্ভবত মার্চ মাসে ফের বসুকে ডাকা হবে বলে বিচারপতি লিবেরহান জানান। এরপর সবাইকে নমস্কার জানিয়ে শুনানিকক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন বসু। উপস্থিত কৌঁসুলিরা তাঁকে পৌঁছে দেন গাড়ি পর্যন্ত। ভিতরে বৈদ্যুতিন মাধ্যম বাদে অন্যান্য সাংবাদিকদের এদিন প্রবেশের অনুমতি ছিল। বাইরে বেরিয়ে বসু কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি। সরাসরি তিনি জানিয়ে দেন, ভিতরে যা হয়েছে, বাইরে তা তাঁর পক্ষে প্রকাশ করা বোধ হয় ঠিক হবে না।

Comments :0

Login to leave a comment