পশ্চিমবঙ্গে মস্তান রাজ চলছে। নির্বাচনী বন্ড, কাটমানির মাধ্যমে টাকার খেলা চলছে। মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করা হয়েছে। মানুষের ওষুধের টাকা, খাবারের টাকা, রেশনের টাকা লুটেরারা লুটে নিয়েছে। সেই লুটেরা বাহিনী যাতে নির্বাচনকে লুট করতে না পারে, সেটা সুনিশ্চিত করতে হবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকে।
শনিবার কলকাতায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমনটাই বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
একইসঙ্গে মহম্মদ সেলিমের সংযোজন, ‘‘বামপন্থীরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। এক দফায় ভোট হলেও আমরা প্রস্তুত থাকতাম। এখনও প্রস্তুত।’’
সেলিম বলেছেন, রাজ্যে যেভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যালট চুরি হয়েছে, তাতে ইভিএমের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। সেই চুরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সরকারি আধিকারিকরা। তারাই এখন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অধীনে কাজ করবে। রাজ্যের মানুষ দেখেছেন, কিভাবে টাকার বিনিময়ে, ক্ষমতার ভাগ বাটোয়ারার বিনিময়ে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করা হয়। তাই মানুষ এদের ভরসা করতে পারছে না।’’
তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনী সূচি অনুযায়ী, একদম শুরুর দিকে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির মত আসনগুলিতে ভোট হয়ে যাবে। কিন্তু গণনা হবে প্রায় ২ মাস পরে। ততদিন এই ইভিএমগুলিকে কারা সংরক্ষণ করবে? সেই সংরক্ষণ প্রশ্নাতীত হবে কি? কারণ ইতিমধ্যেই ইভিএম নিয়ে নানারকম প্রশ্নচিহ্ন উঠেছে।’’
ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সেলিম বলেন, ‘‘বামপন্থীরা ৫০ শতাংশ ইভিএমে ভিভিপ্যাট গণনার দাবি জানিয়েছিলেন। একইসঙ্গে এটিএমের মত ভোটারকে তাঁর ভোটের রসিদও দেওয়া হোক। তিনি চাইলে সেই কাগজ নষ্ট করুক, কিন্তু নিশ্চিত হোক যে ভোটটা কোথায় পড়েছে। রসিদ ছাড়া গোটাটাই নির্বাচনী বন্ডের মত। জানা যাবেনা কার টাকা কার অ্যাকাউন্টে জমা পড়ল।’’
ইভিএম নিয়ে দেশজুড়ে ক্ষোভ থাকলেও, যাবতীয় অভিযোগ এদিন খাটো করার চেষ্টা করেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনরার রাজীব কুমার।
গোটা নির্বাচনী মরশুম জুড়ে চিহ্নিত সমাজবিরোধী বা ‘হিস্ট্রি শিটারদের’ হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানিয়ে সেলিম বলেছেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে মমতা ব্যানার্জি, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী মিলে দুষ্কৃতিদের মুক্তাঞ্চল তৈরি করেছে। সন্দেশখালি তার প্রমাণ। বহু ক্ষেত্রে মাওবাদীদের সঙ্গে নিয়ে দুষ্কৃতিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই বাহিনীর একটা অংশ লুট করছে, একটা অংশ সম্প্রদায়িক হিংসা ছড়াচ্ছে, আরেকটা অংশ গুন্ডামি করছে। গোটা বাহিনীকে জেলে না ভরলে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা সম্ভব নয়। কোনও রাজনৈতিক পরিচয় না দেখে এদের ধরতে হবে, এবং বকেয়া মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।’’
Comments :0