Anganwadi Workers

মুখ না মিললে বাতিল হচ্ছে তিন মাসের শিশুর বরাদ্দ, জানাচ্ছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা

জাতীয়

মুখের ছবি না মিললে রেশন বাতিল হচ্ছে তিন মাসের শিশুরও। হচ্ছে সে দেশেই, যেখানে প্রতিদিন অপুষ্টিতে ২০ হাজার ৫০০ শিশু। শিশু ও মায়েদের পরিচর্যার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্যও বাড়ছে না বরাদ্দ। বড় দুর্ভিক্ষের মুখে দাঁড়িয়ে দেশ।
এমনই আশঙ্কা জানাচ্ছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা থেকে অর্থনীতিবিদরা। তাঁরা বলছেন, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের যে কোনও কাজে ডেকে নেওয়া হয়। কাজ করতেই হয় তাঁদের। সে জনগণনাই হোক বা গৃহপালিত পশুগণনা। অথচ দিনের শেষে সরকারি কর্মীর স্বীকৃতি মেলে না।
চলতি সপ্তাহেই দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের জাতীয় কনভেনশন হয়েছে। বক্তব্য রেখেছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী আন্দোলনের শীর্ষ সংগঠক এবং সিআইটিইউ নেত্রী এ আর সিন্ধু। বক্তব্য রেখেছেন অর্থনীতিবিদ উৎসা পট্টনায়েকও। মধ্য প্রদেশ, গুজরাটের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সংগঠনের নেত্রীরা জানিয়েছেন তাঁদের লড়াইয়ের বৃত্তান্ত। 
পট্টনায়েক বলেছেন, ‘‘১৭৭০’র দুর্ভিক্ষে বাংলার ১ কোটি মানুষ মারা গিয়েছিলেন। ১৯৪৩’র দুর্ভিক্ষে বাংলা ফের দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয়। ব্রিটিশ শাসনের কারণেই হয়েছিল দুর্ভিক্ষ। জনতাকে খাদ্য দেওয়া হয়নি। ১৯৪৩’র দুর্ভিক্ষে অন্তত ৩০ লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিলেন। এই অভি৭তার কারণেই অপুষ্টি এবং ক্ষুধা মোকাবিলার প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল স্বাধীন ভারতে। কিন্তু নয়া উদারবাদের তিন দশকের বেশি সময়ে সেই গুরুত্ব হারিয়েছে। মাথাপিছু খাদ্যশস্য ব্রিটিশ শাসনের মাত্রায় নেমে গিয়েছে।’’
সিন্ধু বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী এক দেশ থেকে অন্য দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর আমাদের কাজ করতে হয় খালি পেটে। আমাদের শিশুরা ভুগতেই থাকে অপুষ্টিতে।’’ তিনি বলেছেন, ২০ হাজার ৫০০ শিশু দেশে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে অপুষ্টির কারণে। সরকারি তথ্য থেকেই তা বেরিয়ে এসেছে। অথচ বাজেট প্রতিবার কমছে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের ভাতা শেষ বেড়েছে ২০১৮-তে, তা-ও নামমাত্র। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে খাদ্যসামগ্রীর জন্য বরাদ্দ শেষবার বেড়েছিল ২০১৭-তে।’’ 
সিন্ধুই বলেছেন যে নতুন ব্যবস্থায় শিশুদের মুখে ছবি তথ্য প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, ‘‘শিশুর বয়স খানিক বাড়লেই মুখের বদল হচ্ছে। ছবি না মিললেই তিন মাসের শিশুর বরাদ্দও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে।’’ 
গুজরাটের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা আদায় করেছেন গ্র্যাচুয়িটির দাবি। গুজরাট হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে গ্র্যাচুয়িটি দেওয়ারর নির্দেশ দিয়েছে। তাঁরা বলছেন এবার মাসিক ন্যূনতম বেতন, সরকারি স্তরের সঙ্গে সাযুজ্যমূলক, দেওয়ার দাবিতে চলছে লড়াই। খাতায় কলমে ৬ ঘন্টা কাজ করতে হলেও ‘প্রধানমন্ত্রী পোষণ প্রকল্পে’ প্রায় সারাদিন তথ্য তুলে যেতে হচ্ছে। 
মধ্য প্রদেশের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা জানিয়েছেন যে সেখানে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হচ্ছে বড় মাপের এনজিও’র হাতে। রান্না করা খাবার দিচ্ছে। টাটকা থাকছে না। নানা সমস্যা হচ্ছে।

Comments :0

Login to leave a comment