Life of in paletine refugee camp

অন্ধকার যুগে ফিরে গিয়েছি, বলছে প্যালেস্তাইনের ত্রাণশিবির

আন্তর্জাতিক

উদবাস্তু শিবিরে মাহমুদ ও তার পরিবার। সামাজিক মাধ্যমে বিবিসির পোস্ট থেকে

‘‘বলতে পারেন অন্ধকার যুগে ফিরে গিয়েছি। আমাদের এখন ধোয়াকাচা সবই সমুদ্রের ভরসায়। স্নানের জন্যও ভরসা সমুদ্র, সরাসরি নেমে পড়া ছাড়া উপায় নেই।’’ 

এমনই আছে প্যালেস্তাইনে ঘরবাড়ি খোয়ানো উদ্বাস্তুরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবসি’র প্রতিনিধিকে মাহমুদ অল মোতাওয়াগ এভাবেই শুনিয়েছেন জীবন কীরকম।

ত্রিশ বছরের এই যুবক এবং স্ত্রী দুয়াকে তাঁদের দুই সন্তানের জন্য মাছ ভিক্ষা করতে হচ্ছে। মৎস্যজীবীরা যদি দেন। 

একেবারে পালটে গিয়েছে জীবন। ইজরায়েলের হুমকিতে দলে দলে প্যালেস্তেনীয় উত্তর অংশ থেকে দক্ষিণে ভূমধ্যসাগরের দিকে চলে আসছেন। দেরি হলেই বোমা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে বাড়িঘর, প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে শিশুদের। শরীরে লিখে রাখতে হচ্ছে পরিচয়। যাতে গণকবরে যেতে না হয়। 

জাবালিয়া উদ্বাস্তু বসতিতে থাকতেন মাহমুদ। কৃষি খামারে কাজ করতেন। প্যালেস্তাইনের আর সব বাসিন্দার মতোই তাঁর জীবনেও ইজরায়েলের দখলদারি নতুন নয়। সমানে হতে হয়েছে সীমান্ত পেরিয়ে আসা বাহিনীর হামলা, হত্যা, নির্যাতনের। কিন্তু আশ্রয় ছিল, নাগরিকের মতো থাকার ব্যবস্থা ছিল। 

এখন মাহমুদ আর দুয়া দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটাচ্ছেন সৈকতে। ‘‘অনেকটা সময় থাকি জামাকাপড় শুকানোর জন্য। তাছাড়া ওই ভ্যাপসা গিজগিজে তাঁবুগুলোতে ফিরতে ইচ্ছে করে না’’, বলেছেন দুয়া। সামনের মাসে তাঁর আরেক সন্তান প্রসব হওয়ার কথা। 

দুয়ার শঙ্কা এই ঘিনঘিনে নোংরা অস্থায়ী তাঁবুর মধ্যেই তাঁকে সন্তান প্রসব করতে হবে কিনা। 

গাজার ৩০টি বড় হাসপাতালের ২০টি পুরোপুরি বন্ধ। বাকি দশটি চলছে কিন্তু চলার মতো করে নয়। চেতনানাশক নেই, ওষুধ নেই, জ্বালানি নেই যে অপারেশন থিয়েটারে আলো জ্বলবে। আল শিফা হাসপাতালে হামলা হয়েছে রবিবারও। ইজরায়েলের সেনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে কার্ডিয়াক ওয়ার্ড।

বিবিসি’কে বছর কুড়ির এই মহিলা বলেছেন, ‘‘আমার বড্ড ভয় হচ্ছে। আমাকে কী জোর করে এখানেই সন্তানের জন্ম দিতে হবে? ভয় আমার সন্তানের জন্য আরও বেশি।’’ 

বিভিন্ন স্কুলে ঢুকতে বাধ্য করা হচ্ছে ফের উদ্বাস্তু প্যালেস্তেনীয়দের। একেকটি স্কুল ঘরে ৭০জনের বেশি থাকছেন। একেকটি তাঁবুতে যত জন থাকা যায় তার অনেক বেশি। নিকাশি ব্যবস্থা এই চাপ নিতে পারছে না। নেই পায়খানা, বাথরুম। চারদিকে নোংরা আর দুর্গন্ধ। 

তবু যুদ্ধ চলছে। ১১ হাজারের বেশি প্রাণ গিয়েছে। তার মধ্যে ৫ হাজার শিশু। বিশ্বময় যুদ্ধের বিরুদ্ধে মিছিলও হচ্ছে। ‘অন্ধকার যুগ’- এ উচ্চারণ একা মাহমুদের নয়, বিশ্বের সর্বত্র।

 

 

Comments :0

Login to leave a comment