মোহনবাগান - ৩
ঢাকা আবাহনী - ১
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মঙ্গলবার ঢাকা আবাহনী ফুটবল দলকে ৩-১ গোলে হারিয়ে এএফসি কাপের মূলপর্বে পৌঁছে গেল মোহনবাগান।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ শুরু করে বাগান। জেসন কামিংস একটি সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে, কয়েকমুহূর্তের মধ্যেই ফলাফল বদলে যেতে পারত। তবে আজ দলে ছিলেন না সবুজ মেরুন ব্রিগেডের অন্যতম ভরসা ব্রেন্ডন হ্যামিল। কিন্তু সুযোগ পেয়েছিলেন নবাগত ডিফেন্ডার হেক্টর।
অন্যদিকে, ম্যাচের ফার্স্ট কোয়ার্টারে ফাউল করার অপরাধে হলুদ কার্ড দেখেন আবাহনীর ডিফেন্ডার হৃদয়। যদিও পাল্টা অ্যাটাকে ওঠার চেষ্টা করে আবাহনীও।
সেই সুবাদেই ম্যাচের ১৭ মিনিটে, কর্নেলিয়াস এজেকিয়েলের গোলে এগিয়ে যায় আবাহনী। হাড্ডাহাড্ডি এই ম্যাচে, হাল ছাড়েনি বাগান শিবিরও। ম্যাচের ৩২ মিনিটে, অনিরুদ্ধ থাপা একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন।
ঠিক ৩৫ মিনিটের মাথায়, আশিস রাইয়ের সেন্টার থেকে হুগো বুমোসের শট রুখে দেন আবাহনী গোলরক্ষক শহিদুল আলম। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে, পেনাল্টি বক্সের মধ্যে সবুজ মেরুন ফরোয়ার্ড লিস্টন কোলাসোকে ফাউল করেন বিপক্ষ দলের ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা। ফলে, পেনাল্টি পায় মোহনবাগান।
ম্যাচের ৩৭ মিনিটে, পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা ফেরান জেসন কামিংস। এরপরেও বেশ কিছু সুযোগ পায় জুয়ান ফেরেন্দোর ছেলেরা। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তাঁরা। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ ফলাফল নিয়েই।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫৫ মিনিটে, আরও একটি সুযোগ নষ্ট করে মোহনবাগান। কিন্তু ম্যাচের ৫৭ মিনিটে, বুমোসের মাইনাস থেকে আত্মঘাতী গোল করে বসেন আবাহনীর ডিফেন্ডার মিলাদ সোলেমানি। সেইসঙ্গে, ম্যাচে লিড নেয় পালতোলা নৌকা।
কিন্তু ঝড় তখনও থামেনি। ম্যাচের ৬০ মিনিটে, লিস্টনের অ্যাসিস্ট থেকে গোল করে মোহনবাগানকে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন আর্মান্দো সাদিকু। স্বভাবতই, অনেকটা সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে যায় সবুজ মেরুন ব্রিগেড।
এরপর দলে দুটি পরিবর্তন করেন আবাহনী হেডকোচ মারিও লেমোস। মাঠে আসেন সোহেল রানা এবং ফয়জাল আহমেদ। অন্যদিকে, মোহনবাগান দলেও একটি পরিবর্তন হয়। সাদিকুর বদলে মাঠে নামেন মনবীর সিং।
কিছুক্ষণ বাদে আরও দুটি পরিবর্তন হয় সবুজ মেরুনে। মাঠে আসেন আশিক কুরনিয়ান এবং গ্লেন মার্টিন্স। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে, আশিস রাইয়ের দূরপাল্লার শট বাইরে চলে যায়। তারপর সবুজ মেরুন হেডস্যার জুয়ান ফেরেন্দো মাঠে নিয়ে আসেন হামতে এবং কিয়ান নাসিরিকে। অর্থাৎ, দলের বাকি ফুটবলারদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে নিলেন তিনি। যদিও এরপর আর কোনও গোল হয়নি।
শেষপর্যন্ত, ৩-১ গোলের ব্যবধানে জিতে এএফসি কাপের মূলপর্বে পৌঁছে গেল মোহনবাগান।
ম্যাচ জয়ের পর, সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে এগিয়ে যান ফুটবলাররা। অন্যদিকে, সাপোর্টাররাও ফোনের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে অভিবাদন জানান দলকে।
ম্যাচ শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে জেসন কামিংস জানান, "দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গোল করতে পেরে ভালো লাগছে।"
মোহনবাগানের প্রথম একাদশ: বিশাল কেইথ (গোলকিপার), আশিস রাই, আনোয়ার আলি, হেক্টর, অনিরুদ্ধ থাপা, হুগো বুমোস, শুভাশিস বোস (অধিনায়ক), সাহাল আবদুল সামাদ, জেসন কামিংস, লিস্টন কোলাসো, আর্মান্দো সাদিকু।
ঢাকা আবাহনীর প্রথম একাদশ: শহিদুল আলম (গোলকিপার এবং অধিনায়ক), সুশান্ত ত্রিপুরা, মহম্মদ হৃদয়, কর্নেলিয়াস এজেকিয়েল, মুজফফরভ, ইউসুফ মহম্মদ, ওজুকু ডেভিড, আসাদুজজামান বাবলু, এমেকা, মিলাদ সোলেমানি, রহমত মিয়া।
Comments :0