WEST BENGAL WOMEN PRISONERS

রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে, নিরাপত্তার আবেদন,
এরাজ্যে জেলেও কি মহিলারা যৌন নির্যাতনের শিকার ?

রাজ্য

WEST BENGAL CRIME AGAINST WOMEN WOMEN PRISONERS BENGALI NEWS

প্রতীম দে


জেলের ভিতর মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন মহিলা বিচারকের নেতৃত্বাধীন কোন কমিটির নজরদারি। সুপ্রিম কোর্টে কারা দপ্তরের পক্ষ থেকে যেই রিপোর্ট জমা পড়েছে তাতে স্পষ্ট ভাবে এই কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আর এই কথা থেকে স্পষ্ট যে এই রাজ্যের জেলেও মহিলারা নিরাপদ নন। সম্প্রতি হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্শন করে এক আদালত বান্ধব জানিয়েছেন যে আলিপুর মহিলা জেলে বন্ধি থাকা মহিলারা অন্তসত্তা হয়ে পড়েছেন। প্রথম এই খবর সামনে আসার পর গোটা রাজ্যে এমনকি দেশে আলোচনা শুরু হয়।
মহিলা জেলে পুরষদের প্রবেশ নিষেধ। তাহলে কি ভাবে একজন মহিলা সন্তানের জন্ম দিচ্ছে? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে তাহলে জেলের ভিতর কি তাদের যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে?


সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়া এক রিপোর্টের অ্যানেক্স এ১ - এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছের আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, ‘‘বর্তমানে ১৫ জন শিশু তাদের মা দের সাথে জেলে থাকেন। এর মধ্যে ১০ জন পুরুষ এবং ৫ জন মহিলা। এদের মধ্যে সাতজন স্কুল পড়ুয়া, আটজন জেলেই পড়াশোনা শেখে।’’
তবে ওই জেলে বন্দীদের জন্য স্বাস্থ্যের পরিকাঠামো যেই একদম বেহাল তা স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ৬ এবং ৭ নম্বর পয়েন্ট বলা হয়েছে যে জেলের অভ্যন্ত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো একে বারে ভেঙে পড়েছে। কোন রকম কোন জরুরী পরিষেবা দেওয়া মতো অবস্থা নেই সেখানে।’’
১২ নম্বর পয়েন্ট বলা হয়েছে, ‘‘জেলের বন্দিদের সাথে কথা বলে জানা গিয়েছে যে তাদের মধ্যে অনেকেই কোন রকম স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ছাড়াই জেলের মধ্যে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।’’


সাধারনত জেলের ভিতর কোন ফোন ব্যবহার করা যায় না জ্যামারের কারণে কিন্তু আলিপুর মহিলা জেলে কোন জ্যামারই নেই। অবাধে যে কেউ এমন কি বন্দীরাও ফোন ব্যবহার করতে পারেন। একথা বলা হচ্ছে রিপোর্টে। জেলে বন্দিদের পরামর্শ দেওয়ার যেই প্রক্রিয়া তাও অত্যন্ত সঙ্কটের মধ্যে আছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।  


বলা হয়েছে, ‘‘বন্দিদের সাথে কথা বলে জানা গিয়েছে যে তাদের প্রত্যেকেরই আইনজীবী আছে। কিন্তু জেলের তাদের আইনজীবীদের সাথে কোন রকম দেখা করতে দেওয়া হয় না।’’
আইনজীবীর সাথে একজন বন্দি কথা বলবেন দেখা করবেন এই অধিকার সংবিধান তাকে দিয়েছে। কিন্তু আলিপুর জেলা আদালতের অদুরেই একজন বন্দি সেই সুযোগ পাচ্ছেন না!
কিন্তু ধীরে ধীরে দিনের আলোর মতো সমানে আসতে থাকে ভয়ঙ্কর এক দৃশ্য। গত চার বছর পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলে জন্ম হয়েছে ১৯৬ জন শিশুর। তবে এর মধ্যে অনেক বন্দী অন্তসত্তা অবস্থাতেই জেলে আসেন। 

এটাই কি শেষ কথা? না।


সুপ্রিম কোর্টে যেই রিপোর্ট জমা করা হয়েছে তাতে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে মহিলা জেলে বা ওয়ার্ডে কোন পুরুষ আধিকারি বা জেল কর্মীকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। মহিলা আধিকারিকদের দ্বারাই সেই ওয়ার্ড বা জেল পরিচালিত হবে। রাজস্থানের জেলের কথা উল্লেখ করে রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ‘‘তিহারের ৬ এবং ১৬ নম্বর জেল, রাজস্থানের সাতটি জেল মহিলা ওয়ার্ডেন, ডেপুটি ওয়ার্ডেন, আধিকারিক এবং মহিলা কর্মীরাই একমাত্র প্রবেশ করতে পারেন। গোটা বিষয়টা তাদের দ্বারা পরিচালিত।’’
জেলে মহিলাদের জন্য নিরাপত্তার পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্যের দিকে যাতে বিশেষ নজর দেওয়া হয় সেই বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
যেই ৬২ জন মহিলার কথা এই রিপোর্টে বলা হয়েছে তাদের মধ্যে ১১ জনকে তাদের সন্তানসহ বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রিপোর্টে এই মহিলা বন্দীদের বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে ছয় জন মহিলা প্রথম স্বাস্থ্য স্ক্রীনিংয়ের সময় গর্ভাবস্থার কথা প্রকাশ করেছিলেন, ২০ জন স্ক্রীনিংয়ে সনাক্ত করা হয়েছিল এবং পরীক্ষার পরে নিশ্চিত হয়েছিল, ৩২ জন গর্ভাবস্থার সাথে জেলে এসেছিলেন, চারজন মহিলা প্যারোল থেকে ফিরে আসার পরে গর্ভাবস্থার সাথে প্রাপ্ত হয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে এরাজ্যে জেলেও কি যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে মহিলা বন্দীদের?

Comments :0

Login to leave a comment