Sikkim Strike

সিকিমে বন্‌ধ, বিপাকে পর্যটকরা

জাতীয় রাজ্য

Sikkim Strike

পাহাড়ি রাজ্য সিকিম বন্‌ধের প্রভাব পড়েছে সমতলেও। রাজনৈতিক অস্থিরতার দরুন ফের বনধ্‌ সিকিম। সিকিম বন্ধের জেরে দুর্ভোগে পড়েছে পর্যটকেরা। সিকিম বেড়াতে যাবার আগে শিলিগুড়িতে নেমে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন অসংখ্য পর্যটক। বন্‌ধের জেরে সকাল থেকেই সিকিমে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। শিলিগুড়ি থেকে সিকিমে যেমন কোন গাড়ি ঢুকছে না। তেমনি সিকিম থেকেও শিলিগুড়িতে কোন গাড়ি আসছে না। সিকিমে যান চলাচল পুরোপুরিভাবে বন্ধ। শুধু পর্যটকরাই নন, সিকিমের বন্‌ধের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে সমতলের শিলিগুড়ির বাজারগুলিতেও।


চলতি সপ্তাহেই দুইদিন বন্‌ধ ছিলো সিকিমে। এরপরেও রাজনৈতিক অস্থিরতা বজায় রয়েছে সিকিমে। সে কারনেই বুধবার আরো একবার বন্‌ধ ডাকা হয়েছে সিকিমে। সিকিম বন্ধ থাকায় শিলিগুড়িতে সরকারী পরিবহন সংস্থা এসএনটি পরিবহনের গেটেও তালা ঝুলেছে। ফলে বিপাকে পড়েছে পর্যটকেরা যাদের হোটেল বুকিং রয়েছে। শিলিগুড়িতে এসএনটি বাস টার্মিনাল যেখান থেকে প্রতিদিন শিলিগুড়ি থেকে সিকিম সরকারী পরিবহনের বাস চলাচল করে সেই বাস টার্মিনালে এদিন লাইন দিয়ে একের পর এক সমস্ত বাস সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। সিকিমে বন্‌ধ সেবিষয়ে দেশী বিদেশী পর্যটকদের অনেকেই অবহিত না থাকায় বহু পর্যটক ভিড় জমিয়েছেন সমতলের শিলিগুড়িতে। এদিন সিকিমগামী বাস না চলায় সেই সমস্ত দেশী বিদেশী পর্যটকদের শিলিগুড়ি এসএনটি বাস টার্মিনালে আটকে থাকতে দেখা গেছে। এদিন সকাল থেকেই এসএনটি বাস টার্মিনালে ইতঃস্ততভাবে শিশু, বৃদ্ধদের নিয়ে পর্যটকরা এদিক ওদিক ঘুরে বেড়িয়েছেন। সিকিমের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে বন্‌ধ চলায় চরম হেনস্তার মুখে পড়ে আটকে পড়া পর্যটকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। 


শিলিগুড়ি এসএনটি বাস টার্মিনালে বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন যারা বাংলাদেশ থেকে গ্যাঙটক ও সিকিম বেড়াতে যাবার উদ্দেশ্যে এসেছেন। বাংলাদেশের বাসিন্দা মহম্মদ রাহাতদেওয়ান বলেন, গ্যাঙটক যাবার উদ্দেশ্য ছিলো। শিলিগুড়িতে পৌঁছে পুরোপুরি হয়রানির মুখে পড়েছি। এছাড়াও হুগলী থেকে শিশু সহ প্রায় এগারো জনের একটি টিম গ্যাঙটক বেড়াতে যাবার জন্য শিলিগুড়িতে পৌঁছে সিকিম বন্‌ধের খবর পেয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। কি করবেন কোথায় যাবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না তারা। অনেক পর্যটক বন্‌ধের কারনে হেনস্তার মুখে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, পাহাড়ের পর্যটনস্থলগুলো যেখানে সারা বছর পর্যটকরা যাতায়াত করে থাকেন, সেই সমস্ত জায়গায় বন্‌ধ ডাকার আগে পর্যটকদের কথা মাথায় রাখা প্রয়োজন। কারন রাজ্যের পাশাপাশি যারা বাইরে থেকে গ্যাঙটক বা সিকিমের দিকে বেড়াতে আসেন তারা সকলেই প্রায় এক দুইমাস আগে থেকেই মানসিক ও আর্থিকভাবে প্রস্তুতি সারেন। সেই অনুযায়ী হোটেল বুকিংও করে থাকেন। বন্‌ধ ডাকার আগে সিকিম সরকারের চিন্তাধারায় পর্যটকদের এই বিষয়গুলিতে আসা উচিৎ ছিলো। সিকিম সরকারের এই ধরনের কান্ডজ্ঞানহীনভাবে বন্‌ধ ডাকার ঘটনায় নিরাশ হয়েছেন পর্যটকদের অনেকেই। 


পর্যটকদের অনেকেই সিকিমে বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছেন। সিকিমের বিভিন্ন ছোট বড় রাজনৈতিক দলগুলোর যৌথ উদ্যোগে মঙ্গলবার বন্‌ধের খবর চাউর হতেই বিকেল থেকেই বহু পর্যটক গ্যাঙটক সিকিম থেকে সমতলের শিলিগুড়িতে নেমে এসেছেন। বন্‌ধের সুযোগ নিয়ে গাড়ি ভাড়া দ্বিগুন তিনগুন বাড়িয়ে দেবারও অভিযোগ উঠছে। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, এখনও কিছু পর্যটক সিকিমে ঘরবন্ধী রয়েছেন। বন্‌ধের কারনে সিকিমের রাস্তাঘাটও শুনশান। বন্‌ধ সমর্থনকারীরা রাস্তায় নেমেছে। পুলিস পিকেট রয়েছে জায়গায় জায়গায়। বিকেলের পরে পরিস্থিতি বুঝে যানবাহন চলাচল করার সম্ভাবনা থাকলেও, তবে কতোটা বন্‌ধ পরিস্থিতির উন্নতি হবে সেবিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। 

Comments :0

Login to leave a comment