শম্ভুচরণ নাথ
নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে দেখা করতে দিতেও আপত্তি প্রশাসনের! কুমারগ্রামে নির্যাতিতার পরিবারকে অন্য কোথাও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে রাতেই। সোমবার আলিপুরদুয়ারে জনসভায় এই মর্মে সর্ব হয়েছেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি।
এদিন ছাত্র- যুব- মহিলা প্রতিনিধিদল আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম, খগেনহাট এবং জয়গাঁতে সকালে বাড়িতে যান। এই জেলাতেও একের পর এক জায়গায় নির্যাতিত হয়েছে ধর্ষণের শিকার হয়ে এমনকি নিহত হচ্ছে শিশুরা, কিশোরীরা।
আলিপুরদুয়ারে বিএফ রোডে জনসভাও হয়। বক্তব্য রাখেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি, বাপন গোপ, এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে, রাজ্য সভাপতি প্রণয় কার্য্যী, সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ, মহিলা নেত্রী দীপু দাস শ্রমিক নেতা বিকাশ মাহালী প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন মহিলা নেত্রী কাকলী ভৌমিক।
মীনাক্ষি বলেন, কুমারগ্রামে নির্যাতিতার বাড়িতে দেখা করতে গেলেও পরিবারের সাথে দেখা করতে পারেনি। পরিবারটিকে পুলিশ আগের দিন রাতে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। প্রশ্ন উঠছে পুলিশ কী আড়াল করতে চাইছে? কেন সরিয়ে দিলো? শাসক দল রাজ্যে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনায় এইভাবে অপরাধীদের আড়াল করতে চাইছে। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে থ্রেট কালচার চলছে সর্বত্র। দুষ্কৃতীদের দাপট অব্যাহত।
তিনি বলেন, দেশবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তিকে এই রাজ্যে জায়গা করে দিয়েছে তৃণমূল। বোঝা পড়া করে চলছে দুই শাসক। একশো দিনের কাজ বন্ধ, আলিপুরদুয়ারে দীর্ঘদিন ভোট না করে প্রশাসককে বসিয়ে কাজ চালিয়েছে। ৮৩২২ সরকারি স্কুল উঠিয়ে দিচ্ছে। হাসপাতালে বেড নেই, আইসিডিএস’র টাকা লুট হচ্ছে। অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। চা-বাগানে কাজ নেই। এক শ্রেণির দালাল পাচার করে দিচ্ছে বাগানের মেয়েদের। লাইসেন্সবিহীন মদের দোকান চলছে পুলিশ প্রশাসনের মদতে। এর বিরুদ্ধে একাধিক বার বিভিন্ন জায়গায় মহিলার বিক্ষোভ দেখিয়েছে। বন্ধ হয়নি, মদের ঠেক দিন দিন বাড়ছে। গোটা সমাজকে ঠেলে দিচ্ছে অপরাধের দিকে।
তিনি বলেন, আর জি করের ঘটনার পর গোটা রাজ্যের মেয়েরা যখন রাত জেগে প্রতিবাদে নেমেছে তখন প্রতিবাদীদের হেনস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না রাজ্যে ধর্ষণ। পরিযায়ীরা কাজ করতে বাইরে যাচ্ছে, আর ফিরছে তাদের নিথর দেহ। রাজ্যকে বাঁচাতে হবে, দ্রোহের আগুন জ্বালানোর দায়িত্ব নিতে হবে।
এদিন আলিপুরদুয়ারে সভা চলাকালীন একটি প্রতিনিধি দল পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দেয়। দাবি ছিল, জয়গাঁ-খগেনহাট-কুমারগ্রামে ধর্ষক খুনিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া,
ধর্ষণ-নির্যাতন-খুনের অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা, দ্রুততার সঙ্গে চার্জশিট দেওয়া। জেলাজুড়ে নেশা জাতীয় দ্রব্যের কারবার রুখতে পদক্ষেপ এবং আলিপুরদুয়ার জেলার চা বলয় এবং গ্রামীণ এলাকায় নারী ও শিশু পাচার রোধে জেলা প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থার দাবিও ছিল।
Comments :0