যাঁদের উপর পুলিশ আক্রমণ চালালো, টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেল, এমন কি কামড়ালো, তাঁদের বিরুদ্ধেই জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করল মমতা ব্যানার্জির প্রশাসন। পুলিশ তাঁদের হেফাজতে চাইল? যে কামড়ালো সে বহাল তবিয়তে। এক পুলিশকর্মী ক্যামেরার সামনে বললেন ,‘মরে গেলে তারপর আমরা দায়িত্ব নেব।’ তারপরেও সে বহাল তবিয়তে। পুলিশের এই ঘৃণ্য আক্রমণ। তারপরেও মুখ্যমন্ত্রী রাশমেলায় বসে আছেন। রশে বসে তিনি ভালোই আছেন। আর রাজ্যটাকে সর্বনাশের শেষ সীমানায় নিয়ে যাচ্ছেন।
চাকরিপ্রার্থীদের উপর আক্রমণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার একথা বলেছেন সিপিআই(এম)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী।
এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে সুজন চক্রবর্তী বলেন, চাকরিপ্রার্থীদের বাড়ি গিয়ে পুলিশ হুমকি দিচ্ছে। ‘আপনার মেয়ে যেন না যায় কলকাতায়।’ বাবা মা কে ধমক দেওয়া হচ্ছে। এই ধমকের অর্থ- আমাদের ভাষণ না শোনা হলে বিপদে পড়তে হবে। এই বিপদের চরিত্র আমরা বীরভূমে দেখেছি। তোলাবাজির প্রতিবাদ করায় তৃণমূলের নেতাকেই গাঁজা কেস দেওয়া হয়েছে। গভীর রাতে বাড়িতে ৯ গাড়ি পুলিশ পাঠিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজ্য জুড়ে গুন্ডারাজ চলছে। গুন্ডারা মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
সাংবাদিকদের চক্রবর্তী বলেন, পশ্চিমবঙ্গে প্রত্যেক ক্ষেত্রে লজ্জার শেষ থাকছে না। কিছুদিন আগে করুণাময়ীতে দেখেছি। যে ভাবে মাঝরাতে চাকরিপ্রার্থী ছাত্রছাত্রীদের অমানুষিক ভাবে হেনস্তা করা হয়েছে তা অভাবনীয়। পুলিশ তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনীর মতো আচরণ করছে। দালাল। চাকরি চোরের দালাল পুলিশ। ন্যায্য অধিকারের জন্য রাস্তায় নামলেই অত্যাচার নামিয়ে আনা হচ্ছে, জামা কাপড় ছিড়ে দেওয়া হচ্ছে।
রাজ্যের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে চক্রবর্তী বলেন, সরকারি তথ্য অনুযায়ী কম করে ৫৫ হাজার মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত। কিন্তু কোভিডের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জানি, এরাজ্যের সরকার দায়িত্ব নিয়ে তথ্য গোপন করে। ফলে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা এর অনেক বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক। মারা গিয়েছেন অন্তত ৭৫জন। বুধবার ডেঙ্গু আক্রান্ত এক শিশুর মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী এই ভয়াবহ পরিস্থিতিকে হালকা করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেছেন, একটু একটু ডেঙ্গু হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী ডেঙ্গু পরিস্থিতি গোপন করার চেষ্টা। এই গোপন করার মধ্য দিয়ে ডেঙ্গুর বিপদ বাড়িয়ে চলেছেন তিনি। ডেঙ্গুতে কলকাতা বিপন্ন। কিন্তু গত ৫০ দিনে কলকাতা কর্পোরেশন ডেঙ্গু নিয়ে কিছু করতে পারেনি। সবেমাত্র গতকাল ময়দানে নেমেছে তাঁরা।
চক্রবর্তী আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ডিসেম্বরে ধামাকা হবে। আবার সাইডলাইনে বলছেন, বিজেপি একটা দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। দাঙ্গার পরিবেশ কখনও কার্নিভ্যাল কিংবা ধামাকা হতে পারে নাকি? পঞ্চায়েতে কত খেলে, কত পেলে – হিসাব চাই হিসাব দাও। গ্রামে গ্রামে সেই আলোচনাটাই চলছে। নভেম্বর ডিসেম্বরে গ্রাম সংসদে ওই হিসেবটাই মানুষ চাইবে।
দেউচা পাঁচামির প্রস্তাবিত কয়লা খনি সম্পর্কে চক্রবর্তী বলেন, ওই প্রকল্প আসলে আদানিকে দেওয়া ভেট। কোল ইন্ডিয়া কিন্তু ওই প্রকল্প নেয়নি। নরেন্দ্র মোদীর মধ্যস্থতায় ওটা আদানিকে দেওয়া ভেট। তাই আদিবাসীদের জমি দখল করা হচ্ছে।
Comments :0