হায়দরাবাদ টেস্টে যে ভারত হারতে পারে, তা অতি বড় ক্রিকেট বোদ্ধাও আগে রবিবারের আগে আঁচ করতে পারেননি। কিন্তু জয় এবং পরাজয়ের মাঝে কার্যত পাঁচিল হয়ে দাঁড়ালেন ইংল্যান্ডের অলি পোপ। দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর ২৭৮ বলে ১৯৬ রানের ইনিংস ইংল্যান্ডের স্কোরকে টেনে নিয়ে যায় ৪২০-তে। তারফলে ১৯০ রানে পিছিয়ে থেকে শুরু করলেও, ইনিংস শেষে ইংল্যান্ডের লিড দাঁড়ায় ২২৯ রানে।
পোপের ১৯৬ রান বাদ দিলে, দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রান স্কোর করেন বেন ডাকেট। এছাড়া আর কোনও ব্যাটার ৩৫ রানের গণ্ডীও টপকাতে পারেননি। কার্যত একার হাতে দলকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন পোপ।
তবে পোপ জয়ের কাছাকাছি দলকে পৌঁছে দিলেও, জয় নিশ্চিত করেছেন দলের বোলাররা, বিশেষ করে টম হার্টলে। ভারতীয় বোলিং লাইন আপের দাপটে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছিল ২৪৬ রানে। বেন স্টোকসের ৭০ রান ছাড়া বলার মত কোনও স্কোর ছিলনা দলের ব্যাটারদের ঝুলিতে। সেই অবস্থায় দাঁড়িয়ে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় মাত্র ২০২ রানে।
ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন রোহিত শর্মা। বাকি কোনও ব্যাটার ২০ রানের গণ্ডীও টপকাতে পারেননি। ইংল্যান্ডের হয়ে ৭ উইকেটই নিয়েছেন টম হার্টলে। ১টি করে উইকেট গিয়েছে জো রুট এবং জ্যাক লিচের পকেটে।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের একটা অংশের অভিমত, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের খেসারত দিয়েছে ভারত। অপরদিকে ইংল্যান্ডের কাছে এই ম্যাচ ছিল নিজেদের প্রমাণ করার। তাই ২২৯ রানের পুঁজিকে হাতিয়ার করেই পালটা লড়াই ফিরিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
সাম্প্রতিক সময়ে মোটেও ভালো পরিস্থিতিতে নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট। ২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি ক্যারিবিয়ানরা। সেই অবস্থাতেও বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়াকে গাব্বার মাঠে হারানোকে ক্রিকেটীয় রূপকথার সঙ্গে তুলনা করা শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।
প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করেছিল ৩১১ রান। কাভেম হজ এবং যশুয়া ডা সিলভা করেন যথাক্রমে ৭১ এবং ৭৯ রান। ৫০ রান করেন কেভিন সিনক্লেয়ার। জবাবী ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়া ২৮৯/৯ স্কোরে ইনিংস ডিক্লেয়ার করে।
ক্যারিবিয়ানদের দ্বিতীয় ইনিংস যদিও ‘মধুর’ হয়নি। মাত্র ১৯৩ রানে অল আউট হয়ে যায় গোটা দল। সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন কার্ক ম্যাকেঞ্জী। জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল মাত্র ২১৪ রান।
কিন্তু নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয় আটকে দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সৌজন্যে শামার জোসেফের আগুণে বোলিং। ১১.৫ ওভার বল করে তুলে নিয়েছেন ৭টি উইকেট। ইকোনমি রেট ৫.৭৫। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন আলজারি জোসেফ। তাঁর সংগ্রহে ২টি উইকেট। ইকোনমি রেট মাত্র ৩.৬৫। ১টি উইকেট নেন জাস্টিন গ্রিভস। কেমার রোচ উইকেট না পেলেও ১০ ওভার বল করে মাত্র ২৮ রান গলান।
গাব্বায় জয়ের ফলে ২টি টেস্টের সিরিজে সমতা ফেরাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একইসঙ্গে ইঙ্গিত দিল বিশ্ব ক্রিকেটের মূল মঞ্চে ফেরত আসারও।
Comments :0