শম্ভু চরণ নাথ
শিশুদের ভেন্টিলেটর নেই জেলা হাসপাতালে। অ্যাডিনো ভাইরাসে সংক্রমণ গত প্রায় দু’মা ধরে ছড়ালেও আলিপুরদুয়ারের জেলা হাসপাতালে নেই ভেন্টিলেটর। এই সমস্যা মেনে নিয়েছেন জেলা হাসপাতালের সুপারও।
অ্যাডিনো আক্রান্ত হয়ে কোনও শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাঁদের ভেন্টিলেশন রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য দপ্তরের অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলা গাইডলাইনেও ভেন্টিলেশন প্রস্তুত রাখার কথা বলা হয়েছে। প্রস্তুতি রয়েছে বলে দাবি করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। সেখানে জেলা হাসপাতালেই নেই শিশুদের ভেন্টিলেটর।
আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার ডা. পরিতোষ মণ্ডল যদিও বলছেন যে জরুরি বেশ কিছু সরঞ্জাম হাসপাতালে এসেছে। তিনি বলেছেন, ‘‘নিকু, পিকুর কিছু যন্ত্রপাতি এসেছে। আরও কিছু যন্ত্রপাতি আসবে। পাইপ লাইন দিয়ে অক্সিজেন পরিষেবা চালু হবে, এরপরই ওই ওয়ার্ড চালু করা যাবে।’’
হাসপাতাল সূত্রে খবর, টেকনিশিয়ানের অভাবও রয়েছে।
নয় বছর হয়ে গেল আলিপুরদুয়ার আলাদা জেলা ঘোষণা হয়েছে। কেবল জেলা হাসপাতালই নয়। বেশিরভাগ নার্সিংহোমেও নেই ভেন্টিলেটর। ফলে অসুস্থ অনেক শিশুর পরিবারকেই ছুটতে হচ্ছে পাশের জেলাগুলিতে।
সদ্যোজাতদের গুরুতর সঙ্কটের চিকিৎসার জন্য ‘নিকু’ এবং শিশুদের জন্য ‘পিকু’ ওয়ার্ডের অনুমোদন দু’বছর আগে মিলেছে। আজও তা চালু হয়নি। জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘করোনা নিয়ে আগে কেউ মাথা ঘামায়নি, পরে পরিস্থিতি কী হয়েছিল সেই খবর সবারই জানা আছে। অ্যাডিনো সংক্রমণেও এই অবহেলা গুরুতর বিপদ ডেকে আনছে।’’ এই চিকিৎসক খেদের সুরে বলেছেন, ‘হাসপাতালে নাকি নিকু, পিকু চালুর বিভিন্ন যন্ত্রপাতিও এসে গেছে অনেকদিন। তবে আমাদের সমস্যা এই যে হাসপাতালে নিকু, পিকু চালু হল না’’।
জানা গেছে জেলা হাসপাতালে একমাত্র সিসিইউ ওয়ার্ডে রয়েছে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা। এই ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা শুধু বড়দের জন্য। চিকিৎসকরা বলছেন, ছোটদের ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা অন্যরকম হয়। যন্ত্র অন্য হয়, আবার টেকনিশিয়ানরাও অন্য থাকে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে কিছু শিশুকে খুবই প্রয়োজন হলে এই সিসিইউতে রাখতে হয়। আবার হাসপাতালে যে এসএনসিইউ রয়েছে, সেখানে শুধু জন্মের দিন থেকে ২৮ দিন বয়সের শিশুদের রাখা হয়। এসএনসিইউতেও কিন্তু ভেন্টিলেশন নেই, রয়েছে ‘সিপ্যাপ’, যেটা ভেন্টিলেশনের মতো গুরুতর পরিস্থিতি সামলাতে পারে না।
প্রশ্ন উঠছে এক মাস বয়সের বেশি শিশুদের ভেন্টিলেশনের কী হবে?
হাসপাতালে পরিকাঠামো বাড়াতেই পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিকু)এবং নিওনেটাল ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (নিকু) ৫টি করে বেডের অনুমোদন এসেছিল। ‘নিকু’ যদিও অনেকটা এসএনসিইউয়ের মতই, তবে পিকুতে ভেন্টিলেশন পরিষেবা দেওয়া হয় শিশু থেকে কিশোরদের।
অ্যাডিনো ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে হলে জেলা হাসপাতালে এই ‘পিকু’-র পরিষেবা খুব তাড়াতাড়ি শুরু করা দরকার বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
Comments :0