সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকা সহ দেশের একাধিক শহরে ভয়াবহ হিংসায় অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। হতাহতের আধিকাংশই পড়ুয়া।
গত দু’সপ্তাহ ধরে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন চলছে। আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও রেলপথ ‘বাংলা ব্লকেড’নাম দিয়ে অবরোধ করে। কোটা বিরোধী ছাত্রদের গলায় ছিল ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’এবং ‘চাইতে গেলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’- এই ধরণের স্লোগান। আন্দোলনকারীদের একাংশ নিজেদের রাজাকার পরিচয় দেওয়ায় অনেকেই আবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
গত সোমবার থেকেই পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে ওঠে। ঢাকার বিভিন্ন অংশে শাসক দল আওয়ামি লিগ সমর্থক ছাত্র লিগের কর্মীরা ‘বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্ররা’ স্লোগানকে সামনে রেখে বিক্ষোভরত কোটা বিরোধী ছাত্রদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে ৩০০ বেশি ছাত্রছাত্রী রক্তাক্ত হন। অবস্থা সামলাতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে। মারমুখী ছাত্রদের ছাত্রভঙ্গ করতে লাঠি চালায়।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রাতভর সংঘর্ষ চলার খবর পাওয়া গিয়েছে। ঢাকার কিছু এলাকায় রাতে গুলিও চলে। হয় ব্যাপক বোমাবাজিও। মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রক পরবর্তী নির্দেশ জারি না করা পর্যন্ত দেশজুড়ে স্কুল, কলেজ সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে।
এদিন ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম ও রংপুরে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ইতিমধ্যে আহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে। রাতে ঢাকা থেকে সংঘর্ষে আহত আরও এক ছাত্রের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
দুপুর থেকেই শহরে সংরক্ষণ ব্যবস্থা বিরোধীদের সঙ্গে ছাত্র লিগ এবং যুব লিগের কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। চট্টগ্রাম এবং রংপুরে সংঘর্ষে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়। শহরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে কিছু বিক্ষোভকারী আগুন লাগিয়ে দেয়। ক্যাম্পাসে আক্রান্ত হন সাংবাদিকরাও। বেশি রাত পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহর থেকে হিংসার খবর পাওয়া গিয়েছে। ঢাকার স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের দেহে গুলি অথবা ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রশাসনের আশঙ্কা নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
Comments :0