‘২০ এপ্রিল ব্রিগেড চল’।
রবিবার মেঘলা আবহওয়ার মধ্যেই রানীবাঁধের বুকে যুবক যুবতীরা এই শ্লোগান তুলে মিছিল করলেন। রানীবাঁধের মানুষ সারা দেশকে জানাবেন জঙ্গলমহলের এই অংশে কিভাবে দিন কাটাচ্ছেন।
মুখ্যমন্ত্রী যতই বলুন ‘জঙ্গলমহল হাসছে‘, হাসি নেই এখানকার মানুষের মুখে। কেন্দুপাতার কাজ নেই, কাজ নেই বাবুই ঘাসের, গ্রামীণ রাস্তাগুলো মৃত্যুফাঁদ পেতে আছে। ‘পথশ্রী’ প্রকল্প এখানে হাস্যকর জায়গায় পৌঁছেছে। গ্রামের পর গ্রামের যুবকরা আজ কোথায় তা পাশের বাড়ির লোকজনও জানেন না, এমনকি বাড়ির লোকজনও জানেন না।
কাজ খুঁজছেন তাঁরা সারা দেশজুড়ে। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা, মা, ছোট ভাইবোনদের তো টিকিয়ে রাখতে হবে! তাই মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে এক আজানা পথে পাড়ি দিয়েছেন যুবকরা। এমননি বহু যুবতী, গৃহবধূও আজ বাইরে কাজের সন্ধানে চলে গেছেন। স্থানীয় স্তরে কাজের অভাবে চূড়ান্ত হতাশ হয়ে বাঁকুড়া জেলা থেকে যতজন যুবক দেশের ভিন রাজ্যে কাজ করতে চলে গেছেন তাঁদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি গেছেন জঙ্গলমহল রানীবাঁধ থেকে। আদিবাসী অ-আদিবাসী নির্বিচারে আজ পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি রানীবাঁধে। নিদারুণ যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে তাঁদের কাজ করতে হয়। মাসের পর তাঁরা বাড়ি আসেন না। বাড়ি এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফের কাজে যেতে মন না চাইলেও পরিবারের ৫-৭টা পেট যে মুখের দিকে তাকিয়ে! তা ভেবেই অশক্ত শরীর নিয়েই ফের ট্রেনে চাপেন।
সেই সব পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের ভাই, বোন, সদ্য লেখাপড়া শেষ করা যুবকরা এদিন রানীবাঁধের বুকে ব্রিগেড সমাবেশের মিছিল করলেন। তাঁরা জানালেন, মানুষ তো জানেন না কেমন কাটছে জঙ্গল মহলের জীবন। আমরা ভালো নেই। সেই বার্তাই আমরা দিতে যাবো। সকালের মিছিলে বহু যুবক, যুবতী, ছাত্র উপস্থিত ছিল। বেশিরভাগই প্রান্তিক পরিবারগুলি থেকে আসা। এঁরা জানান, প্রায় প্রতিদিনই তারা রানীবাঁধের বিভিন্ন গ্রামে বৈঠক সভা করবেন। মানুষের কাছ থেকে তারা জানতে চাইবেন একেকটি পরিবার কিভাবে দিন কাটাচ্ছে। সবাই যন্ত্রণার মধ্যেই আছেন। সমস্যা ভিন্ন, ভিন্ন। এই সমস্যাগুলির সমাধান চাই।
এদিন মিছিলে রানীবাঁধ বাজার এলাকা ঘোরে। রানীবাঁধ গঞ্জের মানুষের কাছেও ২০ তারিখ ব্রিগেড যাওয়ার জন্য আবেদন করা হয়।
Brigade Ranibandh
যুবকরা বাইরে, কেন্দুপাতার কাজ নেই, ব্রিগেড প্রচারে বলছে রানীবাঁধ

×
Comments :0