২৯ নভেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর হবে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’। কোচবিহারের তুফানগঞ্জ থেকে শুরু হয়ে উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটিতে শেষ হবে যাত্রা। হবে সমাবেশও। কেন্দ্রীয় মিছিলের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে চলবে মিছিল এবং কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’-র এই সূচি ঘোষণা করেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি জানিয়েছেন, ভোটাধিকার সহ লড়াই করে আদায় করা সব অধিকার রক্ষার আহ্বানে এই কর্মসূচি।
কলকাতায় মুজফ্ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সেলিম। তিনি বলেন, অধিকারের পক্ষে সর্বদা লড়াই করেছে বামপন্থীরা। শাসক শ্রেণির প্রতিনিধি দক্ষিণপন্থী বিভিন্ন দল সর্বদা চেয়েছে অধিকারকে সঙ্কুচিত করতে। আজকে গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকার, সমতার অধিকার, যা লড়াই করে পেয়েছি সেটাকে ক্রমাগত এই দক্ষিণপন্থীদের শাসন দেশে এবং এরাজ্যে সঙ্কুচিত করা হচ্ছে। প্রলোভন, ভয় ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রশাসন এমনকি নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে ভোট লুট হচ্ছে। এখন নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে ভোটলুটের ব্যবস্থা হয়েছে। পঞ্চায়েত থেকে গোট দেশ লুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটা শুরু হয় ভোটার তালিকায় কারচুপির মধ্যে দিয়ে। কখনও বিদেশি, কখনও রোহিঙ্গা, কখনও মতুয়া, কখনও জেহাদি নাম দেওয়া হয়। গোটা বিশ্বে অধিকার কাড়তে ভয় তৈরি করা হয়। ভোটাধিকার রক্ষা করতে হবে, বাংলাকে বাঁচাতে হবে। বাংলা বাঁচাও যাত্রা সব অধিকারকে রক্ষা করার আহ্বান হবে। সমাবেশ হবে বিভিন্ন জেলায়। 'মাল্টি মোডাল' ভাবে কর্মসূচি চলবে সব জেলায়। দেশ বাঁচাতে হবে, বাংলাকে বাঁচাতে হবে। মানুষের সম্মান, সম্প্রীতি, ভাষা, ঐক্য- সবদিক থেকে বাংলা আক্রান্ত।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, বাংলাকে বাঁচাতে হলে বামপন্থার পুনরুত্থান দরকার। এই কর্মসূচি সেই লক্ষ্যেই প্রয়াসের একটি অংশ।
সেলিম বলেন, এসআইআর-কে কেন্দ্র করে। সিইও দপ্তর থেকে বিএলও পর্যন্ত তৃণমূল দখলদারি চালাচ্ছে। আমরা অভিযোগ করেছি। আমরা দেখছি বিজেপি এবং তৃণমূল ভয়ের রাজত্ব তৈরি করছে। ভোটার তালিকায় সংশোধন করা হচ্ছে না। মৃত মানুষের ফর্ম নিয়ে কাড়াকাড়ি হচ্ছে। এই ফর্ম তো কমিশন বাতিল করে দিতে পারত। মস্তানদের ব্যবহার করে বিএলও দের থেকে ফর্ম ছিনতাই হচ্ছে। তৃণমূল নেতারা ফর্ম হাতে নিয়ে বসে আছে।
একটি প্রশ্নে সেলিম বলেন, মৃতের শংসাপত্র পরীক্ষা করেই তো নাম বাদ দেওয়া যায়। এই যে বলছে ম্যাপিং করছি, তা’হলে তো এই নাম বাদ দিয়ে ফর্ম বিলি করার কাজ করতে পারত নির্বাচন কমিশন। কমিশন তো ডিজিটাল তথ্য পেয়েই কাজটা করতে পারে। এত ঢাক পিটিয়ে তা’হলে কী হচ্ছে। মৃতদের নাম বাদ যায়নি। এমনকি অভয়া-র নামও ভোটার তালিকায় আছে। তার মানে জেনে বুঝে এই নাম তালিকায় রাখা হয়। হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, দিল্লির পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও ভোট লুট করা হচ্ছে।
সেলিম বলেন, তৃণমূলের ভয় আছে বলেই এসআইআর প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন তৈরি করছে। মানুষের ভয় কাটানোর চেষ্টা করে না তৃণমূল বা বিজেপি। তার মানে ওরা ত্রুটিমুক্তি ভোটার তালিকা চায় না। আর কমিশন দপ্তর ব্যবস্থা নিতে পারে না। এটাই ‘সেটিং’ রাজনীতি। আসলে ভোটচুরি ব্যাপক মাত্রায় করছে বিজেপি-তৃণমূল একসঙ্গে। কমিশনের আধিকারিকরা যুক্ত বলেই ভোটচুরি হয়, ভোটলুট হয়। ভোটার তালিকা শোধরানোর সময় ভয় দেখানো হয়।
সেলিম জানান যে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’-য় রাজ্যভিত্তিক দাবির পাশাপাশি জেলা এবং আঞ্চলিক দাবি যুক্ত হবে। এই মর্মে সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটি। কিন্তু, এসআইআর’র কাজ গুরুত্বপূর্ণ। তৃণমূল, বিজেপি জালিয়াতি করতে পারে। সে কারণে বাংলা বাঁচাও যাত্রার মেয়াদ গোড়ায় এক মাস ধরে করার কথা থাকলেও তা কমানো হয়েছে।
Bangla Banchao Yatra
উত্তর থেকে দক্ষিণ, ২৯ নভেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’ সিপিআই(এম)’র
×
Comments :0