কর্মী আন্দোলনকে অভিবাদন জানালো সিপিআই(এম)। তাঁদের জামিনের নির্দেশ দেওয়ায় আদালতের নির্দেশকেও স্বাগত জানিয়েছে পার্টি। পুলিশ এবং সরকারি নিপীড়নের তীব্র নিন্দা করেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
সেলিম বলেছেন, রাজ্যের মানুষ ঠিক করেছেন দাবি আদায় করে ছাড়বেন। মহার্ঘভাতা শ্রমিক-কর্মচারীদের অধিকার। আদালত বলেছে। মিথ্যাচার করছে রাজ্য সরকার। দুর্নীতি-দুষ্কৃতী চক্রের মাথাদের রক্ষা করছে পুলিশ। আর সঙ্গত দাবির পক্ষে রাস্তায় নামা কর্মচারীদের লাথি মারছে, রাস্তায় ফেলে মারছে। জুলুমবাজি চলছে। তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারা দিচ্ছে। ৪৮ জন কর্মচারীকে আটকে রাখা হয়েছে হেপাজতে। তাঁদের প্রায় এক চতুর্থাংশ মহিলা।
বৃহস্পতিবার মুজফ্ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতেই সেলিম বলেন, ‘‘কর্মচারীদের কুর্ণিশ। নিজেদের হকের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা। আদালত তাঁদের জামিনের নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশকে স্বাগত।’’
বুধবার কলকাতার রাস্তায় বিধানসভা অভিযানের ডাক দেন সরকারি কোষাগার থেকে বেতনপ্রাপ্ত কর্মীরা। বকেয়া মহার্ঘভাতা মেটানোর দাবির পাশাপাশি অস্থাবীদের স্থাবী নিয়োগেরও দাবি জানান তাঁরা। ছিলেন শিক্ষক, রাজ্য সরকারি কর্মচারী, পঞ্চায়েত কর্মীদের মতো বিভিন্ন অংশের প্রায় ত্রিশটি সংগঠন। বিধানসভায় মিছিলের গতিরোধ করতে মাঠে নামে বিশাল পুলিশ বাহিনী। রক্তাক্ত হতে দেখা যায় কর্মচারীদের। একাংশকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজারে।
বৃহস্পতিবার তাঁদের জামিন দিয়েছে আদালত। পুলিশ যদিও এরপরও তাঁদের হেপাজতে রাখতে চেয়েছিল।
সেলিম বলেন, ‘‘আদালতে মিথ্যা বলে গিয়েছে সরকার। মু্খ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বকেয়া মহার্ঘভাতা মিটিয়ে দেওয়া হবে। আদালতে রাজ্য বলেছিল বকেয়া নেই। মিথ্যা ধরা পড়ে যায়। আদালত বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দেয়।’’ রাজ্যের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘এই সরকার মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী, উঁচু পদে আসীন আমলাদের ভাতা বা বেতন বাড়িয়েছে। বাড়তি বদান্যতা দেখিয়েছে। কিন্তু সাধারণ কর্মচারীদের প্রাপ্য বেতন দেবে না।’’
সেলিম বলেন, ‘‘জামিন অযোগ্য ধারা কেন দেবে পুলিশ? আরও বহু ধারা রয়েছে। প্রতিবাদ ঠেকানোর বহু রাস্তাও আছে। পুলিশের পালনীয় বিধিতেই রয়েছে। সে সব ভুলে গিয়েছে। পুলিশের নামে মাঠে নামছে কারা? পুলিশের নিয়োগেও দুর্নীতি রয়েছে।’’
এদিন তৃণমূল নেতা এবং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম কর্মচারীদের আন্দোলনকে সিপিআই(এম) এবং বিজেপি’র টিকে থাকার প্রয়াস বলে ব্যঙ্গ করেন। তীব্র প্রতিবাদ জানান সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘মেয়র যে এলাকার বিধায়ক সেই বন্দর এলাকায় বন্দর শ্রমিক-কর্মচারীরা দিনের পর দিন মহার্ঘভাতার দাবিতে লড়াই করেছেন। সেই ইতিহাস উনি জানেন না। মহার্ঘভাতা শ্রমিক কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার।’’ সেলিম পালটা বলেছেন, ‘‘মিছিল তো করেছেন কর্মচারীরা। এখন কেউ প্রতিবাদে সরব হলে সিপিআই(এম)-কে দেখা যাচ্ছে। আর বিজেপি-কে কোথায় পেলেন মেয়র? ওঁর বিরুদ্ধে ইডি সক্রিয় হওয়ার পর থেকে নানাভাবে বিজেপি’র হয়ে প্রচার করছেন।’’
Comments :0