SALIM ON SIR

বাড়ি বাড়ি ঘুরেও ফর্ম ভরতে সহায়তা করবে সিপিআই(এম), বললেন সেলিম

রাজ্য

এসআইআর সংক্রান্ত সমস্যায় মানুষের পাশে থাকছেন বামপন্থীরা। সিপিআই(এম) এলাকায় এলাকায় ক্যাম্প করে সহায়তা করছেন। যদি এতেও ফর্ম ভরা বাকি থাকে অবৈধ ভোটদাতাদের, তা’হলে বাড়ি বাড়ি যাবেন সিপিআই(এম) কর্মীরা। 
বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে জানালেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এসআইআর প্রক্রিয়ার প্রস্তুতিতে গুরুতর খামতি নিয়ে সিইও দপ্তরের কড়া সমালোচনা করেছেন সেলিম। 
সেলিম বলেন, ‘‘ভোটাধিকার রক্ষা আসলে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লড়াইয়ের একটি অংশ।’’ তিনি বলেন, ‘‘লড়াই করেই মানুষ ভোটাধিকার পেয়েছেন, লড়াই করেই তাকে রক্ষা করতে হবে।’’
সেলিম বলেন, "এসআইআর প্রক্রিয়ায় সিইও দপ্তর প্রস্তুতি না নিয়েই নেমে পড়েছে। ফলে হয়রানি হচ্ছে মানুষের। সমস্যায় পড়ছেন বিএলও-রাও। তাঁদের উপর চাপ বাড়ছে। শাসক দলের টানাহেঁচড়ার ফলে বিএলওরাও নিরপেক্ষ ভাবে কতটা কাজ করতে পারছে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কমিশনও চাপ সৃষ্টি করেছে তাড়াতাড়ি ফর্ম বিলি শেষ করে জমা নিয়ে আবার ডেটা এন্ট্রিরও কাজ করতে হবে।" 
এক প্রশ্নে সেলিম ফের স্পষ্ট বলেছেন যে এসআইআর’র বিরোধিতা গোড়া থেকেই করছে সিপিআই(এম)। কেননা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে বড় অংশের কাজ সেরে নিতে পারত সিইও দপ্তরই। 
তিনি বলেছেন, ‘‘বছরের পর বছর মৃত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়নি। এটা নির্বাচন কমিশন এবং সিইও দপ্তরের অপদার্থতা। আমরা নির্ভুল ভোটার তালিকার দাবি জানাচ্ছি। নিয়মমাফিক ভোটার তালিকা সংশোধন করেই সে কাজ করা সম্ভব। এসআইআর করে নাগরিকত্বকে তার সঙ্গে জুড়ে এভাবে আতঙ্ক ছড়ানোর কোনও প্রয়োজনই ছিল না।’’


সেলিম বলেছেন যে অতি দক্ষিণপন্থী রাজনীতি এভাবে বারবার নাগরিকদের আতঙ্কে ফেলতে চায়। এরাজ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য তৃণমূল এবং বিজেপি দু’দলকেই দায়ী করেছেন তিনি। সেলিম বলেছেন যে আতঙ্ক ছড়ানো নয়। কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ যাবে না। আর মৃত বা স্থানান্তরিত ভোটারদের নাম বাদ দিতে হবে। এই দাবিতেই সরব থাকবে সিপিআই(এম)।   
রাজ্যজুড়ে সিপিআই(এম) পরিচালিত এসআইআর সহায়তা ক্যাম্প গুলিতে বহু সাধারণ মানুষ যুক্ত হয়েছেন। সেলিম সেই অভিজ্ঞতা স্মরণ করিয়ে বলেন, ‘‘ছাত্র-যুবরা প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে সাহায্য করছে। বহু সাধারণ মানুষও সহায়তা শিবির পরিচালনার কাজে যুক্ত হয়ে অন্যদের ফর্ম ভরতে সাঝাজ্য করছেন।’’
সেলিম বলেছেন, ‘‘বহু মানুষের কাছে ফর্ম ভরাই যন্ত্রণা। অনেকে শিবিরে আসতে পারছেন না। তাঁদের বাড়ি গিয়ে ফর্ম ভরতে সাহায্য করতে হবে। ভোটাধিকার রক্ষা আসলে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লড়াইয়ের অংশ। সর্বজনীন ভোটাধিকারের ধারণাকেই আক্রমণ করা হচ্ছে। প্রান্তিক, গরিব মানুষকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। মতুয়ারা অনশন করছেন কারণ তাঁদের বিপন্নতার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
লড়াই করেই মানুষ ভোটাধিকার পেয়েছেন, লড়াই করেই তাকে রক্ষা করতে হবে। পালস পোলিও-র মতো প্রথমে শিবির। বাকি থাকলে আমাদের কর্মীরা মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছাবেন।’’
এসআইআর’র মেয়াদ বাড়াতে বলবেন? 
সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে সেলিম বলেন, "সিইও দপ্তর বলছে সব ফর্ম বিলি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আবার ডেটা এন্ট্রির কাজ চাপানো হচ্ছে বিএলওদের উপর। তার জন্য লোক নেওয়া হচ্ছে না কেন? ডিজিটাইজ করার কাজে সরকার নিয়োগ করছে না কেন? কমিশন ও সিইও দপ্তরকেই উদ্যোগ নিতে হবে।"
সেলিম বলেছেন যে খসড়া প্রকাশের পর ফের সমস্যা দেখা যেতে পারে। থাকতে পারে মৃতদের নাম। দু’জায়গায় থাকতে পারে স্থানান্তরিতদের নাম।
সেলিম বলেন, "সিপিআইএম আগে থেকেই ভোটার লিস্ট নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মৃত ও স্থানান্তরিত ভোটারদের তালিকা স্কুকিনি করে তৈরি করেছে। যাতে মৃতদের ভোটার তালিকায় নাম না থাকে। কমিশনকে বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। যদি আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করে হলে মৃতদের বাদ দিয়ে ফর্ম বিলি হত। রাজনৈতিক চাপে মৃতদের নাম থাকার আশঙ্কা আছে। আমরা প্রস্তুত থাকবো প্রতি বুথে যাতে কোনও মৃত মানুষের নাম না থাকে। আর থাকলে তা হবে কমিশনের ব্যর্থতা।’’
তিনি আরও বলেন, "বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে তাঁদের সব রকমের সাহায্য করবে সিপিআই(এম)। ফর্ম ভরা, আইনি সহায়তাও পার্টির করবে।’’

Comments :0

Login to leave a comment