ওড়িশার বালেশ্বরে করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা অন্য রাজ্যের মানুষের কাছে বাংলার কর্মসংস্থানের ছবি একেবারে বে আব্রু করে দিল। এই কাজের বাজারের হতশ্রী চেহারার কথা ফের মনে করিয়ে দিল জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের এক গ্রাম। যে গ্রামের নিহত পরিযায়ী শ্রমিকের বাবা বুক চাপা কান্নায় বলছেন রাজ্যে কর্মসংস্থান থাকলে ছেলেকে বাইরে গিয়ে মরতে হতো না। চোখে জল নিয়ে একই কথা বেরিয়ে আসছে বাবা নৃপেন রায়ের মুখ থেকে। করমন্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় নিহত জলপাইগুড়ি জেলার মাধবডাঙ্গা ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মৃত যুবক তরুণ রায়ের দেহ পৌছালো তাঁর ময়নাগুড়ির গ্রামের বাড়িতে।
ছবি: করমন্ডল ট্রেনের দুর্ঘটনায় মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ বাড়িতে আসার পর শোকে আচ্ছন্ন গ্রাম।
মঙ্গলবার ভোরে পৌছায় দেহ। সোমবার সড়ক পথে জলপাইগুড়িতে দেহ পৌছায় রাতে মর্গে রেখে সকালে প্রশাষনিক নিয়ম মেনে পরিবারের হাতে তুলে দিতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কল জেলা প্রশাসনের তরফে ময়নাগুড়ির ব্লক প্রশাসন উপস্থিত হয়ে মঙ্গলবার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় মৃতদেহ। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তরুণ প্রায় সাত বছর ধরে বিভিন্ন রাজ্যে জাম্পার গাড়ি চালাতেন। রাজস্থান কর্ণাটক, কেরলে কাজ করার পর এবার তামিলনাড়ুতে কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। আর সেখানে ঠিকাদারি সংস্থার মাধ্যমে কাজে যোগ দিতে যাওযার পথেই ওডিশার বালেশ্বরে এই ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় বছর ত্রিশের তরুণ রায়ের। করমন্ডল এক্সপ্রেসে তরুনের সাথে ছিলেন বন্ধু শৈলেন রায়। তাঁরা একই সাথে কাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিল বাড়ি থেকে।
শৈলেন গুরুত্বর আহত। কিন্তু তরুনের মৃত্যু যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না তাঁর পরিবার সহ ময়নাগুড়ির গ্রামের মানুষ। পুজোর সময় বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু তাঁর আগেই নিহত তরুণ বাড়ি ফিরলো। ছেলের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন মা সুমিত্রা রায়। তাঁকে হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়। গোটা গ্রাম শোকস্তব্দ। ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ বাড়িতে আসার পর সিপিআই( এম) মাধবডাঙ্গা শাখার দীগেন রায়, গৌরাঙ্গ শর্মা, দীনবন্ধু রায় সরকার, অপূর্ব রায় সহ অন্যান্য পার্টি কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন শোকগ্রস্ত পরিবারের পাশে।
Comments :0